Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস : সম্ভাবনা ও বাস্তবতা

ড. মোহা. হাছানাত আলী | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০২০, ১২:০১ এএম

কোভিড-১৯ এর প্রভাবে স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এক চরম সংকটকাল অতিক্রম করছে। করোনা মহামারী থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতে সরকারি ঘোষণা অনুসারে গত ১৮ মার্চ ২০২০ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি এখনও দৃশ্যমান না হওয়ায় ক্লাসরুম তালাবদ্ধ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেবার মতো পরিস্থিতি এখনও সৃষ্টি হয়নি। বরং করোনা পরিস্থিতি দিনদিন আরো নাজুক হচ্ছে। সরকারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেবার মতো ঝুঁকি নিতে চায় না বলেই নতুন করে আগামী ৮ আগস্ট পযর্ন্ত ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে তা ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পযর্ন্ত বলা মুশকিল। তাই ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার মতো পরিস্থিতি দেশে কবে সৃষ্টি হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকার জীবন ও জীবিকা একসাথে চালানোর নীতি অনুসরণ করলেও তার ফলাফল কিন্তু মোটেই সুখকর হয়নি। সামনে কোরবানির ঈদ। সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুরহাট চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা নিয়ে ইতোমধ্যে দেশের জণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। নিকট অতীত কিন্তু মোটেই সুখকর নয়। আমরা শপিংমল, হাট-বাজার, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধির ধার ধারিনি। এখন পশুরহাটে স্বাস্থ্যবিধি মানবো তার নিশ্চয়তা কোথায়? করোনা পরিস্থিতির অবনতি হবার শঙ্কা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খোলার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। তবে কেউ কেউ যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেবার কথা ভাবছেন না তা কিন্তু নয়। তারা যুক্তি হিসেবে উন্নত বিশ্বের অনলাইন শিক্ষার দৃষ্টান্ত উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করছেন। তাদের বিনয়ের সাথে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, তাদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন চোখ ধাঁধানো, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন আকাশছোঁয়া, শিক্ষার্থীদের আর্থিক সামর্থ্য প্রশ্নাতীত। আর আমাদের? ভৌত অবকাঠামো সেকেলে, প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যয়বহুল, অধিকাংশ শিক্ষার্থীর আর্থিক সক্ষমতা অপ্রতুল। আমাদের নীতি নির্ধারকরা মাঝে মাঝে আমাদের দেশকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার সাথে তুলনা করে আত্মতুষ্টিতে ভোগেন। কিন্তু সেটা শুধুমাত্র যে কথার কথা তা তো করোনাকাল আমাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

ইতিমধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে নিজেদের মতো করে অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা গ্রহণ করছে। এক্ষেত্রে ইউজিসি বা সরকারের কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও কার্যকর তদারকি না থাকায় শিক্ষার গুণগত মান কতটা নিশ্চিত করা হচ্ছে সে প্রশ্ন আজ বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। নীতিমালার অভাবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ তাদের পছন্দমত পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করছে। এসব পদ্ধতি শিক্ষার গুণগত মান কতটা নিশ্চিত করছে তা ইউজিসির ভেবে দেখার সময় এসে গেছে। তা নাহলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। এমনিতেই দেশের উচ্চশিক্ষার গুণগত মানের সূচক নিম্নমুখী।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার চাবি এখন করোনার হাতে। আগেই বলেছি যে, দেশের যা অভস্থ্য তা কোনভাবেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রশ্নে অনুকূল নয়। এখন প্রশ্ন হলো, কতদিন তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাখা যাবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ইউজিসি অনলাইনে ক্লাস নেবার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কতটা কার্যকর বা সফল হবে সেটা নির্ভর করছে অনেকগুলো বিষয়ের উপর।

বর্তমানে আমাদের চারপাশে এক অদ্ভুত অনিশ্চয়তা ভর করে বসেছে। খাদ্যের অনিশ্চয়তা, চাকরি থাকা না থাকার অনিশ্চয়তা, সন্তানের পড়ালেখার অনিশ্চিয়তা, চিকিৎসার অনিশ্চিয়তা, করোনায় মৃত্যু হলে দাফন কাফনের অনিশ্চয়তা।

