পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চীন ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোর এখন প্রধান খবর। এর মধ্যেই বাংলাদেশের ৫ হাজারেরও বেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে চীন। বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের ভূমিকা অপরিসীম। প্রশ্ন হচ্ছে দেশি-আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো চীন-ভারতের মুখোমুখিকে কীভাবে দেখছে? বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো বিদেশীদের সঙ্গে বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে উন্নয়নকে প্রাধান্য দেন; নাকি ক্ষমতায় যাওয়াকে প্রাধান্য দেন? চীন ও ভারতের বর্তমানের মুখোমুখি অবস্থায় আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান কী?
চীন-বাংলাদেশ মৈত্রীর ইতিহাস দীর্ঘ। গত শতাব্দীর পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে তৎকালীন চীনা প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই দুবার বাংলাদেশ সফর করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দু’বার চীন সফরে যান। প্রথম ক্ষমতাসীন বিএনপি তথা জিয়াউর রহমানের শাসনামলে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ক‚টনৈতিক সম্পর্ক শুরু হয়। জিয়াউর রহমান চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে পেরেছিলেন বলেই বিশ্ব রাজনীতির টানাপোড়েনের মধ্যে বাংলাদেশের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে চীন এখনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
চীনারা বলে থাকেন ‘মনের মিল থাকলেই কেবল দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব হতে পারে।’ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকেই চীন বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু, উন্নয়নের অংশীদার। পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে দেশের বড় বড় প্রকল্পগুলোতে চীন সহায়তা করছে। বিশ্ব রাজনীতিতে চীন এখন অন্যতম ক্ষমতাধর শক্তি। অর্থনীতি ও রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টক্কর দিচ্ছে। তারপরও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে রেখেছে। সেই চীনের প্রতি জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি কী? আর হঠাৎ করে দিল্লির প্রতি বিএনপির এতো নতজানু চেতনার রহস্যই বা কী?
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সবার জানা। দেশটি সব সময় আমাদের সঙ্গে আগ্রাসী নীতি গ্রহণ করেছে। ভারতের সঙ্গে অন্য যেসব দেশের সীমান্ত রয়েছে সে সব দেশের কোনোটির সঙ্গে পেরে ওঠে না। নেপালের মতো দেশও ভারতকে নাস্তানাবুদ করে। কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যাকান্ড নিয়মিত চালাচ্ছে দেশটির সীমান্তরক্ষীরা, আমাদের জাতীয়তাবাদী নেতারা নীরব! এছাড়াও দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে বাংলাদেশের কাছ থেকে ভারত সুবিধা নিচ্ছে কিন্তু দিচ্ছে না কিছুই। অনেক নেতা মনে করেন দিল্লি যাদের ওপর ছাতা ধরে বাংলাদেশে তারাই ক্ষমতায় যায়। বিএনপি কি ভারতের সহায়তায় ক্ষমতায় যাওয়ার কৌশল নিয়েছে? চীন-ভারত প্রশ্নে বিএনপির অবস্থান কী? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক চলছে।
জাতীয়তাবাদী রাজনীতির কারণে চীনের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক সব সময় ভালই ছিল। কিন্তু ২০০৩ সালের দিকে তৎকালীন বিএনপি সরকারের অদূরদর্শী বাজিণ্যমন্ত্রীর কান্ডজ্ঞানহীন সিদ্ধান্তের কারণে চীন বিএনপির প্রতি কিছুটা নাখোশ হয়। দেড়শো কোটি লোকের চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের চেয়ে কয়েক লাখ লোকের বসবাসরত তাইওয়ানকে অধিক বাণিজ্যিক গুরুত্ব দেয়া হয়। তারপরও চীন সব সময় বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী পরমবন্ধু। এখনো উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
দেশের উন্নয়নে চীনের গুরুত্ব বাড়লেও গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভারত তোষণনীতির প্রতিযোগিতা চলছে। বড় দলগুলো মনে করছে দেশের জনগণ নয় ভারতের দিল্লিই তাদের ক্ষমতা উৎস! ভারত যে দলের উপর ছাতা ধরবে সে দল নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাবে-থাকবে। এ কারণে কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে ছোট-বড়, ডানবাম-মধ্যপন্থী সব রাজনৈতিক দল নরেন্দ্র মোদিকে খুশি করতে ব্যতিব্যস্ত।
অপ্রিয় হলেও সত্য যে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ‘ভারতপ্রীতির দল’ হিসেবে প্রচারণা রয়েছে। গত কয়েক বছরে দলটির কয়েকজন নেতা দিল্লি সফরের সময় সেটা স্বীকারও করেছেন। কিন্তু জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী বিএনপি? মাঝে মাঝে দেখা যায়, বিএনপির কিছু নেতা ভারতকে খুশি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপি বেশি ভারতপ্রেমি প্রমাণের চেষ্টা করেন। দিল্লি অখুশি হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকেন।
বর্তমানে চীন-ভারতের মুখোমুখি অবস্থান বিশ্ব রাজনীতিকে নাড়া দিয়েছে। এ অবস্থায় দুই দেশ নিজেদের শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন। আওয়ামী লীগকে ভারতের সমর্থক হিসেবে মনে করা হলেও চীন-ভারতের সীমান্তের খুনাখুনি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলটি নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে। সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এম আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘ভারত ও চীন বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, দুই দেশের শান্তিপূর্ণ সহবস্থান চাই’। কিন্তু বিএনপি নীরব! দিল্লি অখুশি হবে সেই ভয়েই কি বিএনপি নীরবতা পালন করছে? বিএনপি জোটের শরীক ২০ দলের অবস্থান কী? শোনা যায়, শরীক দলগুলো যাতে ভারতের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে না পারেন সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া হয়। এটা কেমন জাতীয়তাবাদের রাজনীতি?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।