পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও বাড়ছে বানভাসিদের দুর্ভোগ। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় মানুষ প্রায় দেড়মাস যাবৎ পানিবন্দি। তাদের ঘরবাড়ির পানি নামতে শুরু করলেও এখনো বাড়ি ফিরতে পারছে না। বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়া বন্যার্তরা ত্রাণ পাচ্ছে না। বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সঙ্কটে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। এ দিকে আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে এ মাসের শেষে আবারও বন্যা হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতর দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানিয়েছে দেশের চলমান বন্যা আগস্টের মধ্যভাগ নাগাদ চলতে পারে। তবে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে এ মাসের শেষে আবারও স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগস্টে বাংলাদেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দু’টি বর্ষাকালীন লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি বর্ষাকালীন নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে উন্নতি হয়ে মধ্য আগস্ট নাগাদ স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে। এ মাসের শেষার্ধে মৌসুমী ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরাঞ্চল, উত্তর-প‚র্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-প‚র্বাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরসম‚হের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের উত্তর ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এ অবস্থা আগামী ২৪ ঘণ্টা বজায় থাকবে। তবে দেশের মধ্যাঞ্চলের বন্যাপরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা ঢাকা ও এর আশপাশের বিভিন্ন জেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকবে।
ফরিদপুর থেকে নাজিম বকাউল জানান, টানা কয়েকদিন ধরে ফরিদপুরের পদ্মানদীর পানি কমে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি স্থিতিশীল থাকায় এখনও বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পদ্মার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সদর উপজেলাসহ জেলার ৭টি উপজেলার প্রায় ২লাখ মানুষ এখনও পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। এসব এলাকার মানুষের বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের অভাব রয়েছে।
কুড়িগ্রাম থেকে শফিকুল ইসলাম বেবু জানান, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। গতকাল সকালে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি কুড়িগ্রাম ব্রীজ পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ফলে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার ৫৬টি ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৩লাখ মানুষের দূর্ভোগ কমেনি।
সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, আবারও বাড়তে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। এ নিয়ে চতুর্থ দফায় যমুনার পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, কাজিপুর পয়েন্টে রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৫৬ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মুন্সীগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কমেনি। গতকাল মুন্সীগঞ্জে পদ্মানদীর ভাগ্যকূল পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। মাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। মুন্সীগঞ্জ সদর, টংগিবাড়ী, শ্রীনগর ও লৌহজং উপজেলার ২৯টি ইউনিয়নের ১৮৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে ধলেশ্বরী নদীর পানি কমার সাথে সাথে নদীর তীব্র স্রোতের কারণে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। গত দুই দিনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের প্রায় ২০টি বাড়ি। হুমকির মুখে আরো শতাধিক বাড়িসহ নতুন মসজিদ এবং ইসলামপুর কামিল মাদরাসা ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরো উন্নতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তিতাস, মেঘনা ও হাওড়া নদীর পানি আরো কমেছে। তবে পানি কমলেও তিতাসের পানি এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।