গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে মোবাইল চোর চক্রের ২০ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি ও পুলিশ। তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোনের আইএমইআই পরিবর্তন করার ডিভাইস ও বিপুল পরিমাণ চোরাই মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। চোর চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মহানগর এলাকায় মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তন করে মার্কেটে বিক্রি করে আসছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অ্যাডিশনাল ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার।
তিনি জানান, ঢাকা মহানগর পূর্বের একটি টিম চোরাই মোবাইলফোন কিনে বিভিন্ন ডিভাইস ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তন করে মার্কেটে বিক্রয়কারী চক্রের ওই ১২ সদস্যকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে রয়েছেন- মুরাদ খান (২৩), লাভলু হাসান (২০), আল-আমিন ওরফে অনিক (২২), বশির আলম শুভ (৩০) আব্দুল মালেক (৩২), মো. তামিম (২০), শাহ আলম (৩৬), স্বপন (৩৪), জাহাঙ্গীর আলম (২৬), ইমাম হাসান (২২), মো. আরিফ (৩৪) ও আল আমিন (২০)।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন অপরাধী হত্যাসহ ছিনতাই, ডাকাতি করে মোবাইল নিয়ে গেলেও পূর্বে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহজেই অপরাধীদের শনাক্ত করতে পারতো। কিন্তু সংঘবদ্ধ এই চক্রটি মোবাইলফোনের আইএমইআই পরিবর্তন করার কারণে চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদ্ঘাটনসহ প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তিনি বলেন, গ্রেফতার মুরাদ খান ও লাভলু হাসান শহরের বিভিন্ন চোরের কাছ থেকে চোরাই মোবাইলফোন কিনে তার লক খোলা এবং মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করার জন্য অনিক, বশির ও মীম টেলিকমের মালিক আব্দুল মালেকের কাছে দিতেন। অনিক, বশির ও মালেক ডিভাইস ব্যবহার করে মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তন করতো।
এরপর সুনির্দিষ্ট গ্রাহকের কাছে নির্ধারিত মূল্যের কম মূল্যে মোবাইলগুলো বিক্রি করতো। চোরাই ও আইএমইআই পরিবর্তন করা ২৬৫টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল, আইএমইআই পরিবর্তন করার ততী নামক ৯টি ডিভাইস উদ্ধার করা হয় তাদের কাছ থেকে। চক্রের সদস্যরা এ ডিভাইসগুলো গুলিস্তানের পাতাল মার্কেটের মাসুদ টেলিকম ও কবির টেলিকম থেকে কেনেন।
সিআইডির ওই কর্মকর্তা আরো জানান, ডিভাইসগুলো চায়না থেকে আনা। মাসুদ এবং কবির টেলিকম অবৈধভাবে ডিভাইসগুলো বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। এছাড়াও তাদের সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে, লালবাগ থানাধীন নবাবগঞ্জ পার্কের সামনের রাস্তায় মোবাইল বিক্রির অভিযোগে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- মো. জুয়েল (৩২), মো. মাসুদ (২৫), মো. দুলাল (৪৫), জিজাল মোল্লা ওরফে বিপ্লব হোসেন (৩৮), মো. হাসান (৩৮), মো. সেলিম (৩০), মো. শাহজাহান মিয়া (৩৫) ও মো. খোকন (৪০)।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি’র নবনিযুক্ত অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, উদ্ধারকৃত ৫৫টি মোবাইল বিভিন্ন মডেলের। এ সকল চোরাই মোবাইল ফোন দিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এছাড়া নিরীহ লোকদের অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজধানীতে চোরাই মোবাইল সিন্ডিকেটের সদস্যদের ধরতে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি সাধারণ মানুষের উদ্দেশে বলেন, কেউ চোরাই মোবাইল ব্যবহার করবেন না। চোরাই মোবাইল ক্রয় করবেন না। কারণ চোরাই মোবাইল দিয়ে অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনার সম্ভাবনা থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।