নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না কারও। গতপরশু সন্ধ্যায় অন্যলোকে চলে গেছেন শেন ওয়ার্ন- এ খবরে শোকের চেয়েও অবিশ্বাস্যের রেণুই উড়ছিল বেশি। দিনের শুরুটা হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ান আরেক কিংবদন্তি রড মার্শের মৃত্যুর খবরে। সে খবরে শোকাহত ক্রিকেট দুনিয়া। কিন্তু রড মার্শের সে খবরের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন সবাই। হার্ট অ্যাটাক করে কয়েক দিন ধরে হাসপাতালে কোমায়ই ছিলেন মার্শ। কিন্তু শেন ওয়ার্ন? মাত্র ৫২ বছরে পা রাখা লেগ স্পিন কিংবদন্তির তো এ সংক্রান্ত কোনো খবর কখনো আসেনি।
কদিন আগেই নিজেকে আরও ফিট করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ নিয়ে কাজও শুরু করেছেন। সে মানুষটা আচমকা হার্ট অ্যাটাক করে কাউকে কোনো সুযোগ না দিয়ে অন্যলোকে চলে যাবেন, এটা শুনলে অবিশ্বাস তো জাগবেই। তবে বাস্বতা হচ্ছে তিনি নেই। তবে সত্যিই কি নেই! অন্তত গতকাল বিশ্বের প্রতিটি কোনায় হওয়া প্রত্যেকটি ক্রিকেট ম্যাচেই বেশ ভালোভাবেই যে ছিলেন ওয়ার্ন। নিউজিল্যান্ডে ভোরে নারী বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দিয়ে শুরু, বেলা গড়ানোর মতো মোহালিতে ভারত-শ্রীলঙ্কা কিংবা রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া ঐতিহাসিক টেস্ট, আর বিকেলে মিরপুরে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টি, এমনকি অ্যান্টিগায় চিরশত্রু ইংল্যান্ড-উইন্ডিজ ম্যাচ- সবখানেই ছিলেন এই কিংবদন্তি। তার মৃত্যুর শোককে বুকে ধারণ করেই যে ম্যাচ শুরু করে নিরবতা পালন আর কালো বাহুবন্ধনী পড়ে। ঠিক যেন নিরবে রয়ে গেছেন ওয়ার্নও। কিংবদন্তিদের যে মৃত্যু নেই!
মেলবোর্নে ওয়ার্ন স্ট্যান্ড
স্পোর্টস ডেস্ক : জন্মেছিলেন মেলবোর্নে। খেলেছেন মেলবোর্নের রাজ্য দল ভিক্টোরিয়া আর টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি মেলবোর্ন স্টারসের হয়ে। এই শহরের মাঠ এমসিজিতে কতশত কীর্তি তার! ক্যারিয়ারের প্রথম ও একমাত্র হ্যাটট্রিকটা এসেছে মেলবোর্নেই। এই মাঠে খেলা শেষ টেস্টে ইংল্যান্ডের অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসকে আউট করে গড়েছিলেন টেস্টে ৭০০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি। ১৯৯২ সালের বক্সিং ডে টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধসিয়ে দিয়ে এ মাঠেই নিয়েছিলেন সাত উইকেট। ঘরের ছেলে বলেই কিনা মেলবোর্নের দর্শকও বড্ড ভালোবাসত শেন ওয়ার্নকে। মাঠের বাইরে ওয়ার্নের ভাস্কর্য সেটারই প্রমাণ দেয়।
ওয়ার্নের অকালমৃত্যুর পর তার প্রতি ভিক্টোরিয়াবাসীর ভালোবাসার প্রমাণ পাওয়া গেল আবারও। রাজ্যের সরকার ঘোষণা দিয়েছে, এমসিজির বিখ্যাত দক্ষিণ দিকের ‘সাউদার্ন স্ট্যান্ড’-এর নামকরণ করা হয়েছে ওয়ার্নের নামে। যে প্রান্ত থেকে বল করে ক্যারিয়ারের একমাত্র হ্যাটট্রিক করেছেন, এখন থেকে সেই স্ট্যান্ড পরিচিত হবে ‘দ্য এসকে ওয়ার্ন স্ট্যান্ড’ নামে। প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিস এই ক্রিকেটারের জন্য রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন তার পরিবারকে।
সংখ্যার আলোয় ওয়ার্নের যত কীর্তি
স্পোর্টস ডেস্ক : ক্রিকেট দুনিয়াকে স্তব্ধ করে শুক্রবার রাতে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন স্পিন কিংবদন্তি শেন ওয়ার্ন। বিশ্বের সর্বকালের সেরা এই লেগ স্পিনার তার খেলোয়াড়ি জীবনে গড়েছেন অনেক কীর্তি। স্পিনের মায়াজালে এই অস্ট্রেলিয়ান মোহাবিষ্ট করে রেখেছেন ক্রিকেট ভক্তদের। সংখ্যার আলোয় দেখে নেওয়া যাক তার কিছু কীর্তি।
১০০১: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শেন ওয়ার্নের উইকেট সংখ্যা। তিনি মাত্র দ্বিতীয় বোলার যিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১ হাজারের বেশি উইকেট নিয়েছেন। তার উপরে শ্রীলঙ্কার মুত্তিয়া মুরালিধরন। টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে মুরালির উইকেট ১৩৩৪টি।
৭০৮: ওয়ার্নের টেস্ট উইকেট সংখ্যা। ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে টেস্টে ৭০০ উইকেট স্পর্শ করেছিলেন তিনি। পরে তাকে ছাড়িয়ে যান মুরালিধরন। ৮০০ উইকেট নিয়ে ওয়ার্নের উপরে কেবল মুরালি।
৯৬: এক পঞ্জিকা বর্ষে ওয়ার্নের নেওয়া উইকেট সংখ্যা। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর ২০০৫ সালে লেগ স্পিনের যাদুতে মোহাবিষ্ট করে ওয়ার্ন তুলেন ৯৬ উইকেট। এক পঞ্জিকা বর্ষে যা আজও ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
৩৭: টেস্টে ওয়ার্নের নেওয়া ৫ উইকেটের সংখ্যা। টেস্টে ওয়ার্নের চেয়ে বেশি ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে আর একজনের। ৬৭ বার ৫ উইকেট নিয়ে সবার উপরে মুরালিধরন।
১৪৪০: দ্রুততম বোলার হিসেবে টেস্টে ২০০ উইকেট স্পর্শ করতে ১ হাজার ৪৪০ দিন সময় নেন ওয়ার্ন।
১২৫: টেস্টে ওয়ার্ন ১২৫টি ক্যাচ নিয়েছিলেন। ক্রিকেট ইতিহাসে ওয়ার্ন দ্বিতীয় কোন ক্রিকেটার যিনি একই সঙ্গে কমপক্ষে ৩০০ উইকেট ও ১০০টির বেশি ক্যাচ নিয়েছেন।
৩১৫৪: কোন সেঞ্চুরি না করে টেস্টে সবচেয়ে বেশি রান ওয়ার্নের। সেঞ্চুরিবিহীন তিনি করেছেন ৩ হাজার ১৫৪ রান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।