যেভাবে মাছ ভাজলে ভেঙে যাবে না
বাঙালির প্রতিদিনের খাবারে মাছ তো থাকেই। এটি সব খাবারের মধ্যে পুষ্টির অন্যতম উৎস। তাড়াহুড়ো করে
কাঁচা আলুর রস যদিও জনপ্রিয় সব্জি বা ফলের রসের অন্তর্ভুক্ত নয়, তবে এটি মূলত ভিটামিন, ফাইটোকেমিক্যালস এবং পুষ্টিতে পরিপূর্ণ। ২০১৬ সালের একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, আলু খাওয়ার ফলে ক্যান্সারের কোষগুলি দ্রুত উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। আলু অত্যন্ত ক্ষারীয়, যা পেটের এসিডিটি হ্রাস করে এবং পেটের অন্যান্য অসুবিধাগুলি কমিয়ে দেয়। এতে প্রতিদিনের প্রস্তাবিত মাত্রার ১শ’ শতাংশের বেশি ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরকে আয়রন শোষণ এবং রক্তনালী, পেশী, কার্টিলেজ ও হাড়ের কোলাজেন গঠনে সহায়তা করে। এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ত্বকের ফোলাভাব উপশম করতে, জ্বালাপোড়া হ্রাস করতে এবং তারুণ্যের আভা তৈরি করে।
এক কাপ আলুর রসে প্রতিদিনের জন্য প্রস্তাবিত থায়ামিনের প্রায় ৪০ শতাংশ (ভিটামিন বি-১) এবং নায়াসিন (ভিটামিন বি-৩) রয়েছে। এটিতে অল্প রাইবোফ্লাভিন (ভিটামিন বি-২), এবং ভিটামিন বি-৬ রয়েছে। বি ভিটামিন শরীরকে শর্করা গুকোজ ও শক্তি উৎপন্ন করতে সাহায্য করার জন্য অত্যাবশ্যক এবং মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রকে সহায়তা করে। বি ভিটামিন স্বাস্থ্যজ্জ্বল চুল, ত্বক এবং লিভারের স্বাস্থ্য বজায় রাখতেও সহায়তা করে। আলুতে পটাশিয়াম খুব বেশি থাকে।
প্রতিদিনের জন্য প্রস্তাবিত আলুর পরিমাণ প্রায় ১.৫ গ্রাম এবং মোট খাবারের ৩১ শতাংশ, যা একটি মাঝারি আকারের কমলার চেয়ে প্রায় ৩ গুণ বেশি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান ধারণ করে। আলুর পটাসিয়াম একটি ইলেক্ট্রোলাইট যা আপনার শরীরের তরল নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে ও পেশীকে সমর্থন করে এবং কিডনিতে রক্ত সরবরাহকে ফিল্টার করতে সহায়তা করে।
এক কাপ আলুর রসে দৈনিক প্রস্তাবিত মাত্রার প্রায় ১৪ শতাংশ আয়রন থাকে। অবসন্নতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মূল উপাদান আয়রন। এটি লাল রক্ত কোষকে সজীব রাখে এবং শরীরে অক্সিজেন সরবরাহে সহায়তা করে। ক্যালসিয়াম ছাড়া রক্ত জমাট বাঁধে না এবং দাঁত ও হাড় শক্ত হয় না। এক কাপ আলুর রসে দৈনিক প্রস্তাবিত মাত্রার প্রায় ৫ শতাংশ ক্যালসিয়াম থাকে।
আলুতে থাকা জিঙ্ক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে সুস্থ রাখার পাশাপাশি ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে। এক কাপ আলুতে প্রায় ১ মিলিগ্রাম জিঙ্ক থাকে, যা পুরুষদের জন্য প্রতিদিনের প্রযোজ্য মাত্রার প্রায় ৯ শতাংশ এবং মহিলাদের জন্য ১১ শতাংশ। কাঁচা আলুতে প্রতিদিনের প্রস্তাবিত মাত্রার প্রায় ৫ শতাংশ ভিটামিন কে থাকে, যা রক্ত জমাট বাঁধতে এবং হাড়ের ক্ষয় রোধে ও সারা শরীরে ক্যালসিয়াম পরিবহনে সহায়তা করে।
নিয়মিত এক গ্লাস আলুর রস পান করলে বাত, আলসার, ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় হয়। এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, লিভার ও গলবøাডারকে ডিটক্সাইফাই করে। জাপানিরা হেপাটাইটিস নিরাময়ে আলুর রস ব্যবহার করে। ঘুম থেকে ওঠার পরপরই বা প্রাতঃরাশের ৩০ মিনিট আগে প্রতিদিন এক গ্লাস আলুর রস পান করলে এর ডিটক্সাইফিং প্রভাবগুলি ফুটে ওঠে। ব্যথা, অবসাদ এবং মাইগ্রেন থেকে মুক্তি পেতে কপালে আলুর রস বা এক টুকরো আলু ঘষতে পারেন। এ সংক্রান্ত এখনও কোনও বৈজ্ঞানিক গবেষণা না হলেও সারা বিশ্বের মানুষের কাছ থেকে এর ইতিবাচক ফলাফল রেকর্ড করা হয়েছে।
আধা কাপ কাঁচা আলুর রস দিনে অন্তত ২ বার পান করলে, তা স্নায়ূর জ্বালা হ্রাস করে এবং সায়াটিকা বা তলপেটের ব্যাথা কমাতে সহায়তা করে। আলুর রস অস্থিসন্ধি থেকে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড হ্রাস করে। খাওয়ার পর আলুর রস পান করলে ক্ষুধার হরমোন ঘ্রেলিন এবং লেপটিন বৃদ্ধিতে বাধা দেয়, যা ওজন হ্রাসে সহায়তা করে। আলুর রসের ভিটামিন সি ত্বক সতেজ করে এবং এর এন্টিএজিং প্রভাব রয়েছে।
ত্বকের ডিপ হাইড্রেশনের জন্য নিয়মিতভাবে আলুর রস টক দইয়ের সাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিটের পরে ধুয়ে ফেলুন। চুলের খুশকি, শুষ্কতা এবং মাথার ত্বকের চুলকানিও দূর করতে ২টি আলুর রস, ১ টেবিল চামচ মধু এবং একটি ডিমের কুসুমের মিশ্রণ চুলের গোড়ায় প্রয়োগ করুন। এক ঘণ্টার পর যথারীতি শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন। কয়েকবার ব্যবহারের পর আশ্চর্যজনক ফলাফল লক্ষ্য করবেন।
তবে আলুর রস ব্যবহার শুরু করার আগে কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে আলুর রস সেবনে ডায়রিয়া এবং বমি হতে পারে। আলুর রসে উচ্চ মাত্রায় চিনি থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের এটি পান করার সময় সাবধান হওয়া উচিত। গর্ভবতী এবং বুকের দুধ খাওয়ানো মহিলাদের আলুর রস পান করার আগে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত। সূত্র : হেল্থ লাইন, স্টাইল ক্রেজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।