Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আফতাব চৌধুরীর গ্রন্থ ‘প্রকৃতি ও পরিবেশ’ নিয়ে প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

মুজিবুর রহমান মুজিব | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০২০, ১২:০২ এএম

আফতাব চৌধুরী সাংবাদিকতা ও সাহিত্যের জগতে এক বলিষ্ঠ নাম, আত্মপ্রত্যয়ী প্রতিভা। ষাটের দশক থেকে তিনি লিখেছেন। এখনও ঈমানে-আমানে, সুন্নতে উজ্জ্বল তারুণ্যদীপ্তিতে ভরপুর। লিখে চলেছেন দু’হাতেই। প্রায় প্রতিদিন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকসমূহ এবং বিভিন্ন ম্যাগাজিনে তাঁর মূল্যবান প্রবন্ধ-নিবন্ধ ছাপা হয়। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী আফতাব চৌধুরী। তিনি যখন পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কলাম লিখেন আন্তর্জাতিক পাতায়, তখন মনে হয় তিনি একজন পেশাদার কূটনীতিবিদ। তিনি যখন চাষাবাদ ও কৃষি বিষয়ক রচনা লিখেন তখন মনে হয় তিনি একজন কৃষিবিদ; যখন স্বাস্থ্য বিষয়ক হেলথ টিপস লেখেন তখন মনে হয় তিনি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তাঁর প্রবন্ধ সংকলন ‘স্বাস্থ্য সমাচার’ স্বাস্থ্য বিষয়ক সাহিত্যের ভূবনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। আফতাব চৌধুরী বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হলেও তিনি মূলত ‘প্রকৃতি ও পরিবেশ’ বিষয়ক লেখক। প্রকৃতিপ্রেমী, বৃক্ষসখা আফতাব চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যায়। ছদকায়ে জারিয়া ও সুন্নতে রসুলুল্লাহ (সা.) হিসেবে ধর্মীয় ও সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে তিনি এ কাজ করেন। এমন মহৎ কর্মের স্বীকৃতি পেয়েছেন জাতীয় পর্যায়ে। ১৯৯৮ সালে তিনি বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার স্বর্ণপদকপাপ্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ করে সিলেটবাসীর মুখ উজ্জ্বল করেন। ভাষার মাস বিগত ফেব্রুয়ারিতে সিলেট থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর একুশতম গ্রন্থ ‘প্রকৃতি ও পরিবেশ’। ধর্ম-কর্ম, সমাজ সেবা, বই-পুস্তক আর বৃক্ষরাজি নিয়েই ব্যস্ত আছেন তিনি। পারিবারিক পিছুটান নেই, দায়বদ্ধতা নেই। তিনি নিজে সফল ব্যবসায়ী ও তিন পুত্র সন্তানের জনক। তার পুত্রভাগ্যও ঈর্ষণীয়। পুত্রত্রয় উচ্চশিক্ষত ও কর্মজীবনে সু-প্রতিষ্ঠিত। বিবাহিত। প্রিয় সহর্ধমিনী হামনা খানম চৌধুরী দীর্ঘদীন ধরে রোগে শয্যাশায়ী ছিলেন। চলন ও বলন দু‘টোই ছিল না। কেবল ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতেন। নিরবে চোখের পানি বিসর্জন দিতেন। অর্থ-বিত্তে স্বচ্ছল আদর্শ স্বামী আফতাব চৌধুরী প্রিয় পত্নীকে দেশে এবং বিদেশে উন্নততর চিকিৎসা সেবা দেন, বাসায়ও সার্বক্ষণিকভাবে রেখে দেন পেশাদার সেবিকা ও আয়া। সিলেটের প্রবেশমুখ শাহজালাল উপশহরের বাসায় প্রিয় ভাবী হামনা খানম চৌধুরীকে দেখতে, খোঁজখবর নিতে যেতাম মাঝে মধ্যে। গেল বছর (২০১৯) একুশে ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬.১০ মিনিটে তিনি ফুলে-ফলে ভরা চৌধুরী বাড়ি থেকে চলে গেলেন দরগা শরীফ গোরস্তানে। লেখক গ্রন্থখানি যথার্থভাবেই উৎসর্গ করেছেন বেহেশতবাসী পিতা আব্দুস সোবহান চৌধুরী মাতা সৈয়দা আফতাবুন্নেছা এবং সহধর্মিনী হামনা খানম চৌধুরীর নামে। গ্রন্থখানার পাতা উল্টালেই আকর্ষণীয় বোর্ড বাঁধাই করা কভারের ভিতরের পৃষ্ঠায় গ্রন্থকার আফতাব চৌধুরীর ‘খোলা চিঠি’ পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। পাঠান্তে পাঠকদের হৃদয়ে দাগ কাটবে, হৃদয়বান পাঠকদের আবেগে আপ্লুত করবে। প্রেমিক স্বামী আফতাব চৌধুরী আটচল্লিশ লাইনের বাক্যে বাক্যে তার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছেন, আহাজারী করেছেন আকুলভাবে ব্যাকুল হয়ে।

