Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্রুনাইতে প্রতারণার শিকার প্রবাসী কর্মীরা দেশে ফিরতে পারছে না

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে প্রবাসী কর্মীরা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:৩৪ পিএম

ব্রুনাইতে মানবপাচারকারী চক্রের প্রতারণার শিকার কয়েক হাজার প্রবাসী কর্মী দেশে ফিরতে পারছে না। দেশটিতে অবরুদ্ধ প্রতারণার শিকার প্রবাসী কর্মীদের সরকারি উদ্যোগে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। দেশটিতে কালোতালিকাভুক্ত মানবপাচারকারী দালাল মেহেদী হাসান বিজন গংদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। মানবপাচারকারী দালালদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৯ টি মামলা দায়ের করার পরেও তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মানবপাচারকারীরা বিমান বন্দরে বডি কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে নিরীহ কর্মীদের ব্রæনাইতে ভালো চাকরির প্রলোভন দিয়ে পাচার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ব্রুনাইতে এসব প্রতারক চক্রের কোনো কেম্পানির বা কোনো কাজ নেই। এরা শুধু ভিসা বিক্রি করে এবং দেশটিতে যাওয়ার পর এদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না। এসব চক্র ব্রুনাইতে কর্মীদের পাঠানোর পর পাসপোর্ট নিয়ে যায় এবং কোন কাজ দেয় না। কাজ ও পাসপোর্ট চাইলে নির্যাতন করে। এমনকি পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখায়। এই চক্রের হোতা মেহেরপুরের মেহেদী হাসান বিজন, দোহারের আব্দুর রহিম, মুন্সিগঞ্জের ইলিয়াস মাঝি এবং ইসিমাইল সর্দার, গরু শাহীন, আবদুল্লাহ আল মামুন অপুসহ ২০/২৫ জনের একটা বিশাল গ্যাং। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ব্রুনাই প্রত্যাগত প্রতারণার শিকার প্রবাসী কর্মীরা মানবপাচাকারীর হোতা মেহেদী হাসান বিজনসহ দালালদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে অসহায় কর্মীরা এসব কথা বলেন। প্রবাসী কর্মী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আল আমিন, মাসুদ মিয়া, খাদেমুল মন্ডল, আতিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, কোরবান আলী, মোফাজ্জল হোসেন, রবিউল মিয়া ও ইবরাহিম মিয়া। প্রত্যাগত কর্মীরা বলেন, প্রতারণার শিকার অনেকেই এখন ব্রুনাইতে আটকা পড়ে আছে। তাদের পাসপোর্ট ও ভিসা না থাকায় তারা দেশে ফিরতে পারছে না। অবৈধ হওয়ার কারণে ব্রুনাই পুলিশ এখন তাদের খুঁজছে। কেউ কেউ মালেশিয়ার সারওয়াকে পাচার হয়েছে। তারা বেলেন, কুখ্যাত মানবপাচারকারী মেহেদী হাসান বিজন, সাইফুল এবং ইলিয়াস গংদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পরেও তারা প্রভাবশালী মহলের মদদে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এসব মামলার এজাহারভুক্ত ১ নং আসামী মেহেদী হাসান বিজনকে আজ পর্যন্ত পুলিশ ধরেনি। মেহেদী হাসান প্রভাবশালী ব্যক্তির সাথে ছবি তুলে থানা পুলিশকে ভয় দেখিয়ে বেড়াচ্ছে। মানবপাচাকারীদের আশ্রয় দেয়া প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। মেহেদী দেশের ভিসা ব্যবসা টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সে দেশ জাতি ও প্রবাসী শ্রমিকদের শত্রæ। মানববন্ধনে কতিপয় দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে, ব্রæনাই থেকে কালোতালিকার সকল ভিসা ও মানবপাচারকারীকে আইনের আওতায় আনতে হবে। থানায় দায়েরকৃত মানবপাচার মামলায় আসামীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে, প্রতারিত প্রবাসী শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, মানবপাচারের সাথে জড়িত বিমান বন্দরের কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং মানবপাচারের সাথে জড়িত ট্রাভেল এজেন্সির দালালদের আইনের আওতায় আনতে হবে। প্রবাসী কর্মীরা বলেন, প্রতারণার শিকার অসহায় কর্মীদের অনেকেই নিঃস্ব হয়ে আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে বিমানের টিকিটের টাকা নিয়ে দেশে ফিরে এসেছে। করোনা মহামারির সময়ে চড়া সুদের ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে না পেরে ব্রুনাই প্রত্যাগত এসব অসহায় কর্মীরা বাড়ী ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রতারক চক্র হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে ব্রæনাইতে নতুন মহিলা রাষ্ট্রদূত কর্মস্থলে যোগদানের পরই তারা পুনরায় দেদারসে মানবপাচার শুরু করতে পারবে কোনো অসুবিধা হবে না। প্রতারণার শিকার ক্ষতিগগ্রস্ত কর্মীরা অবিলম্বে মানবপাচারকারী গডফাদার মেহেদীসহ দালালদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মানববন্ধন

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