মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে তার সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী নেপালের সঙ্গে বিগত কয়েক বছর ধরে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। অথচ ভারত আর নেপাল- দুই দেশেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী। তারপরও কেন দুটি দেশের মধ্যে নানা ইস্যুতে মতান্তর হচ্ছে। বিবিসির এক প্রতিবেদকের মাধ্যমে তারই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে।
গত মে মাসে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ধারচুলা থেকে চীন সীমান্তে লিপুলেখ পর্যন্ত একটি রাস্তা উদ্বোধন করেন। নেপালের দাবি ছিল যে ওই রাস্তা তাদের এলাকার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তার আগে, ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য থেকে লাদাখকে যখন আলাদা করা হল, তারপর ভারত যে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছিল, তাতে লিপুলেখ আর কালাপানি- এই দুটি অঞ্চল ভারতের অন্তর্ভুক্ত বলেই দেখানো হয়েছিল।
এবছর, নেপাল তাদের দেশের একটি নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে, যেখানে, কালাপানি আর লিপুলেখ তাদের দেশের অংশ বলে দেখায়। তারপরেই দুই বন্ধু রাষ্ট্রের মধ্যে সীমানা নিয়ে বিবাদ আবারও সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে নেপালের বিদেশমন্ত্রী প্রদীপ কুমার গ্যায়ালি বলছিলেন, "নেপাল আর ভারতের মধ্যে সীমানা নিয়ে যে বিবাদ রয়েছে, তা সমাধান করতেই হবে। যতদিন না এর মীমাংসা হচ্ছে, ততদিন এই ইস্যুটা ফিরে ফিরে আসবে। সীমান্ত সমস্যার সমাধান না হলে দুই দেশের সম্পর্ক বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারবে না।"
প্রদীপ গ্যায়ালি বলেন, "ইতিহাসের যেসব অমীমাংসিত সমস্যা উত্তরাধিকার সূত্রে বর্তমান সরকারের ওপরে এসে পড়েছে, সেগুলোর সমাধান করতেই হবে। কিন্তু‘ নেপাল এটা চায় না যে সীমান্ত সমস্যার কারণে দুই দেশের বাকি সব সম্পর্ক বন্ধ হয়ে যাক। সেগুলোকে সচল রেখেই সীমান্ত সমস্যা মেটাতে হবে, আবার অন্যদিকে লিপুলেখ এবং কালাপানি - এই ইস্যুটাও নেপালের সার্বভৌমত্বের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।"
সীমান্ত নিয়ে যখন দুই দেশের মধ্যে মতভেদ চলছে, তার মধ্যেই নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি মন্তব্য করেছিলেন যে তাকে পদচ্যুত করতে একটা ষড়যন্ত্র চলছে দিল্লিতে আর কাঠমান্ডুর ভারতীয় দূতাবাসে। নেপালের বিদেশমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে সত্যিই কি নেপালের প্রধামন্ত্রীকে পদচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করছিল ভারত?
প্রদীপ গ্যায়ালির জবাব ছিল, "আমার মনে হয় ভারতীয় সংবাদ চ্যানেলগুলোতে ওই সময়ে যে ধরনের খবর প্রচারিত হচ্ছিল, তার দিকেই ইঙ্গিত করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ওলি। নেপালের পক্ষে খুবই অপমানজনক খবর দেখানো হচ্ছিল নিয়মিত। কোনও দেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে অথবা সেদেশের সরকারের সামনে যে সঙ্কট চলছিল, তা নিয়ে এধরনের খবর কেন দেখানো হবে!"
প্রদীপ কুমার গ্যায়ালি বলেন, "অন্য দেশের সংবাদমাধ্যম বা সেখানকার কথিত বুদ্ধিজীবিরা কি নেপালের বিদেশনীতি তৈরি করে দেবেন? তারা ঠিক করবেন নাকি যে নেপাল কোন দেশের সঙ্গে কীরকম সম্পর্ক রাখবে? নেপালের বিদেশনীতি কোনও দ্বিতীয় বা তৃতীয় দেশ তৈরি করে দেয় না।"
ভারতীয় গণমাধ্যমের একাংশের বিরুদ্ধে নেপাল-বিরোধী খবর নিয়মিত প্রচার করার জন্য বেশ কয়েকবছর আগে কয়েকটি ভারতীয় চ্যানেল নেপালে নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই সময়ে ভারত থেকে নেপালের কোনও পণ্যবাহী ট্রাক যেতে দেওয়া হচ্ছিল না - পেট্রল থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় যেসব পণ্যের জন্য ভারতের ওপরেই তারা নির্ভরশীল, সেগুলোর সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
মি. গ্যায়ালি বলেন, সেটা ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রথম দফার সরকারের সময়ে। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের দুটো দিক আছে। একটা দিকে অবকাঠামো উন্নয়নের মতো খাতগুলোতে যখন দুই দেশের মধ্যে খুব ভাল কাজ হচ্ছে, নেপালের ভূমিকম্পের পরেও ভারত খুব সাহায্য করেছিল। আবার পেট্রলিয়াম পাইপলাইনের ব্যাপারেও ভারতের সহযোগিতা পাচ্ছে নেপাল।
প্রদীপ গ্যায়ালি বলেন, কিন্তু‘ অন্যদিকে বেশ কিছু বিষয়ে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে জটিলতাও আছে - সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত বিবাদ। আর এটাও ভুললে চলবে না মি. মোদীর প্রথম দফায় সরকারে থাকার সময়েই কিন্তু অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল নেপালকে। ধর্মকে দেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে যেমন টেনে আনা উচিত নয়, তেমনই অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও ধর্মীয় বিষয় আনা উচিত নয়। সূত্র: বিবিসি বাংলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।