পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের সড়ক বা মহাসড়কে সবখানেই বেপরোয়া মোটরসাইকেল। চালকদের বেপরোয়া আচরণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। ঝড়ছে প্রাণ। রাজধানীবাসীর কাছে নতুন এক আতঙ্কের নাম বেপরোয়া মোটরসাইকেল। দেশে অ্যাপসভিত্তিক রাইড সার্ভিস চালু হওয়ার পর থেকে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন মোটরসাইকেল রাস্তায় নামছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসাবে শুধু রাজধানীতেই চলাচল করছে আট লক্ষাধিক মোটরসাইকেল। রাজধানীতেই প্রতিদিন গড়ে ২৫০টিরও বেশি মোটরসাইকেল নামছে। লাখ লাখ মোটরসাইকেলের কারণে একদিকে যেমন ঘটছে দুর্ঘটনা, তেমনি সড়ক ও ফুটপাতের যাত্রী ও পথচারীরা বেশিরভাগ সময়ই বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়ছেন।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে গত চার মাসে ৩ হাজার ৭২২টি মামলা করেছে বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ ও অন্যান্য আইনে এসব মামলায় জরিমানা করা হয়েছে প্রায় ৭৪ লাখ টাকা। এ সময়ে মোট ৬১৯টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। এর মধ্যে সবচেয়ে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে।
বিআরটিএর এনফোর্সমেন্ট শাখার তথ্য বলছে, মামলাগুলো হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও জুনে। এপ্রিল ও মে মাস করোনাভাইরাসের কারণে দেশে সাধারণ ছুটি থাকায় ওই সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বিআরটিএ সূত্র জানায়, করোনা সংক্রমণের মধ্যেও সড়কে মোটরসাইকেল ছিল খুবই বেপরোয়া। এসব মোটরসাইকেল সুযোগ পেলেই আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সড়ক ছেড়ে ফুটপাতে উঠে আসছে। এ ছাড়া যানজটের মধ্যে দেড় ফুট জায়গা পেলেই বেপরোয়াভাবে ছুটে চলছে এসব মোটরসাইকেল।
বিআরটিএ-এর মামলার হিসাবে দেখা যায়, রাজধানীর যানবাহনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আইন ভঙ্গ করছে মোটরসাইকেল। ট্রাফিক পুলিশরা বলছেন, মোটরসাইকেল চালকরা বেশিরভাগ সময় আইন মানতে চান না। সুযোগ পেলেই তারা সিগন্যাল অমান্য করেন। দেখা যায়, রাস্তার কোনো এক অংশে গাড়ি চলাচল বন্ধের জন্য কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সিগন্যাল দিয়েছেন। বেশিরভাগ সময় সিগন্যালের শুরুতে কয়েকটি মোটরসাইকেল জোরে টান দিয়ে রাস্তা পার হয়ে যাবে। একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, অনেক সময় আমরা এ ধরনের ক্ষেত্রে সিগন্যাল অমান্যের কেস দিই। কিন্তু মোটরসাইকেল সংখ্যা বেশি হওয়ায় আমাদের হিমশিম খেতে হয়। তবে রাজধানীর বেশকিছু জায়গায় মোটরসাইকেল চালকদের আইন মানাতে সিগন্যালের সময় রশি ব্যবহার করতেও দেখা গেছে।
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের পর মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীদের হেলমেট পরার বিষয়ে অনেকের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও অনেকেই আইন মানছেন না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোটরসাইকেল চালক হেলমেট পরিধান করলে দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার আশঙ্কা ৪০ শতাংশ হ্রাস পায় এবং মারাত্মক আহত হওয়ার আশঙ্কা ২৫ থেকে ৭৫ শতাংশ হ্রাস পায়। অনেক সময় চালকরা মোটরসাইকেল চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলেন। এমন কারণেও মনোসংযোগের বিঘ্ন ঘটে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় সক্রিয় ছিলেন বিআরটিএর আট ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই মাসে মোট ১৩৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। এতে সড়ক আইন লঙ্ঘনের বিভিন্ন অপরাধে ৮৬৪টি মামলা করা হয়। জরিমানা আদায় করা হয় ১৯ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ টাকা। এর বাইরে ১১ জনকে কারাদন্ডও দেয়া হয়।
ফেব্রুয়ারিতে আইন প্রয়োগে আরো কঠোর অবস্থান নেয় বিআরটিএ। ওই মাসেও সক্রিয় ছিলেন সংস্থাটির আটজন ম্যাজিস্ট্রেট। তারা সব মিলিয়ে ১৪৭টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। এতে ১ হাজার ২১১টি মামলা করা হয়। জরিমানা আদায় করা হয় ২৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। এর বাইরে তিনজনকে জরিমানা ও ১৮টি যানবাহন ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়। মার্চে ঢাকা ও চট্টগ্রামে মাসজুড়ে ১৩৮টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। মামলা করা হয় ৯৪৭টি। জরিমানা আদায় করা হয় ২৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ৩০০। কাউকে কারাদন্ড না দেয়া হলেও তিনটি যানবাহন পাঠানো হয় ডাম্পিংকে।
বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, গত চার মাসে সবচেয়ে বেশি মামলা করা হয়েছে মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে। মোটরসাইকেল লাইসেন্স না থাকা, চালকের লাইসেন্স না থাকা, হেলমেট না পরা, এক মোটরসাইকেলে দুজনের বেশি ভ্রমণ, ট্রাফিক আইন ভঙ্গসহ বিভিন্ন অপরাধে মামলাগুলো হয়েছে। তবে এ সময়ে ঠিক কতগুলো মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তার সঠিক তথ্য দিতে পারেননি বিআরটিএর কর্মকর্তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।