Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যে ব্যাধির পরিণাম অনিবার্য ধ্বংস

রূহুল আমীন খান | প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০২০, ১২:০২ এএম

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘যদি আদম সন্তানের স্বর্ণের একটি উপত্যকা থাকে, তবে সে অনুরূপ আর একটি কামনা করবে। মাটি ব্যতীত কিছুই মানুষের মুখ পূর্ণ করতে পারবে না।’ (মুসলিম শরীফ)। তিনি আরও বলেন: ‘আদম সন্তানের যদি দুই উপত্যকা ভরা সম্পদ থাকে তবে সে তৃতীয় উপত্যকা কামনা করবে। আদম সন্তানের পেট মাটি ব্যতীত কিছুই পূর্ণ করতে পারবে না। কিন্তু যে তাওবা করে আল্লাহ তার তাওবা কবুল করেন।’ (মুসলিম শরীফ)।

বস্তুত লোভ একটি জঘন্য মানসিক ব্যাধি। যত দুর্নীতি-দুষ্কৃতির কারণ হচ্ছে এই লোভ। ইদানীং বিভিন্ন মিডিয়া জুড়ে থাকে প্রতারণা ও জালিয়াতির সংবাদ। আর এসব অপরাধের মূল কারণ হচ্ছে লোভ। লোভ বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে, ক্ষমতার লোভ, যশ-খ্যাতির লোভ ইত্যাদি। তবে সব লোভেরই পেছনে সক্রিয় অর্থ লোভ। এই লোভ মানুষকে অমানুষ করে তোলে। ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। বিখ্যাত প্রবাদ বাক্য আছে, ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’। এর উদাহরণ অসংখ্য, অগণিত। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘দুটি ক্ষুধার্ত বাঘ মেষ পালের জন্য ততটুকু ক্ষতিকর নয়, যতটুকু ক্ষতিকর মানুষের মাল ও পদ-মর্যাদার লোভ।’ (জামে তিরমিজী)।

জীবন ধারণের জন্য অর্থ অপরিহার্য। এ জন্য ইসলাম হালাল রুজি উপার্জনের ওপরে অত্যন্ত গুরুত্ব আরোপ করেছে। অন্যান্য ফরজ আদায়ের পরে হালাল রুজি উপার্জনকে ফরজ বলেছে। পবিত্র কুরআন নামাজ আদায়ের পরে হালাল রুজি উপার্জনের জন্য কর্মক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়তে বলেছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘যে ব্যক্তি ন্যায়ভাবে মাল উপার্জন করে তার মাল বরকতপূর্ণ করে দেওয়া হবে, আর যে অন্যায়ভাবে ধন উপার্জন করে সে ঐ লোকের মতো যে আহার করে কিন্তু তৃপ্ত হয় না।’ (মুসলিম শরীফ)। অনুরূপ অপর এক হাদীসে আছে: প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘মনে রাখবে, ধন-সম্পদ সবুজ শ্যামল ও মধুর। এ সম্পদ ঐ মুসলমানের জন্য উত্তম সঙ্গী, যে এ সম্পদ থেকে মিসকীন, ইয়াতীম ও মুসাফিরদের দান করে। আর যে ব্যক্তি এ সম্পদ অবৈধভাবে উপার্জন করে সে ঐ ব্যক্তির মতো যে আহার করে কিন্তু তৃপ্ত হয় না।’ (মুসলিম শরীফ)।

ধন-সম্পদ অত্যাবশ্যকীয় বস্তু, এতে সন্দেহ নেই। তবে তা উপার্জন করতে হবে বৈধ পথে এবং ব্যয়ও করতে হবে বৈধ ও উত্তম কাজে। হাদীস শরীফে আছে, হাশরের মাঠে শেষ বিচারের দিন কোনো লোকই রাব্বুল আলামীনের কাছে ৫টি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পা হেলাতে পারবে না। জীবন সম্পর্কে, যৌবন সম্পর্কে, অর্থ-সম্পদ সম্পর্কে এবং আমল সম্পর্কে। মাল সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে দু’টি, আয় করেছ কোন পথে এবং ব্যয় করেছ কোন পথে? সম্পদ তো আহরণ করতে হবেই। কিন্তু তা হতে হবে অবশ্যই হালাল ও বৈধ উপায়ে। নিয়ন্ত্রণ করতে হবে লোভকে। ত্যাগ করতে হবে বৈধ-অবৈধ বিবেচনা না করে যে কোনো পন্থায় তা উপার্জনের মোহ। প্রিয় নবী (সা.)-এর দরবারে জিব্রাইল (আ.) এসে একদা বললেন: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জানিয়েছেন, আপনার জন্য পাহাড়গুলিকে স্বর্ণে পরিণত করে দেবেন। নবীজী বললেন: ‘না, আমি পার্থিব সম্পদ চাই না’।

