পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর সড়কে সৌন্দর্য বাড়াতে এবং কম খরচে নিরবিচ্ছিন্ন দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা দিতে ২০০৮ সালে ঝুলন্ত তার অপসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। কমিশনের সাথে পরবর্তীতে এই উদ্যোগ সফল করতে যোগ দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। এই দুই প্রতিষ্ঠান গত ১২ বছর ধরে চেষ্টা চালিয়েছে রাজধানীর জঞ্জাল সরাতে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন বিটিআরসি ও বিদ্যুৎ বিভাগ। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) ও ক্যাবল অপারেটরদের (ডিস সংযোগ প্রদানকারী) আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে বার বার। কমিটি গঠন করে মাঝে মাঝে দু’একটি অভিযান চালিয়ে কাটা হয়েছে ঝুঁলন্ত তার। কিন্তু সড়কগুলো আগের রূপ ফিরে পেতে সময় নেয়নি ২-৪ ঘণ্টার বেশি।
সর্বশেষ রাজধানীর ঝুলন্ত ইন্টারনেট ও ডিসের তারসহ সকল তার অপসারণের জন্য ৩০ মে পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছিল বিদ্যুৎ বিভাগ। ওই সময়ের মধ্যে তার অপসারণ না করলে তার কেটে দেয়াসহ সংশ্লিষ্ট আইএসপি ও ক্যাবল অপারেটরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিদ্যুৎ বিভাগ।
সেই সময়সীমা অতিবাহিত হওয়ার পরও বিদ্যুৎ বিভাগ কোন উদ্যোগ না নিলেও মাঠে নেমেছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। কোন আল্টিমেটাম না দিয়ে তার অপসারণে মাঠে নেমেছে ডিএসসিসি। পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে গত ৫ আগস্ট থেকে পরিত্যক্ত ও ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণ শুরু করেছে দক্ষিণ সিটি। অন্যদিকে নগরীর ঝুলন্ত তারের জঞ্জাল সরাতে কোন উদ্যোগ নেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি)। নীরব উত্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে উত্তর সিটিতে অবৈধ স্থাপনা, বিলবোর্ড, স্থাপনা উচ্ছেদ চলছে। শিগগিরই ঝুলন্ত তার অপসারণে অভিযান শুরু হবে।
দক্ষিণ সিটির অভিযান থেকে জানা যায়, ইতোমধ্যে এই সিটির ভ্রাম্যমাণ আদালত ধানমন্ডি, ঝিগাতলা, হাজারীবাগ, ওয়ারী, খিলগাঁও, আজিমপুর, ঠাটারী বাজার, জয়কালী মন্দির, ওয়ারী, বঙ্গভবনের দক্ষিণ পাশ, পলাশী, বাটা সিগন্যাল, হাতিরপুল, মালিবাগ, রাজারবাগ, বেইলি রোড, ঢাকা মেডিকেল এলাকাসহ দক্ষিণ সিটির বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যে সড়কের পাশে ও বিদ্যুতের পিলারে ঝুলে থাকা তার অপসারণ করছে। দু’একদিন পরপরই সিটির কোন না কোন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রেখেছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গত রোববার ডিএসসিসি›র ডিএসসিসি›র সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত ঠাটারী বাজার, জয়কালী মন্দির, ওয়ারী ও বঙ্গভবনের দক্ষিণ পাশ থেকে ইলেকট্রিক পোল হতে অবৈধ ক্যাবল অপসারণ করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার ডিএসসিসি›র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে নগরভবনের সামনের সড়কে, ফুলবাড়িয়া ফ্লাইওভারের নিচে, বিআরটিসি বাস কাউন্টারের সামনে, নগর ভবনের পেছনের সাইডে, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে এবং বেইলিরোড হতে রাজারবাগ হয়ে মালিবাগ মোড় পর্যন্ত অবৈধ ক্যাবল অপসারণ করা হয়। গত বুধবার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত বেইলিরোড হতে রাজারবাগ হয়ে মালিবাগ মোড় পর্যন্ত অবৈধ ক্যাবল অপসারণে অভিযান পরিচালনা করেন।
৭ নভেম্বর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান রাজধানীর বাটা সিগনাল হতে হাতিরপুল কাঁচা বাজার হয়ে ইস্টার্ন প্লাজা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের অবৈধ ক্যাবল অপসারণ করেন। ইরফান উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত পলাশী মোড় হতে আজিমপুর মোড় পর্যন্ত অবৈধ ক্যাবল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তা অপসারণ করেন। কর্পোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান চলমান ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান প্রসঙ্গে বলেন, কর্পোরেশনের মেয়রের নির্দেশনা মোতাবেক অবৈধ কেবল ও স্থাপনার বিরুদ্ধে আমাদের উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান থাকবে। একইসাথে এডিস মশার প্রজননস্থল চিহ্নিতকরণের বিরুদ্ধেও অভিযান অব্যাহত থাকবে।
