পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আবারও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। দেশের প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি কোথাও কোথাও বাড়তে শুরু করেছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। একই সাথে তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন। প্রমত্তা মেঘনার ভাঙনে চাঁদপুরে বিলীন হয়ে গেছে নদীর পশ্চিম পাড়ের অর্ধশত বাড়িঘর। শরীয়তপুরের শিবচরে পদ্মার ভাঙন তীব্র হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ জেলা সদরে যমুনা নদীর পানির প্রবল স্রোতে একটি বাঁধের ৭০ মিটার নদীতে ধসে গেছে। টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায়ও যমুনা নদীর ভাঙন তীব্র রূপ নিচ্ছে। কুড়িগ্রামে ধরলার ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছে নদী তীরবর্তী মানুষ।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক রয়েছে সরকার। বন্যা মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ও প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক বন্যার খোঁজ খবর রাখছেন ও নির্দেশনা দিচ্ছেন। এর মধ্যে সাধারণ মানুষের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে বন্যা দুর্গত এলাকার সব স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর। এদিকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত স্কুল কলেজের তালিকা ই-মেইলে অধিদফতরে পাঠাতে বলা হয়েছে। একইসাথে স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে সার্বিক সহযোগিতা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সব সরকারি বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের। গতকাল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিষয়টি সব প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু দেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে। এতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এসময় উত্তরাঞ্চলের এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের গাণিতিক আবহাওয়া মডেলের তথ্য অনুযায়ী আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয় প্রদেশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। এতে দেশের উত্তরাঞ্চল এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টি এবং সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সুরমা নদীর পানি আবার বাড়তে শুরু করেছে। সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১৮১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ইতোমধ্যে শহরের নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে পানি প্রবেশ করেছে। শহরের উত্তর আরপিন নগর ও নবীনগর এলাকায় পানি প্রবেশ করায় সেখানকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে।
চাঁদপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে প্রমত্তা মেঘনা চাঁদপুরে উত্তাল হয়ে ওঠেছে। ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ের অর্ধশত বাড়িঘর। নদীপাড়ের অনেকে শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে এখন দিশেহারা। কেউ কেউ বসতি সংলগ্ন এলাকায় হোগলা পাতা বাঁধ দিয়ে ভাঙন ঠেকিয়ে বাড়িঘর রক্ষার চেষ্টা করছেন। স্বেচ্ছাশ্রমে আশপাশের চরাঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা হোগলা পাতা ও গাছের ডালপালা দিয়ে ভাঙন রোধে চেষ্টা চালান।
গত কয়েক দিনে মেঘনার ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চাঁদপুর সদর উপজেলার মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ের ইব্রাহিমপুর ও পাশের আলুরবাজার ফেরিঘাট এলাকা। এছাড়া নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ছোট একটি বাজার ও বিআইডবিøউটিসির টার্মিনালের একাংশ। নতুন করে আবারো ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে আশপাশের কয়েকশ’ পরিবার। চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বাবুল আখতার বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি বস্তা ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিগগিরই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এসব বস্তা ফেলা হবে।
ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরআলগী গ্রামটি ব্যাপক ভাঙনের কবলে পড়েছে। বর্তমানে এই গ্রাম ব্রহ্মপুত্রে বিলীনের উপক্রম হয়েছে। ভাঙনরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।