বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সুপার সাইক্লোন আম্পানের আঘাতে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আম চাষিদের দাবি এ ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ৪শ কোটি টাকার বেশি হবে। তবে কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁয় যে পরিমাণ আম ঝরে পড়েছে তার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় তিনশো কোটি টাকা। এসব জেলার বাইরে সাতক্ষীরায় আমের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ওই আমের ক্ষতি ১০০ কোটি টাকা হবে।
রাজশাহী অঞ্চলে আম বাগান রয়েছে ষাট হাজার হেক্টরের বেশি। আম উৎপাদন হয় সাত থেকে আট লাখ মেট্রিক টন। প্রতি বছর দেশে বাণিজ্য হয় কয়েক হাজার কোটি টাকা। চাপাইনবাবগঞ্জের কানসাট আম বাজার এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় আমের বাজার। ওই বাজারে প্রতিদিন লেনদেন চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা। আম্পানে ২০ ভাগের বেশি আমের ক্ষতি হয়েছে। সে হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ চারশ কোটির বেশি বলে চাষিরা বলছেন। সাতক্ষীরায় ৪,১১০ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদনের লক্ষমাত্র ধরা হয়েছিল ৪০ হাজার মেট্রিক টন। চাষীরা আম পাড়া শুরু করবে এমুহূর্তে আম্পান সব কিছু লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। সাতক্ষীরায় অর্ধেকেরও বেশি আম ঝরে পড়েছে। চাষীদের দাবী তাতে ৫০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে।
ঘ‚র্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে রাজশাহী জেলায় আমের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১২০ কোটি টাকার । আম্পানে জেলাজুড়ে ক্ষয়ক্ষতির পুরো চিত্র জেলা প্রশাসন দুর্যোগ ও ত্রাণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এতে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আমচাষিরা। সর্বনি¤œ দর ধরে হিসাব করলেও প্রায় ১২০ কোটি টাকার আমের ক্ষতি হয়েছে।
রাজশাহী কৃষি বিভাগ স‚ত্র জানায়, বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের বাগানগুলোতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে বহু গাছ উপড়ে পড়ে ডালপালা ভেঙে গেছে। আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আম্পানের তাÐবের পর আবার কালবৈশাখীর আঘাতে আমের বিরাট একটা অংশ ঝরে যায়। এ অবস্থায় আম বাগানের মালিকরা বলছেন, তারা এমনিতেই করোনাভাইরাসের কারণে আম বাজারজাতকরণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। তার ওপর একের পর এক ঝড়ের তাÐব তাদেরকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করে দিয়েছে। এ ক্ষতি কিভাবে কাটিয়ে উঠবে তা তারা জানে না।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে চাঁপাইনাববগঞ্জে ৩৩ হাজার ৩৫ হেক্টর জমির আম ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষষকরা বলছেন ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ২৫ ভাগ আম গাছ থেকে ঝরে গেছে আম। আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাষিরা এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে তারা শঙ্কায় আছেন। আম ব্যবসায়ী মুখলেসুর রহমান বলছেন, আম্পানের তান্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। আর এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, আম্পান ঘুর্ণিঝড়ে আম বাগানগুলো থেকে পাঁচ-ছয় ভাগ আম ঝরেছে, যার ক্ষতির পরিমান প্রায় আড়াই কোটি টাকা। তবে চাষিদের দাবি আম গাছের প্রায় ২০ভাগ আম আম্পানের আঘাতে ঝরে পড়েছে। এতে ক্ষতি ৫ কোটি টাকার বেশি হবে।
ঘ‚র্ণিঝড় আম্পানে নওগাঁয় আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আম চাষিরা বলছেন, ঝড়ে আম গাছের প্রায় ৫০ শতাংশ আম ঝরে গেছে। এতে ক্ষতি প্রায় শত কোটি টাকা। নওগাঁ কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর স‚ত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ২১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ ১ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন আম ঝরে পড়েছে। ভরা মৌসুমে আমের দাম ৪০ টাকা কেজি ধরলে এর দাম প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।
আম্পানের আঘাতে চুয়াডাঙ্গায় আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর স‚ত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এতে ২৯ হাজার ৭০০ মেট্রিকটন আম ফলনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিল। যার বাজার মূল্য ৮৯ কোটি ১০ লাখ টাকা। তবে আম্পানের আঘাতে ১০ হাজার ৫৮৪ মেট্রিকটন আমের ক্ষতি হয়েছে। যার মূল্য ৩১ কোটি ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা।
আম চাষী জাহাঙ্গীর বলেন, চুয়াডাঙ্গায় আম্পান ও কাল বৈশাখী ঝড়ে প্রচুর আম, গাছ থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। এতে আমরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছি। অবশিষ্ট যে আম গাছে আছে, তাও সঠিকভাবে বাজারজাত করতে পারবো কিনা তা নিয়ে চিন্তায় আছি। তিনি বলেন তাদের এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।