যদিও এতে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছেন গ্রাহকরা। বিড়ম্বনায় পড়েন ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরাও। এমন পরিস্থিতিতে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সদস্যরা ডিএসসিসির রাজস্ব কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে সংগঠনটির সদস্যদের জানানো হয়, ডিএসসিসি এলাকায় সড়ক ব্যবহার করে ক্যাবলের মাধ্যমে ব্যবসা করতে হলে প্রত্যেক কোম্পানিকে বছরে ২৫ লাখ টাকা করে রাজস্ব দিতে হবে। তা না হলে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক বলেন, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা সিটি করপোরেশনের কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ইশতেহার, পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ে তুলতে এ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের অবশ্যই সিটি করপোরেশনের অধীনে নিবন্ধিত হতে হবে। নিবন্ধন ফি হিসেবে ২৫ লাখ টাকা সিটি করপোরেশনকে দিতে হবে।
আরিফুল হক জানান, কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬ এর ২৫ নম্বর ধারায় বলা আছে, কোন সার্ভিস প্রোভাইডারদের যদি সংযোগ স্থানান্তরের জন্য সরকারি, আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত স্থাপনা ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের থেকে লিখিত অনুমোদন নিতে হবে। অনুমোদন ছাড়া কেবল সংযোগের কাজে তারা কারও স্থাপনা ব্যবহার করতে পারবে না।
রাজস্ব পেলে ব্যবসায়ীরা কী ধরণের সুবিধা পাবেন জানতে চাইলে আরিফুল হক বলেন, তাদের মাটির নিচ দিয়ে সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। সেইসঙ্গে প্রত্যেক কোম্পানিকে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে শৃক্সক্ষলায় আনা হবে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস জানান, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নগরীর সব ঝুলন্ত তার অপসারণ করা হবে।
জঞ্জাল সরাতে নীরব উত্তর:
ঢাকা উত্তর সিটির কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, ধানমন্ডি, মিরপুর, উত্তরা, বাড্ডা, মহাখালী এলাকা ঘুরে দেখা যায় প্রধান সড়ক ও গলি পথে ঝুলছে তার। পিলারের সাথে পাকিয়ে ফেলা হয়েছে তারের কূন্ডলি। কিন্তু এসব তার অপসারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে সিটি করপোরেশন।
উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, এখন অবৈধ স্থাপনা, বিলবোর্ড ও দখল উচ্ছেদ করা হচ্ছে। শিগগিরই আমরা সড়কের ঝুলন্ত তার অপসারণে অভিযান পরিচালনা করবো।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, আমরা এনটিটিএন লাইসেন্স দিয়েছি এই উদ্দেশ্যে যে, তারা ক্যাবলগুলোকে এমনভাবে নেবে যাতে মানুষের জীবন-যাত্রার কোন ক্ষতি করবে না। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে এতে কোন পরিবর্তন আমরা লক্ষ্য করছি না। তিনি বলেন, আইএসপিকে লাইন টানার জন্য লাইসেন্স দেয়া হয়নি। তাদেরকে লাস্ট মাইল সার্ভিস দিতে হবে এবং এনটিটিএন থেকেই সংযোগ নিতে হবে। মন্ত্রণালয় কোন চাপ সৃষ্টি করবে কিনা জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, আমাদের দায়িত্ব লাইসেন্স দেয়া, বাকী কাজগুলো যাদের তারা যদি বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় তাহলে এটি সম্ভব। আমি নিজেই মনে করি সিটি করপোরেশন এলাকায় ঝুলন্ত তার থাকা উচিত না। সকল তার মাটির নিচে নেয়া উচিত। ঝুলন্ত তার থাকতে পারে হাওর এলাকায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।