Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা প্রকল্প ত্বরান্বিত করছে চীন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

ভারতীয় উপমহাদেশে নিজের উপস্থিতি বাড়াতে মরিয়া চীন। আর সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে ইতিমধ্যে দু’টি সাবমেরিন হস্তান্তর করেছে দেশটি। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর আরও কাছে নিয়ে যেতে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং (৫৮) গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রেখেছেন। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে লন্ডন থেকে প্রকাশিত এশিয়ান লাইট।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পেশাদার ক‚টনীতিক লি জিমিং-এর কাছে নতুন নতুন চীনা কোম্পানিকে ঢাকায় নিয়ে আসাই একমাত্র অগ্রাধিকার নয়। দৃশ্যত, তার লক্ষ্য হচ্ছে কক্সবাজারের পেকুয়ায় অত্যাধুনিক সাবমেরিন ঘাঁটি, বিএনএস শেখ হাসিনা’র মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের নির্মানকাজ ত্বরান্বিত করা। গত বছর চীন ও বাংলাদেশের দেয়া যৌথ বিবৃতিতে শেখ হাসিনা চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এর প্রতি শুধু সমর্থনই জানাননি, তিনি প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার চীনা পরিকল্পনার প্রতিও একমত পোষণ করেন। প্রতিরক্ষা শিল্প শক্তিশালী করার মধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বঙ্গোপসাগরে নৌ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণও অন্তর্ভ‚ক্ত রয়েছে।

যদিও শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক বেশ আন্তরিক, তবুও বেইজিং চায় উপমহাদেশে নিজের উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে। এই লক্ষে নৌ বন্দর, বিমানবন্দর বা কক্সবাজারে নির্মিতব্য সাবমেরিন ঘাঁটির মতো বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থছাড় করছে চীন। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ সূত্রগুলো বার্তাসংস্থা আইএএনএস’কে বলেছে যে, ওই সাবমেরিন ঘাঁটি প্রকল্পে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি পলি টেকনোলজিস ইনকর্পোরেশন (পিটিআই)-কে কাজ দেয়া হয়েছে। সামগ্রিক নির্মাণ কাজে ব্যয় হবে আনুমানিক ১০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই নির্ধারিত স্থাপনায় পুরোদমে কাজ আরম্ভ হয়েছে। ওই ঘাঁটিতে ব্যারাক, গোলাবারুদের ডিপো, মেরামত ডক ও সাধারণ ঘাট সহ বিভিন্ন সুবিধা থাকবে।

ভারতীয় এজেন্সির সূত্রগুলো বলছে যে, বেইজিং-এর আদেশে রাষ্ট্রদূত লি জিমিং কক্সবাজারের ওই প্রকল্প সহ বাংলাদেশে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে কাজ করছেন। এর আগে চীনের ইউনান প্রদেশে সরকারের হয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে লি জিমিং-এর। তার সাথে চীনের নৌ বাহিনী অর্থাৎ পিপল’স লিবারেশন আর্মি নেভি (পিএলএএন)-এর শীর্ষ কমান্ডারদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। তিনি বর্তমানে সাবমেরিন প্রকল্পের তত্বাবধানে আছেন। এর আগে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে চীন-নির্মিত দু’টি ছোট যুদ্ধজাহাজের দ্রুত হস্তান্তরেও গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রেখেছিলেন তিনি।

২০১৬-১৭ সালে চীনের কাছ থেকে দু’টি সাবমেরিন গ্রহণ করেছিল বাংলাদেশ। এই দু’টি সাবমেরিন কক্সবাজারের একটি অস্থায়ী ঘাঁটি থেকে এখন পরিচালিত হচ্ছে। সাবমেরিন দু’টি কেনার পর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য একটি আধুনিক সাবমেরিন ঘাঁটি নির্মানে সহায়তার জন্য চীনের দ্বারস্থ হয় ঢাকা। এছাড়া পটুয়াখালীতে একটি নতুন নৌ ঘাঁটি স্থাপন করছে ঢাকা। সেখানেও সাবমেরিন ভিড়ানোর ব্যবস্থা থাকছে। এছাড়া বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে নির্মিতব্য পায়রা সমুদ্র বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ওই ঘাঁটিতে আরও নানাবিধ সুবিধা থাকছে। নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মাসে বিএনএস সংগ্রাম নামে চীন নির্মিত একটি যুদ্ধজাহাজ নৌবাহিনীতে প্রবেশের উদ্বোধন করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