Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নতুন বাজেট লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষার

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় রুমিন ফারহানা প্রত্যাখ্যান বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০২০, ১২:০৩ এএম

বিএনপির সংরক্ষিত আসনের এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, নতুন অর্থবছরের বাজেট লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষার। দেশের চরম ক্রান্তিকালে অন্যসব বাজেটের মতোই এবারও লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য বাজেট দেয়া হয়েছে। যেখানে রাখা হয়েছে কালো টাকা সাদা করার সহজ সুযোগ, ঋণখেলাপিদের পুনরায় খেলাপি হওয়ার সুযোগ, বিদ্যুৎ না কিনেও কুইক-রেন্টালে বরাদ্দ, গরিবের ব্যবহার্য জিনিসে কর বৃদ্ধি এবং ধনীদের কমানো, অকল্পনীয় রাজস্ব আদায়ের টার্গেট। দলের পক্ষ থেকে এই বাজেট প্রত্যাখানের ঘোষণা দেন তিনি। গতকাল জাতীয় সংসদের মূল গেটের সামনে বাজেট প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রুমিন ফারহানা বলেন, এই বাজেট করোনার সময় বিভৎস স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়া মানুষের নাভিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে, বেকার হয়ে পড়া কোটি কোটি অনাহারি মানুষকে দুর্ভীক্ষের দিকে ঠেলে দেয়ার বাজেট। নতুন বাজেট কৃষিকে ধ্বংস করে খাদ্য ব্যবস্থাকে ঝুঁকিপূর্ণ করার, অর্থনীতিতে পুনরুদ্ধার না করে গভীর মন্দায় ফেলে দেয়ার, বেকারত্ব তৈরির, গরিবের সুবিধা কমিয়ে ধনীদের সুবিধা বাড়ানোর, অর্থনৈতিক বৈষম্য তৈরির, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটকারীদের আরও বেশি সুযোগ তৈরি করার বাজেট। এজন্য এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করছি।

তিনি বলেন, ১০ শতাংশ করে কালো টাকা সাদা করা যাবে, ব্যাংকেও রাখা যাবে এবং এই টাকার উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা যাবে না। অন্যদিকে সৎ করদাতাকে ৩০ শতাংশ কর দিতে হয়। ফলে বাজেট মানুষকে অসৎ হতে উৎসাহিত করবে। ঋণ খেলাপিদের ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ রাখা হয়েছে। বাজেটে কুইক-রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এক ওয়াট বিদ্যুৎ না কিনেও গত ১০ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ৫২ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। আবারও বরাদ্দ রয়েছে। অথচ ভর্তুকির অজুহাতে পাটকল বন্ধ করে দিচ্ছে সরকার। তেলের দাম কমানো হয়নি। বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য কোন উদ্যোগ নেই। মোবাইল সেবার ওপর কর বাড়ানো হয়েছে আর কমানো হয়েছে ধনীদের ব্যবহার্য স্বর্ণে। অকল্পনীয় রাজস্ব আদায়ের টার্গেট করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ ঘাটতি রয়েছে।

তিনি বলেন, এমনিতেই চরম লুটপাটে দেশের অর্থনীতি প্রায় ধ্বংসের কিনারায়। ২০১৯ সালে রেমিট্যান্স আসা ছাড়া অর্থনীতির বাকী সূচক যেমন- রফতানি আয়, আমদানি (মূলধনের যন্ত্রপাতি), বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ, বেসরকারি বিনিয়োগ কমে গেছে। ভেঙে পড়া অর্থনীতির সাথে যুক্ত হয়েছে করোনার ভয়ঙ্কর অভিঘাত। এমন পরিস্থিতিতে যেমন বাজেট দেয়া উচিত ছিল তা না দিয়ে কল্পনাবিলাসী বাজেট দেয়া হয়েছে। বিএনপি ৩ বছরের মধ্যমেয়াদী বাজেট দেয়ার আহŸান জানিয়েছিল এবং একটি রূপরেখা দিয়েছিল। সরকার চরম কর্তৃত্ববাদী চরিত্র বজায় রেখে বিএনপির পরামর্শ আমলে নেয়নি। যে বাজেট দেয়া হয়েছে সেটিকে ক্ষমতাসীনরা ছাড়া আর কেউ সঙ্কটকালীন বাজেট বলে মনে করে না। এই বাজেট মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্কট মোকাবেলায় আদৌও সক্ষম নয়। ফলে আগামীদিনে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে নিশ্চিত।

জিএম সিরাজ এমপি বলেন, বাজেট পাস হয়েছে, জনগণকে ফাঁকি দেয়ার জন্য, বিরোধীদল যেনো সমালোচনা করতে না পারি এজন্য মাত্র ১দিনের জন্য সাধারণ বাজেট আলোচনা হয়। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন আলোচনাবিহীন বাজেট কখনো পাস হয়নি। জনগণের পক্ষে বাজেট প্রত্যাখ্যান করছি। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন হারুনুর রশিদ এমপি। উপস্থিত ছিলেন মোশাররফ হোসেন এমপি, আমিনুল ইসলাম এমপি ও বিএনপি চেয়াপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