মক্কা বিজয়ের পরে বিভিন্ন গোত্র যখন ইসলাম গ্রহণ করতে থাকল, তখন বিপুল পরিমাণ মালে গণিমত, অর্থ-সম্পদ মসজিদে নবুবীতে জমা হতে লাগল। সে বিপুল সম্পদ নবীজী অকাতরে দান করতে লাগলেন সারাদিন ধরে, এশার নামাজ পর্যন্ত। যখন বিতরণ শেষ হয়ে গেল, নবীজী রিক্ত হস্তে ঘরে ফিরে গেলেন, দেখলেন, ঘরে রাতে খাবারের মতো কিছুই নাই। দ্বিতীয় দিনও এরূপ মাল জমা হলো, তা সবই বিতরণ করে রাতে খালি হাতে ফিরলেন এ অবস্থায় যে ঘরে রাতে খাবারের মতো কিছু ছিল না। এই ছিল দোজাহানের বাদশার হাল। সম্পদ অঢেল কিন্তু লোভ নাই সে সম্পদের প্রতি।

প্রিয়নবী (সা.)-এর সত্যিকার অনুসারীদের মধ্যে ইসলামের সোনালী জমানার ইতিহাসে এর নজির আছে অনেক। রোম সাম্রাজ্যের বিরাট এলাকা, পারশ্য, মিসর, ইয়েমেন তখন এসে গেছে ইসলামী বিজয় পতাকা তলে। কী এমন শক্তি? পর্যবেক্ষণের জন্য রোম (বাইজেন্টাইন) সম্রাট হিরাক্লিয়াস তাঁর এক চৌকস দূতকে পাঠালেন প্রবল প্রতাপান্বিত খলিফা হযরত ওমর (রা.)-এর দরবারে, মদীনায়। দূত মদীনায় পৌঁছে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের সম্রাটের রাজ প্রাসাদ কোথায়? লোকেরা বলল, আমাদের কোনো সম্রাট নেই, আছে জনগণের সেবক খলিফা। আর তাঁর রাজ প্রাসাদ আমাদের হৃদয়ে। তিনি বাস করেন ক্ষুদ্র এক ঝুপড়িতে। বিস্ময়ভরে দূত জিজ্ঞাসা করলেন, কোথায় তিনি? লোকেরা বলল, তিনি শহরের বাইরে বেরিয়েছেন। দূত খুঁজে খুঁজে আবিষ্কার করলেন, মরুবালুকায় এক বৃক্ষ ছায়ায় শুয়ে ঘুমুচ্ছেন খলিফা ওমর। রৌদ্রতাপে ঘর্ম নির্গত হয়ে ভিজে যাচ্ছে মরুবালুকা। বিস্ময়ে বিমুগ্ধ, আবেগাপ্লুত স্বগোতোক্তি করতে লাগলেন রোমান দূত: আমাদের সম্রাট দুর্ভেদ্য প্রাচীর বেষ্টিত সুরম্য প্রাসাদ অভ্যন্তরে দেহরক্ষী পরিবৃত থেকেও যেখানে ঘুমুতে ভয় পান, সেখানে তুমি হে ওমর এ অবস্থায় আরামে ঘুমুচ্ছ প্রশান্ত চিত্তে, নির্বিকারভাবে। ভাবলেন এমন নির্মোহ, নির্লোভ মানুষও কি হতে পারে? হ্যাঁ, হতে পারে। আমাদের জাতীয় কবির ভাষায় :
‘ইসলাম সে তো পরশ মানিক তারে কে পেয়েছে খুঁজি?
পরশে তাহার সোনা হলো যারা তাদেরই মোরা বুঝি।’

লোভ মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। একে জয় করে, নিয়ন্ত্রণে এনে সোনার মানুষ হওয়ার শিক্ষা ও দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহাম্মদ মোস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর একে বল্গাহীন ছেড়ে দিলে তার ধ্বংস যে অনিবার্য, সে সম্পর্কেও তিনি সতর্কবাণী উচ্চারণ করে গেছেন। পূর্বে উল্লেখ করে এসেছি যেই প্রবাদ ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’- তারও দৃষ্টান্তের অভাব নেই, যেমন অতীত ইতিহাসে তেমন বর্তমান সময়েও। অতীতে নবী হযরত দাউদ (আ.)-এর জামানায় আল্লাহ পাক বনী ইসরাইল কওমকে নিষেধ করেছিলেন শনিবারের দিন মাছ শিকার করতে। কিন্তু সে কওমের লোভী লোকেরা শঠতার আশ্রয় নিয়েছিল। তারা সাগর থেকে নালা কেটে এনে, ডাঙ্গায় পুকুর বানিয়ে তার মধ্যে মাছ প্রবেশের কৌশল করল। শনিবার গিয়ে রোববার এলে তারা শিকার করত সেই মাছ। দীর্ঘদিনই এ অপকৌশল অবলম্বন করেছিল তারা। অবশেষে নেমে এল খোদায়ী গজব। আল্লাহ হুকুম দিলেন, ‘তোরা অভিশপ্ত বানর হয়ে যা’। তারা বানর হয়ে গেল এবং ধ্বংস হয়ে গেল।
অনুরূপ হযরত ঈসা (আ.)-এর এক মুজেজার দৃষ্টান্ত আছে। আল্লাহর রাসূল হযরত ঈসা (আ.) একদা বের হলেন সফরে। একটি লোভী লোক আবেদন জানিয়ে তাঁর সঙ্গী হলো। অনেক দূর পথ চলে ক্ষুধার্ত হলেন নবী। বসলেন এক বৃক্ষছায়ায়। ঝোলা থেকে বের করলেন তিনখানা রুটি। লোকটিকে সাথে নিয়ে দু’খানা রুটি খেলেন দু’জনে। তারপর তাকে বসিয়ে রেখে তিনি গেলেন একটু দূরে নদীতে পানি পান করতে। ফিরে এসে দেখলেন, অবশিষ্ট রুটি খানা আর নেই। লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলেন, ঐ রুটিখানা কোথায়? লোকটি উত্তর, দিল জানি না। এবার দুজনে সামনে এগুলেন। বনের মধ্যে চরতে দেখলেন একটা হরিণী আর তার দু’টি বাচ্চাকে। নবী ডাকলেন, একটা বাচ্চা তার কাছে এল। তিনি সেটিকে জবাই করে ভুনা করে লোকটি নিয়ে আহার করলেন, রেখে দিলেন হাড্ডিগুলো। হুকুম দিলেন ‘জিন্দা হয়ে যাও’। খোদা প্রদত্ত অলৌকিক শক্তি- মোজেজায় হরিণশাবক জিন্দা হয়ে উঠে দৌড়ে গেল তার মায়ের কাছে। হযরত ঈসা (আ.) বললেন, যেই আল্লাহর কুদরতে হরিণশাবক জিন্দা হয়ে গেল, সে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি- তৃতীয় রুটিখানা কোথায়? লোকটি বলল, আমি জানি না। আবার সামনে চললেন তাঁরা। সামনে বহমান একটি নদী। হযরত ঈসা (আ.) লোকটিকে হাতে ধরে পানির উপর দিয়ে নদীর অপর পাড়ে পৌঁছলেন এবং তাকে উদ্দেশ করে বললেন, যেই আল্লাহর কুদরতে নৌকা ছাড়া আমরা পানির উপর দিয়ে হেঁটে এ পারে এলাম, সেই আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি ‘তৃতীয় রুটিখানা কোথায়? এবারও লোকটি উত্তর করল, আমি জানি না হুজুর। দু’জনে আবার সামনে এগুলেন। এক বনের ধারে পৌঁছে হযরত ঈসা (আ.) বালু জমা করে একটি স্তূপ করলেন এবং আল্লাহর নাম করে ফুৎকার দিলেন। বালুর স্তূপটি স্বর্ণস্তূপে পরিণত হলো। তিনি তা তিন ভাগে বিভক্ত করে বললেন, যে দুইটি রুটি খেয়েছে তার দুইভাগ, আর যে একটি রুটি খেয়েছে তার একভাগ স্বর্ণ। লোকটি বলল, হুজুর, আমি ভুল করে ফেলেছি, আমি খেয়েছি দুই রুটি। ঈসা (আ.) বললেন, বেশ। লও, এ স্বর্ণের সবটাই তোমার। তিনি চলে গেলেন। লোকটি সেখানে রইল স্বর্ণ নিয়ে। দু’জন দুষ্ট লোক যাচ্ছিল ঐ পথ দিয়ে। তারা স্বর্ণস্তূপ ও লোকটিকে দেখল এবং তাকে হত্যা করে স্বর্ণ নিয়ে যেতে উদ্যত হলো। লোকটি বলল, মারামারিতে হারজিত আছে। তা না করে এসো, এই স্বর্ণ আমরা তিনজনে ভাগ করে নিই। তবে এখন আমরা ক্ষুধার্ত। একজন বাজারে গিয়ে খাবার নিয়ে এসো, তা খেয়ে স্বর্ণ ভাগ করে নেব। তারা তাতে রাজি হয়ে একজন বাজারে গেল, খাদ্য কিনল এবং তাতে বিষ মিশালো, যাতে অপর দুজন সেই বিষাক্ত খাবার খেয়ে মারা যায়, আর সব স্বর্ণ সে একা নিতে পারে। এদিকে ওরাও পরামর্শ করল, খাবার নিয়ে আসতেই তাকে হত্যা করে স্বর্ণ ওরা দুজনে নিয়ে নেবে। লোকটি বাজার থেকে আসা মাত্র আক্রমণ করে তাকে হত্যা করল এবং তার আনিত খাবার খেয়ে বিষক্রিয়ায় দু’জনেই মারা গেল। পরে হযরত ঈসা (আ.) ঐ পথ ধরে গমন কালে দেখলেন, স্বর্ণস্তূপটি পড়ে আছে এবং তার পাশে পড়ে আছে ওদের তিন জনের মরা লাশ। তিনি আফসোস করলেন, অতি লোভের অনিবার্য পরিণতি দেখে।

রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘দীনার ও দিরহামের গোলামেরা ধ্বংস হোক। তাদের এসব কিছু দেওয়া হলে তারা সন্তুষ্ট থাকে আর না দেওয়া হলে অসন্তুষ্ট হয়।’ (বুখারী শরীফ)।

‘অর্থই সব অনর্থের মূল’ প্রবাদটি সত্য হলেও অর্থের প্রয়োজন সবার। কিন্তু তা অবৈধ উপায়ে, নানা কৌশলে, চক্রান্তের মাধ্যমে, অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করে উপার্জন করা যাবে না। অমর দার্শনিক কবি মাওলানা জালাল উদ্দীন রূমী (রহ.) তাঁর সুবিখ্যাত মসনবী শরীফে একটি সুন্দর উপমা দিয়ে বলেছেন, পানি ছাড়া নৌকা চলে না। তবে পানি থাকতে হবে নৌকার তলদেশে, তা যেন নৌকার ভেতরে না ঢোকে। যদি ভেতরে ঢোকে তবে নৌকা ডুবে যাবে। ধ্বংস হয়ে যাবে।

প্রসংশনীয় লোভও আছে তা হলো জ্ঞানের লোভ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘লোভাতুর ও তৃষ্ণার্ত দুই ব্যক্তি যারা কখনই তৃপ্ত হয় না। যে ইলম হাসিলে নিমগ্ন তার লোভ কখনো শেষ হয় না। দুনিয়া অর্জনে যে লিপ্ত সেও কখনো তৃপ্ত হয় না।’ (বায়হাকী শরীফ)। দয়াময় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের প্রথম শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত হওয়ার তৌফিক দান করুন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->