মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যায় সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততার স্বীকারোক্তি দিয়েছে দেশটির আরও দুই সেনা সদস্য। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দুই সেনার আলোচিত জবানবন্দি প্রকাশের পর স্বীকারোক্তির নতুন ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। এতে আগের দু’জনসহ একসঙ্গে চার সেনা সদস্যকে রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দিতে দেখা যায়। এক সেনা সদস্য তার স্বীকারোক্তিতে বলেন, মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তারা বলতেন, ‘এই দেশে ভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সবাই দাস’।
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নতুন দুই সেনা সদস্যও জবানবন্দি দেবেন। তারা হলেন- চ্যাও মিও অং এবং পার তাও নি। এর আগে স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন জ নাইং তুন ও মায়ো উইন তুন নামে আরও দু’জন।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গণহত্যার জবানবন্দি দিয়ে গত সপ্তাহে অনেকটা চমক সৃষ্টি করেন তারা। তুলে ধরেন রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের বিস্তারিত বিবরণ। এবার রাখাইনে দায়িত্ব পালন করা অপর দুই সৈনিক চ্যাও মিও অং ও পার তাও নি মুখ খুলেছেন নিজ দেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। জ নাইং ও মায়ো উইনের সঙ্গে একসঙ্গে ভিডিওতে স্বীকারোক্তি দেন তারা।
চ্যাও মিও অং বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর ভয়াবহ নিপীড়ন চালিয়েছে সেনাবাহিনী। বাহিনীর মধ্যে জাতিগতভাবে বৈষম্য করা হয়। অনেক কর্মকর্তা মাদকাসক্ত। মাদকে পৃষ্ঠপোষকতাও রয়েছে তাদের।
পার তাও নি বলেন, তারা আমাদের (সেনা কর্মকর্তারা) বলতেন ভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সবাই দাস। তাদের সঙ্গে সে হিসেবেই ব্যবহার করতে হবে। সন্ত্রাসী বাহিনীর মতো অস্ত্র ব্যবহার করে বেসামরিক জনগণের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে সেনাবাহিনী।
এর আগে স্বীকারোক্তিতে মায়ো উইন তুন বলেছেন, মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে তিনি ও তার ব্যাটালিয়নকে পাঠানো হয়েছিল সেখানকার কয়েকটি গ্রামে অভিযান চালানোর জন্য। তিনি ৩০ জন রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে গণহত্যায় অংশ নিয়েছিলেন। রোহিঙ্গাদের মরদেহ গণকবর খুঁড়ে পুঁতে দেন। একজন নারীকে ধর্ষণের কথাও স্বীকার করেছেন তিনি।
আরেক সেনা সদস্য জ নাইং তুন বলেছেন, তার ব্যাটালিয়ন প্রায় ২০টি রোহিঙ্গা গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে। এ পথে যে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের হত্যা করা হয়েছে। তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ করেছে। এই দু’জনের বক্তব্যের ভিত্তিতে মানবাধিকার সংস্থা ফর্টিফাই রাইটস জানিয়েছে, তারা উভয়ে প্রায় ১৮০ রোহিঙ্গা হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এই চার সেনার মধ্যে দুই সেনা আছেন হেগের অপরাধ আদালতের জিম্মায়। বাকি দু’জনও আদালতে জবানবন্দি দেবেন বলে জানা গেছে। গণহত্যার বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হতে পারেন এই সেনারা- এমন মত মানবাধিকার কর্মীদের।
সাবেক সেনাসদস্যের এই স্বীকারোক্তির ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে চাপে ফেলেছে মিয়ানমারকে। বিশেষ করে দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির অবস্থানকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। কারণ জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়ার করা মামলায় তিনি সশরীর হাজির হয়ে নিজের দেশের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন, রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ কারণে রোহিঙ্গা গণহত্যার এই স্বীকারোক্তিকে আমলে নিয়ে মিয়ানমারের বিচার করার আহ্বান জানিয়েছেন অনেকে।
এদিকে প্রথম দুই সেনাসদস্য স্বীকারোক্তি দেয়ার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এখন দায় ঢাকার চেষ্টায় নেমেছে। তারা বলেছে, ওই দুই সেনাসদস্যের কাছ থেকে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ মিন তুন বিবিসি বার্মিজকে বুধবার বলেন, মায়ো উইন তুন এবং জ নাইং তুন সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য। আরাকান আর্মি তাদের বন্দি করে হুমকিধমকি ও নির্যাতন করে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।