তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ৭ উইকেটে জিতেছে সফরকারীরা। ১ বল বাকি থাকতে ইংল্যান্ডের ৩২৮ রান ছাড়িয়ে গড়েছে রেকর্ড। আগের রেকর্ড ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই। ২০১১ বিশ্বকাপে জিতেছিল ৩২৭ রান তাড়া করে। এবারের মতো সেবারও ৩২৯ রান করেছিল আয়ারল্যান্ড।
প্রথম দুই ম্যাচে জেতা ইংল্যান্ড সিরিজ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। তবে এই জয়ে দশ পয়েন্ট নিয়ে সুপার লিগের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে আইরিশরা, ২০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ইংল্যান্ড।
আগের দুই ম্যাচে ছয় নম্বরে ব্যাট করা মর্গ্যান বিপদে হাল ধরতে উঠে আসেন চার নম্বরে। অধিনায়কের সেঞ্চুরি আর টম ব্যান্টন ও ডেভিড উইলির ফিফটি স্কোর বোর্ডে লড়াই করার মতো রান পায় ইংল্যান্ড।
স্টার্লিং আর বলবার্নির সঙ্গেই মূলত পেরে উঠেনি স্বাগতিকরা। টপ অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিতে রান পাহাড় টপকায় আয়ারল্যান্ড। তবে সাত উইকেটে ম্যাচ জিতলেও সিরিজের ফলাফলে কোনো প্রভাব পড়েনি। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ গেছে ইংল্যান্ডের ঘরেই।
দুই ম্যাচের মধ্যে মিল আছে আরও। সে ম্যাচেও ইংল্যান্ডের হয়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছিলেন তিনজন, এবারও তাই। সেবার অবশ্য ইংল্যান্ডের হয়ে কেউ সেঞ্চুরি করেননি। এবার যিনি সেঞ্চুরি করেছেন, তাঁর রান পাওয়াটা আইরিশদের মনে ব্যথা জাগিয়ে যায়-ই না। ইংলিশ অধিনায়ক মরর্গ্যান যে জন্মসূত্রে আইরিশ, এক সময় আয়ারল্যান্ডের হয়েও খেলেছেন।
৮৪ বলে ১৫টি চার ও চার ছক্কায় সাজানো ১০৪ রানের এই ইনিংসটা ২০১৯ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জনি বেয়ারস্টোর সেঞ্চুরির পর ইংল্যান্ডের সর্বপ্রথম সেঞ্চুরি। গত বিশ বছরে ইংল্যান্ডের দুই ওয়ানডে সেঞ্চুরির মধ্যে এত সময়ের ব্যবধান কখনো দেখেনি ক্রিকেট বিশ্ব।
অধিনায়ক হিসেবে এই ম্যাচে চার ছক্কা মেরে ওয়ানডে অধিনায়কদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ড গড়লেন মরগান, এই নিয়ে তাঁর ছক্কাসংখ্যা দাঁড়াল ২১২–তে, ২১১ ছক্কা নিয়ে আগের রেকর্ডটা ছিল সাবেক ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির।
আইরিশদের জয়ের আসল নায়ক পল স্টার্লিং। ২০১১ সালের বিখ্যাত সেই জয়েও তিনি মাঠে ছিলেন। এবারও আছেন। সেবার কেভিন ও'ব্রায়েনের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে (৬৩ বলে ১১৩) আড়াল হয়ে গিয়েছিল স্টার্লিংয়ের ছোট্ট কিন্তু কার্যকরী ইনিংস।
এবার কেভিনের দায়িত্বটা নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন এই তারকা। ১২৮ বলে ৯ চার ও ছয় ছক্কায় হাঁকিয়েছেন ১৪২। ওদিকে ১৫ বলে ২১ করে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন সেবারের নায়ক কেভিন ও'ব্রায়েন। মূলত স্টার্লিং আর বালবির্নিতে চড়েই ইংল্যান্ডের মাটিতে সফরকারী দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড গড়েছে আয়ারল্যান্ড।
আইরিশদের হয়ে সেবার সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন এক ডানহাতি মিডিয়াম পেসার, এবারও তাই-ই বলা যায়। সেবার ইংল্যান্ডকে ৩২৭ রানে বেঁধে রাখার পেছনে জন মুনির ৪ উইকেটের অবদান ছিল বেশ। এবার ৩ উইকেট নিয়ে আইরিশদের সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন পেসার ক্রেইগ ইয়াং।
ইংল্যান্ড অধিনায়কের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এবার আইরিশ অধিনায়কও করেছেন সেঞ্চুরি। এক ডজন চারে সাজানো অ্যান্ডি বালবির্নির ১১২ বলে ১১৩ রানের ইনিংসটা জয়ের পথে আইরিশদের এগিয়ে নিয়ে গেছে অনেক। এর আগে ওয়ানডেতে মাত্র চারবার দুই অধিনায়কই সেঞ্চুরি একই ম্যাচে করেছিলেন।
সর্বপ্রথম উদাহরণে জড়িয়ে আছে ইংল্যান্ড-আয়ারল্যান্ডেরই নাম। সেবার মরগানের পাশাপাশি সেঞ্চুরি করেছিলেন উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড। বাকি তিন উদাহরণেই আছেন ভারতের বর্তমান অধিনায়ক বিরাট। চট্টগ্রামের ফতুল্লায় বাংলাদেশের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের পাশাপাশি সেঞ্চুরি করেছিলেন কোহলি।
পরে ২০১৪ সালে রাঁচিতে ও ২০১৮ সালে ডারবানে কোহলির পাশাপাশি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন যথাক্রমে শ্রীলঙ্কার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্যাফ ডু প্লেসিস।