পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামী ইতিহাসের সবচেয়ে মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক অধ্যায় হচ্ছে কাররালার ঘটনা। এ ঘটনার সাথে সম্পর্কিত রয়েছে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার এক অন্তহীন আহŸান ও সত্যের প্রতি আনুগত্যশীলদের জন্য চির শান্তির বাণী। কারবালার ঘটনা যেমন দুঃখ-বেদনার মহাসমুদ্র, তেমনি ঘটনা থেকে উদ্ভাসিত হচ্ছে রাসূলে পাক (সা:)-এর আহলে বাইতের আত্মত্যাগের অবিনশ্বর কাহিনী। ইমাম হোসাইন (রা:) ছিলেন রাসূলে পাক (সা:)-এর দৌহিত্র, তাঁর চরিত্র ছিল সমুজ্জ্বল আলোর প্রভায় আলোকিত এবং বিশ্বনন্দিত। ইয়াজিদের মতো স্বৈরাচারী শাসকের হাতে বায়াত হওয়া তাঁর পক্ষে কোনোক্রমেই সম্ভব ছিল না। তাই তিনি মক্কাবাসীদের ভক্তি, শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার মনোভাব দেখে মক্কা শরীফে বসবাস করাকে নিজের পক্ষে ভালো মনে করলেন। সেখানে তিনি শোয়াবে আবু তালেবে অবস্থান গ্রহণ করলেন।
এ দিকে কুফা থেকে অসংখ্য চিঠি এসে পৌঁছাল। এতে ইমাম হোসাইন (রা:)-এর প্রতি সমর্থনের অঙ্গীকার লিপিবদ্ধ ছিল। তারা কেউ এজিদের নেতৃত্ব মানতে রাজি ছিল না। কুফাবাসীদের মনোভাব সরেজমিনে যাচাই করার জন্য ইমাম হোসাইন (রা:) মুসলিম বিন আবীল (রা:)-কে কুফা প্রেরণ করলেন। সেখানে উপস্থিত হয়ে তিনি সন্তুষ্টচিত্তে বিশ হাজার কুফাবাসী থেকে ইমাম হোসাইন (রা:)-এর জন্য বায়াত গ্রহণ করলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ইমাম হোসাইন (রা:)-কে চিঠি লিখে জানালেন যে, জনসমর্থন আপনার অনুক‚লে। এখন আপনি বিনাদ্বিধায় কুফায় তশরীফ আনতে পারেন। ইমাম হোসাইন (রা:) চিঠি পেয়ে হিজাজ থেকে কুফার পথে রওনা হলেন। তখন কুফার শাসনকর্তা ছিলেন নু’মান বিন বাশির (রা:)। একজন বিশিষ্ট সাহাবী হওয়ার কারণে ইমাম হোসাইন (রা:)-এর প্রতি তাঁর অনুরাগ ছিল প্রবল। এতে এজিদ তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করে ইবনে যিয়াদকে সেখানে প্রশাসক নিযুক্ত করে এবং ইমাম হোসাইন (রা:)-কে প্রতিরোধ ও বন্দি করার নির্দেশ দেয়। ইবনে যিয়াদ এর জন্য হুর বিন ইয়াজিদ তামিমীর নেতৃত্বে দুই হাজার সৈন্যসহ তাকে কুফায় প্রেরণ করে এবং নির্দেশ দেয় যে, ইমাম হোসাইন (রা:) ও তাঁর সঙ্গী সহচরদের এমন স্থানে গতিরোধ করা যেখানে পানি সংগ্রহের কোনো ব্যবস্থা নেই।
কুফার পথে চলাকালে ইমাম (রা:)-এর সফরসঙ্গীগণ তাঁকে কুফা গমন হতে বিরত থাকার আহŸান জানালে ইমাম (রা:) এক মর্মস্পর্শী ভাষণের মাধ্যমে তাদের নিবৃত্ত করলেন এবং সম্মুখে অগ্রসর হলেন। মাকামে ‘সালাবায়’ পৌঁছার পর তিনি সংবাদ পেলেন যে, তাঁর প্রেরিত দূত মুসলিম বিন আকীল (রা:)-কে শহীদ করা হয়েছে। তাতেও তিনি ক্ষান্ত হলেন না। তারপর ‘যিশাম’ নামক স্থানে পৌঁছলে হুর ও তার সৈন্যদল তাকে পরিবেষ্টন করে ফেলে ও দাস্ত কারবালায় অবস্থান গ্রহণ করতে বাধ্য করে। উভয় পক্ষ মুখোমুখি হলে ইমাম হোসাইন (রা:) এক মর্মস্পর্শী ভাষণ দেন। এ সময়ে কুফাবাসীরা বিশ্বাসঘাতকতা করেও এজিদের পক্ষ অবলম্বন করে। কিন্তু হুর এজিদ পক্ষ পরিত্যাগ করে ইমাম হোসাইন (রা:)-এর পক্ষে যোগাযোগ করলে আমর বিন সাদ এজিদী বাহিনীর নেতৃত্ব গ্রহণ করে। শুরু হয় যুদ্ধ। যুদ্ধে ইমাম হোসাইন (রা:) এবং তাঁর ৭২ জন সঙ্গী- সহচর শাহাদাত বরণ করেন। তাদের এই শাহাদাতের দ্বারা রচিত হলো- সত্যের প্রতি অবিচলতার মহান আদর্শ। যে আদর্শ রোজ কেয়ামত পর্যন্ত মর্দে মুমিনের অন্তরে ঈমান ও এনমিয়াদের প্রস্ফুটিত আরক্তিম ফুল হয়ে অবিরাম ফুটতে থাকবে। এতে কোনোই সন্দেহ নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।