‘প্রকৃতি ও পরিবেশ’ গ্রন্থে প্রাসঙ্গিক রচনা একুশটি। গ্রন্থখানি যথার্থভাবেই একুশময় হয়ে গেছে। সত্যিকার অর্থে আমাদের জাতীয় জীবনে একুশে ফেব্রুয়ারির গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ বায়ান্নোর একুশে শুধু মাত্র ভাষার প্রেমই জড়িত ছিল না। একুশের সঙ্গে জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার ছিল জড়িত। ভাষা আন্দোলনে বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের চেতনার উন্মেষ ঘটিয়েছিল। গ্রন্থের শুরুতে মানবতার স্বার্থেই পরিবেশ সংরক্ষণ প্রয়োজন দিয়ে শুরু করে একুশতম নিবন্ধ যুদ্ধের হাতিয়ার নির্মাণ পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ দিয়ে শেষ হয়েছে। ভিতরে আছে জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য সমস্যা, পরিবেশ সংরক্ষণে দেশীয় গাছপালার অবদান। প্লাস্টিকের আগ্রাসনে বিপন্ন পরিবেশ। পরিবেশ সংরক্ষণে পাখির প্রভাব ও অবদান ইত্যাদি। সুন্দরবন রক্ষা এবং দেশীয় পরিবেশবাদীদের আন্দোলন সম্বন্ধেও সচেতন এই কলম সৈনিক। লিখেছেন সুন্দরবন রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ অপরিহার্য। দেশব্যাপী নদী দখল ও দূষণের বিরুদ্ধেও সোচ্চার এই প্রকৃতিপ্রেমী ও পরিবেশবাদী লেখক। এ ব্যাপারে তাঁর নদী ও জলাাশয় রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন রচনাটি মূল্যবান ও প্রাসঙ্গিক।

বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধিতেও সোচ্চার এই মানবতাবাদী লেখক। পারমাণবিক বর্জ্যরে ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরেছেন তিনি গবেষকের ভাষায়। বন্য পশু-পাখি ও বন্যপ্রাণী প্রসঙ্গে তাঁর আগ্রহের কমতি নেই। তাঁর বক্তব্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও বাঘ-গন্ডারের বংশ বৃদ্ধিতে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। রচনাগুলোতে মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছেন, অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বরাবরের মতো এই গ্রন্থেরও ভাষা সহজ, সরল, সুখপাঠ্য। শ্রেষ্ঠ করদাতা (দীর্ঘমেয়াদী) এবং বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত এই গ্রন্থকার ‘অবদানে অমলিন’ এর মুখবন্ধ লেখক পরিচিতি লেখার সুযোগ হয়েছিল আমার। তাঁর কাছে দাবি ছিল, শুধু প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে একখানা গ্রন্থ লেখার। আমার দাবি পূর্ণ হলো, মোবারকবাদ আফতাব চৌধুরীকে। প্রকাশনা কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ। গ্রন্থখানা প্রকাশ করেছেন ফারহানা খানম চৌধুরী ও ফাহমিদা সুলতানা চৌধুরী (স্বর্ণা)। স্বত্ত্ব-আয়ান ও এলিনা। কম্পিউটার কম্পোজ জুই ও সুমি, এসি এজেন্সিস বনরুপা, মেইন রোড, শাহজালাল উপশহর, সিলেট। গ্রন্থটির বহুল প্রচার কামনা করি।
লেখক: অ্যাডভোকেট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->