বিজনেস ইনসাইডারের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ১৮৮টি দেশের শিক্ষার্থীরা করোনাকালে সরাসরি ক্ষতির সস্মুখিন হয়েছে। বাধাগ্রস্থ হয়েছে তাদের শিক্ষাজীবন। দেশে দেশে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ। শিক্ষার্থীরা ঘরবন্দি। অবশ্য কিছুকিছু দেশ পরিস্থিতি ভেদে স্কুল-কলেজ খুলে দিতে শুরু করেছে। তবে তা খুবই সীমিত আকারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিকস্তরের শিক্ষা ক্ষেত্রে সংসদ টিভির মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে। মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্যও একইভাবে চালু করা হয়েছে টিভিতে সীমিত আকারে পাঠদান। যদিও ক্লাসের গুণগতমান ও তার কার্যকারিতা নিয়ে দেশের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা- সমালোচনা রয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ও টিভিতে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠদান চালু করেছে, যদিও প্রান্তিক জনপদের প্রতিটি ঘরে টিভি না থাকার বিষয়টি এই উদ্যোগকে ব্যাহত করছে। অন্যের বাসায় গিয়ে ক্লাস করবে সেটাও সম্ভব নয়। আবার যাদের টিভি আছে তাদের সমস্যা ভিন্ন। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে শিশুদের মনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটছে।

আগেই বলেছি বেঁচে থাকার তাগিদে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে সীমিত আকারে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ উদ্যোগ এখনও সেভাবে চোখে পড়েনি। তবে দু’ একটি বিশ্ববিদ্যালয় যে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম সীমিত আকারে শুরু করেনি তা কিন্তু নয়। তবে সে সংখ্যা খুবই সীমিত। কিছু শিক্ষক আবার স্ব-উদ্যোগী হয়ে জুম অ্যাপসের মাধ্যমে ক্লাস নিয়ে তার সচিত্র বিবরণ ফেসবুকে পোস্ট করে অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, যা থেকে জানা যায় যে, ৩৫-৪০% শিক্ষার্থী পূর্বে ঘোষণা দেয়া সত্তে¡ও ক্লাসে অনুপস্থিত থাকছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন? সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরাই তার কারণ নির্ণয় করে বলছেন যে, ইচ্ছে থাকা সত্তে¡ও কেউ কেউ অস্বচ্ছলতার কারণে এমবি/নেট কিনতে না পারা বা কারো কারো তা আবার ক্রয়ের সামর্থ্য থাকলেও ইন্টারনেটের গতি অতিমাত্রায় স্লথ হওয়ার কারণে তারা ক্লাশে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। আবার আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে এন্ড্রয়েড ফোন না থাকাটাও অন্যতম কারণ হিসেবে আলোচনায় এসেছে। এ সংখ্যাটাও নেহায়েত কম নয়।

তা হলে এখন আমাদের করণীয় কী? কতদিনই বা আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা যাবে? কীভাবে এ ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া হবে? এমন হাজারো কিন্তু’র সামনে দাঁড়িয়ে গত ২৫ জুন ইউজিসি দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ভাইস-চ্যান্সেলরদের সাথে এক ভার্চুয়াল সভায় মিলিত হয়ে যে সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছে তা নিঃসন্দেহে সময়োচিত।

তবে দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইনে ক্লাসগ্রহণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কতটা কার্যকর হবে তা হয়ত সময়ই বলে দেবে। তবে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা কীভাবে কার্যকর করা যায় তা এখন সুচারুভাবে নির্ধারণ করাই হবে যুক্তিযুক্ত। আমাদের মতো দেশে অনলাইনে ক্লাশগ্রহণ প্রক্রিয়া যে পুরোপুরি সফল হবে না তা ধরেই নেয়া যায়। কারণ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অধিকাংশ শিক্ষার্থী হয় মধ্যবিত্ত নয় তো নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, যাদের অধিকাংশেরই বাস গ্রামে। করোনা দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের আয়ের উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তাদের আয় কমলেও ব্যয় একই রয়েছে। গ্রামে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং তাদের পক্ষে অতি মূল্যে এমবি/নেট ক্রয় করে নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণ বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনায় সম্ভবপর হবে না। অনলাইনে ক্লাসের ক্ষেত্রে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অপরিহার্য, যা আমাদের দেশে অনুপস্থিত। এদিকে করোনাকালে ভৌতিক বিদ্যুৎ বিল জনমানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। পল্লী বিদ্যুতের অবস্থা তো আরো শোচনীয়।

তবে এতো কিছুর পরও স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করে আমাদেরকে একদিন না একদিন ক্লাসরুমে ফিরতেই হবে।
দেশে করোনা আক্রান্ত মানুষ ও মৃত্যুর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। অপ্রতুল চিকিৎসা সেবা দেশের গোটা স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে চরম হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। স্বাস্থ্যবিভাগের সংস্কার এখন সময়ের দাবি। এর মধ্যে আবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে স্বাস্থ্যবিভাগের দুর্নীতির চিত্র। স্বাস্থ্যবিভাগের ১৪ জন ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অধিকসংখ্যক মানুষকে যখন টেস্টের আওতায় আনার দাবি উঠছে তখন কিট স্বল্পতার অভাবে পরীক্ষা বন্ধ থাকাটা দুঃখজনক। এখন তো দেশে আর অন্যান্য রোগে অসুস্থ রোগীরও চিকিৎসা পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। যাক সেসব কথা।

আজ কিন্তু বেঁচে থাকার জন্য ঘরে থাকাটা খুবই জরুরি। করোনা থেকে মুক্ত থাকার জন্য সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করাটা বিলাসিতা নয়, অবশ্যপালনীয় কাজ। এখনও করোনা ভ্যাকসিন নাগালের বাইরে। কবে তা পাওয়া যাবে তাও নিশ্চিত নয়। এমন এক জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গোটা বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থা। বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও নাজুক। ইচ্ছে থাকলেও ভৌত ও প্রযুক্তিগত অবকাঠামোর অপ্রতুলতার কারণে হয়ত অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষার সুফল পাওয়া এখনই সম্ভবপর হবে না। তবে শুরুটা হতে হবে বিজ্ঞানসম্মত ও বাস্তবভিত্তিক। তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে তাদের আর্থিক, প্রযুক্তি ও অবকাঠামোগত সক্ষমতা ও অক্ষমতার বিষয়গুলো চুলচেরা বিশ্লেষণ করে এগুতে হবে। বিজ্ঞান, বাণিজ্য, চিকিৎসা ও প্রকৌশল শিক্ষার অধিকাংশ বিষয়ে ব্যবহারিক ক্লাস রয়েছে। সেসব কিন্তু অনলাইনে সম্ভবপর হবে না। এসব প্রশ্নের সমাধান কী হবে তাও নির্ধারণ করতে হবে যুক্তিসঙ্গতভাবে।

এমন এক জটিল পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় কি সেটা সুচারুভাবে নির্ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মোদ্দাকথা ইউজিসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে অনলাইন ক্লাসে যেতে হবে। তবে সেক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করে শুরু করা গেলে দেশের জন্য কল্যাণজনক বলেই বিবেচিত হবে।

এক. প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের প্রযুক্তি ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন করে অনলাইন ক্লাসের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে, যাতে করে অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষাসমূহ গ্রহণ করা সংশ্লিষ্ট সবার কাছে সহজবোধ্য হয়। এক্ষেত্রে প্রয়োজন মতে, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে, যাতে প্রক্রিয়াটি টেকসই হয়।

দুই. অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদেরকে বিনা পয়সায় ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে এসংক্রান্ত চুক্তি সম্পাদন করতে পারে। যারা একেবারেই অস্বচ্ছল তাদেরকে প্রয়োজনমতে এন্ড্রয়েড মোবাইল সেট সরবরাহ করতে হবে।
তিন. ইন্টারনেট এখন আর কোনো বিলাসি সেবা নয়, অতি প্রয়োজনীয় সেবা। তাই ইন্টারনেটের শুল্কহার নিম্নতম পর্যায়ে নিরূপণ করা যুক্তিযুক্ত হবে।

চার. দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযুক্তিগত ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য চাহিদামত অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে।

পাঁচ. সহজ শর্তে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরকারিভাবে উৎপাদিত ‘দোয়েল’ ল্যাপটপ বিতরণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।

আমাদের দেশে শিক্ষিতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে সঠিক কিন্তু শিক্ষারগুণগত মান হয়েছে নিম্নমুখী। তাই শটকাট কোনো পদ্ধতি অবলম্বন না করে ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাটাই হবে যুক্তিযুক্ত। আবেগ নয়, তথ্য-উপাত্ত ও বাস্তবতার নিরিখে আমাদেরকে এযাত্রায় অগ্রসর হতে হবে। নিতে হবে বাস্তবায়নযোগ্য ও বাস্ববভিত্তিক সিদ্ধান্ত।
দেশের বাস্তব আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করেই বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে অনলাইনে ক্লাস গ্রহণের কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। তাড়াহুড়ো করার কোনই দরকার নেই। জাতিও এমনটাই আশা করে।
লেখক: প্রফেসর আইবিএ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন