পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কাজী জাফর ভারৃেতর দাবেদারি মেনে নেননি; তিনি ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সারাজীবন সোচ্চার ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জায়রুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বিএনপি অথর্ব দল। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ভারতের কৃপায় ক্ষমতায় এসেছে। ফলে বাংলাদেশকে ক্রমে ক্রমে ভারতের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলছে না। কাজী জাফর আহমদ বেঁচে থাকলে এই ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতেন। সবাইকে নিয়ে রাজপথে আন্দোলনে নামতেন।জাতীয় প্রেসক্লাবের কন্সফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ২০ দলীয় জোটের মুখপাত্র বিএনপির স্থায়ীকমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, এডভোকেট শফিউর রহমান ভূঁইয়া, এডভোকেট রুহুল আমিন, সেলিম মাস্টার, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, এ সরকার ভারতের পুতুল সরকার। ভারত যা বলে তাদের তাই শুনতে হয়। কারণ তারাতো ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়নি। ভারতের পরামর্শে দিনের ভোট রাতে করে তাদের কৃপায় ক্ষমতায় এসেছে। এখন তাদের কথা মত সব করতে হয়। সম্প্রতি আমরা দেখেছি ভারত থেকে তাদের মরুব্বি হর্ষবর্ধন এসেছিল। সে কি বলে গেছে তা জাতি জানতে পারেনি। তবে অনুমান করতে পারি যে, সে চুপ থাকতে বলে গেছে। বেশি আওয়াজ করা যাবে না। সে বলে গেছে তিস্তার কথা বলা যাবে না। বাংলাদেশের উপর দিয়ে ভারতের গাড়ি চলাচল করবে ট্যাক্স দেওয়া হবে না। সরকারও তাই চুপ করে আছে।
জাফরুল্লাহ অনেকটা ক্ষোভের সাথে বলেন, বিএনপি কোন পথে যাচ্ছে আমি জানিনা। ভারত তোষনের রাজনীতি থেকে সরে না আসলে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে। বিএনপিকে টিকে থাকতে হলে এদেশের মানুষের কথা বলতে হবে। ভারতের আগ্রসন ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। জিয়াউর রহমানের রাজনীতি ছিল এটাই। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ফারাক্কার বিরুদ্ধে লংমার্চ করে ছিলেন। শহীদ জিয়াউর রহমান ছিলেনতার পৃষ্টপোশক। কাজী জাফর আহমদ ছিলেন ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রাজপথে সোচ্চার। তাই বিএনপিকে বলবো আর ঘরে বসে না থেকে সেপ্টেম্বরে জনগণের দাবি নিয়ে রাজপথে নামুন। জনগণ অবশ্যই পাশে থাকবে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যবসায় ভারত অনেক লাভবান হয়েছে। তাদের পাওয়ার আর কিছু নাই। ভারতকে কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। পাকিস্তান থাকলে ভারত থেকে আসাম এতদিন আলাদা হয়ে যেত। এখনো যে হবে না তা বলা যায় না। বাংলাদেশের উচিত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পাশে থাকা। এটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম চেতনা।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই ইতিহাস বিকৃতির কথা বলেন। অথচ তিনি নিজেই ইতিহাস বিকৃত করছেন। তিনি বলেছেন ৬দফা বঙ্গবন্ধুর একক মস্তিষ্ক প্রসুত বিষয়। এটা সঠিক নয়। অর্থনীতিবিদ আখলাকুর রহমান, ছাত্তার, আনিসুজ্জামানসহ আরও কয়েকজন সিএসপি অফিসার ৬দফাপ্রনয়নে সহায়তা করেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, জাতি আজ চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশে গণতন্ত্র নেই, আইনের শাসন নেই। দুর্নীতিতে চেয়ে গেছে সব সেক্টর। এ অবস্থায় এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। কার দোষে এই সরকার এখনো জগদ্দল পাথরের মতো বসে আছে বিচারের সময় এখন নয়। রাজনীতি এখন শুধু দেশের গন্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই। রাজনীতি এখন আর্ন্তজাতিক বিষয়ে পরিণতহয়েছে। তাই সব কিছু বিবেচনায় এনে আমাদেরকে এবার রাজপথে সোচ্চার হতে হবে। সম্মিলিতভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, কাজী জাফর আহমদ ছিলেন এক সংগ্রামী জননেতা। তিনি জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের অগ্রনায়ক। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাতির সাথে বার বার প্রতারণা করেছেন। তিনি সংলাপের সময় বলেছিলেন, আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আমার প্রতি আপনারা আস্থা রাখুন, বিশ্বাস রাখুন। আমি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেব। এর পর তিনি এমন নির্বাচন দিলেন, যে ভোট দিনে না হয়ে রাতেই শেষ হয়ে যায়। জাতির সাথে এত বড় প্রতারণার ইতিহাস বিশ্বের আর কোথাও নেই। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারে দাবিতে আবার রাজপথে জোরালো আন্দোলনের আহবান জানান। লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, এ সরকার ভারতের তাবেদারিতে ব্যস্ত। দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে ভারতের স্বার্থ রক্ষা করছে।
জাফর আমার বন্ধু : ড. ইউনূস
সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফল আহমদের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘পুরোনো দিনের গল্প’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনার আয়োজন করেন তার বন্ধু-সহকর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, প্রবাসী শিক্ষাবিদ আতিকুর রহমান সালু ও ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। ‘ইতিহাসে সমুজ্জ্বল কাজী জাফর আহমেদ’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন তার কাজী জাফরের মেয়ে কাজী জয়া আহমদ।
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘সে আমার বিশেষ বন্ধু ছিল। আমার ক্লাস ফ্রেন্ড ছিল, আমরা একই ব্যাচের ছাত্র। আমি এসএম হলের আবাসিক ছাত্র ছিলাম, কাজী জাফর এটার ছাত্র ছিল। সে প্রায় আসত, রাজনৈতিক কারণেই আসত। তখন দেখা-সাক্ষাৎ হতো, আলাপ হতো, হলকে উপলক্ষ করেই জানাশোনা শুরু হয়। বন্ধুত্ব হলেও বন্ধুত্ব একটা বিশেষ বন্ধুত্বে পরিণত হয়। আমি ছাত্ররাজনীতি করিনি। কাজেই সেদিক থেকে তার সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার কারণ ছিল না।
কাজী জাফরের আন্ডারগ্রাইন্ড রাজনীতি প্রসঙ্গ তুলে ড. ইউনূস বলেন, চট্টগ্রাম থেকে একটা পিআইএর (পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স) ফ্লাইট ছিল। ঢাকায় আসার মাঝখানে কুমিল্লায় থামত। একটা ফ্লাইটে আমি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসছি, কুমিল্লায় থামল। যারা কুমিল্লার যাত্রী তারা নেমেছে। কুমিল্লা থেকে ঢাকার যাত্রী উঠল। তার মধ্যে লক্ষ্য করলাম, একজন দাড়ি-গোঁফওয়ালা একজন চাদর গায়ে আমার দিকে তাকাতে তাকাতে ঢুকল। আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না, কেন তাকাল? যেই আমার পাশে আসল, মাথা নিচু করে বলল-আমি কিন্তু আন্ডারগ্রাউন্ডে আছি, আপনি কিছু বলবেন না। আমি এই মাত্র চিনলাম, আগে তো বুঝিনি। এই হচ্ছে কাজী জাফর। তখন বুঝলাম যে, আন্ডার গ্রাউন্ডটা কী জিনিস। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।