Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিবগঞ্জে বাড়িঘরে হামলায় পাল্টাপাল্টি মামলা

শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:১৭ পিএম

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের সাতরশিয়া গ্রামে বাড়িঘর, দোকানপাটে হামলা-ভাঙচুর ও মারপিটের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সম্প্রতি শিবগঞ্জ থানায় পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়েছে। মামলা সূত্রে জানা গেছে- গত ৩ সেপ্টেম্বর একই গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে মিজানুর ও মহব্বত আলীর ছেলে মুকুল সাতরশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বসে ছিল। এ সময় পূর্ব শত্রুতার জেরে শওকত আলীসহ ১৪ জনের একটি সন্ত্রাসী দল দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তারা মারাত্মভাবে জখমপ্রাপ্ত হন এবং মিজানুরের কাছে থাকা একটি স্মার্ট ফোন ছিনিয়ে নেয়। এর আগে ১০ আগস্ট শওকত আলীর নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী দল পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে একই গ্রামে ৫-৬টি ককটেল/বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ সময় প্রথমে জান মোহাম্মদের ছেলে মাসুদ রানার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে। পরে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য আবদুর রশিদের প্রধান ফটক ভাঙচুর করে এবং বাড়িতে ঢুকে বিভিন্ন আসবাবপত্রও ভাঙচুর করে নগদ ৪৭ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরে অধ্যাপক সেতাউর রহমানের মিজানুর, মৃত আলতাবের ছেলে মনিরুল, মৃত আতাউর মাস্টারের ছেলে মামুন, মৃত সাইদুর রহমানের ছেলে জামান, মৃত মকবুলের ছেলে মফিজ উদ্দিন, মৃত মহিউদ্দিনের ছেলে বকুল, মৃত সামাদের ছেলে আলাউদ্দিন ও মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের ছেলে আলমগীরের বাড়িতে হামলা ও বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। পাশাপাশি সাতরশিয়া গ্রামের দুটি দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালায় তারা। অভিযোগ রয়েছে- গেল ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট সাতরশিয়া গ্রামের লুৎফল হকের মেয়েকে একই গ্রামের মৃত সহিমুদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর ধর্ষণ করেছে মর্মে থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে। পরে আদালতে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ নেন। কিন্তু চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারী জাতীয় ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং পরীক্ষাগারে ডিএনএ টেস্টে ধর্ষণের মিল পাওয়া যায়নি বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন ডিএনএ বিশ্লেষক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আমেনা হোসেন। এদিকে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে আলমগীরসহ এলাকাবাসী জানায়, আমৃত্যু কারাদন্ডপ্রাপ্ত দাদনচক গ্রামের মাহিদুর ও সাতরশিয়া গ্রামের আফসার হোসেন ওরফে চুটু রাজাকার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর তারা সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেন এবং স্থানীয় শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। এলাকায় বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কর্মকান্ড চালান তারা। ওই সময় সাতরশিয়া গ্রামের মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে শওকত আলী সরাসরি স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেন। এলাকাবাসী আরও জানায়, ২০১৮ সালের ২৯ আগস্ট দুটি বিদেশী পিস্তল, দুটি ওয়ান শুটারগান, চারটি গুলি, চারটি ম্যাগজিন, ১০টি পেট্রোল বোমা ও ১০টি জিহাদী বইসহ শওকত আলী বিজিবির হাতে আটক হন। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ থানায় অস্ত্র-বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করে ৫৯ বিজিবির নায়েক মাহবুব আলম। এছাড়াও শওকত আলীর বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতনসহ সাতটি মামলা রয়েছে। এ বিষয়ে শওকত আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এদিকে উভয় পক্ষের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শিবগঞ্জ থানার এসআই আতাউর রহমান বলেন, সাতরশিয়া গ্রামে বাড়ি-ঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাটি তদন্তধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভাঙচুর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