পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গতকাল বেলা দেড়টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পাঁচতলায় উঠতেই কানে ভেসে আসে আহাজারি। হাই ডিফেন্সডেন্সি ইউনিটের (এইচডিইউ) পাশের ওয়েটিং রুমে গিয়ে দেখা যায় মসজিদে বিস্ফোরণে দগ্ধ রোগীর স্বজনদের ভীড়।
কিছুক্ষণ পর পর থেমে থেমে উচ্চ আওয়াজে চলছিল কান্না আর আহাজারি। কক্ষটির এক কোনে দেখা গেল নিচের দিকে তাকিয়ে থেমে থেকে কাঁদছিলেন সিফাতের বাবা স্বপন। কাছে যেতে দেখা গেল মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে ভাসা ছেলের ছবির দিকে তাকিয়ে কাঁদছিলেন তিনি। অসহায় এ বাবা বলেন, এইচএসসিতে ভর্তির প্রক্রিয়া প্রায় শেষের দিকে ছিল। ওর মায়েরও অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু এক আগুন আমাদের সব সর্বনাশ করে দিল। তিনি বলেন, ছেলেটি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো। ঘটনার দিনও এশার নামাজ পড়তে মসজিদে যায়। এর মধ্যে বিস্ফোরণের খবর শুনতে পেয়ে ওর মা অজ্ঞান হয়ে যান। এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক হতে পারেননি। বিছানায় পড়ে কাতরাচ্ছেন আর বারবার ছেলের জন্য বিলাপ করছেন। অবস্থা খারাপ হওয়ায় একটি বারের জন্য হাসপাতালেও আনা হয়নি তাকে। গতকাল সকালে ছেলেকে খাওয়ার জন্য সূপ দিয়েছেন। ধীরে ধীরে কিছু কথাও বলেছেন বাবার সঙ্গে। দোয়া করতে বলেছেন বাবাকে। চিকিৎসকরাও ছেলের সুস্থতার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে বলেছেন।
গতকাল সকালে ঢামেকের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন মোহাম্মদ আলী নামে এক শিক্ষাক। দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করায় তাকে সবাই জানেন এবং চেনেন ‘আলী মাস্টার’ হিসেবে। ইনস্টিটিউটের লবিতে মামাতো ভাই রিয়াদের কাঁধে মাথা রেখে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন আলী মাস্টারের মেঝ ছেলে রাসেল। তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বললেন, আমাদের বাসার পাশেই মসজিদ। আব্বা এখানেই প্রতিদিন নামাজ পড়তে যেতেন। চেষ্টা করতেন সবার আগে যেতে। শুক্রবারও গিয়েছিলেন। আগুনে পুড়ে হেঁটে হেঁটে বাসায় ফিরে বারবার বলছিলেন, আমার গায়ে মলম দাও, জ্বলে যাচ্ছে পুরো শরীর। রোববার সকালে আমাদের সবাইকে কাঁদিয়ে আব্বা চলে গেলেন। জানি না তাকে হারানোর এই শোক আমরা কিভাবে সইবো?
ফুপাতো ভাই রাসেলকে সান্ত্বনা দিতে দিতে রিয়াদ বলেন, মসজিদ কমিটি আগেই তিতাস গ্যাসকে গ্যাস লিক হওয়ার কথা অবগত করেছিল। তারা লিখিত অভিযোগ না দেয়ার কারণে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তারা ৫০ হাজার টাকা ঘুষও চেয়েছিল। তিতাস ঠিক মতো ব্যবস্থা নিলে এ ঘটনা ঘটতো না। এতগুলো মানুষের মৃত্যু হতো না। আমরা এর বিচার চাই।
ইনস্টিটিউটের লবিতে নীরবে বসে ছিলেন আসমা বেগম। জটিল কিডনি রোগে ভুগছেন তিনি। টাকার অভাবে চিকিৎসাও নিতে পারছেন না তিনি। শুক্রবারের বিস্ফোরণে তার স্বামী আব্দুল আজিজ এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। চিকিৎসকরা এখনও শোনাতে পারেননি আশার বাণী। আসমা বেগম বলেন, আমার স্বামীর লন্ড্রির ব্যবসা আছে। কোনমতে আমাদের সংসার চলে। ছেলে আবু সায়ীদ মাদরাসার ক্লাস ফাইভে আর মেয়ে সামিয়া ক্লাস থ্রিতে পড়ে। আমি জানি না, আমার স্বামী কেমন আছেন। বাঁচবেন কিনা তাও জানি না। বাঁচার পর কিভাবে আমাদের সংসার চলবে কিছুই জানি না। এ আগুন সবকিছু কেড়ে নিলো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।