পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে এ ঝড়ের তাÐবে সুন্দরবনের অনেক ক্ষতি হয়েছে। জলোচ্ছ¡াসের ফলে উপক‚লীয় অঞ্চলে বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ২৩ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে অনেক এলাকা। খুলনা ও বাগেরহাটে ৫৪ হাজারের বেশি চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে। বাঁধ ভেঙে যেসব এলাকায় লবণাক্ত পানি ঢুকেছে সেসব এলাকায় আগামী দু’তিন বছর ফসল হবে না। বৃষ্টির পানিতে এ লবনাক্ততা দূর হতে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগবে। এর আগে আইলায় বাঁধ ভেঙে প্লাবিত এলাকা চার পাঁচ বছর পর ফসলের উপযোগী হয়েছে।
পানিসম্পদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন, আইলা কিংবা সিডরের পর ভাঙা বেড়িবাঁধ দ্রæত মেরামত করতে দেখা যায়নি। জোয়ারের পানি ঢুকে ফসলি জমি লবনাক্ত করেছে। এসব জমিতে চার পাঁচ বছর ফসল হয়নি। স্থানীয় জনগণের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এবারও উপক‚লে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দ্রæত মেরামত করতে না পারলে পরিবেশ বিপর্যয় ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় সুন্দরবন আবার প্রমাণ করেছে এটি যেমন বাংলাদেশের জীববৈচিত্রের সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল, তেমনি আমাদের প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ। আম্পানের কারণে সুন্দরবনের এবারও বেশ ক্ষতি হয়েছে। বন বিভাগের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলার মতো এবারও সুন্দরবনের মিষ্টি পানির উৎস ৬৫টি পুকুর, বন বিভাগের ১৮টি টিনের তৈরি ফাঁড়ি, ২৮টি জেটিসহ অন্যান্য অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া কেওড়াসহ বিভিন্ন গাছও ভেঙে পড়েছে। সুন্দরবনের সাতক্ষীরা ও খুলনা এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। মোট ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে চার সদস্যের কমিটিও করেছে বন বিভাগ।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবন না থাকলে কলকাতা শহরে ঘূর্ণিঝড় আম্পান যেমন তাÐব চালিয়েছে, একই রকম অবস্থা হতো বাংলাদেশেও। এ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ৭০ এবং বাংলাদেশে ২৫ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় ঢাকায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭২ কিলোমিটার, আর কলকাতায় ছিল ১১২ কিলোমিটার। যদি সুন্দরবন না থাকতো তাহলে ঢাকাতেও ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিবেগে ঝড় হতো। আর এতে ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানি আরও বৃদ্ধি পেত। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের গতি অন্তত ৭০ কিলোমিটার কমিয়েছে সুন্দরবন। জলোচ্ছ¡াসের উচ্চতাও ৩ থেকে ৪ ফুট কমিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই শ্বাসমূলীয় বন। এতে ঝড়ে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে আরও অনেক বেশি ক্ষতির হাত থেকে উপক‚লের মানুষ ও সম্পদ রক্ষা পেয়েছে।
পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন জানান, আম্পানে সুন্দরবনসহ সার্বিক পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে চারটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে সহকারী বন সংরক্ষক পদাধিকারী রেঞ্জ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে চার কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিগুলোকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
মন্ত্রী জানান, সুন্দরবনের ক্ষতিগ্রস্ত অথবা ভেঙে যাওয়া গাছপালা অপসারণ করা হবে না। নিজস্ব প্রাকৃতিক ক্ষমতাবলেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে বন। শুধু ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামোগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে। পুকুরগুলোর লবণাক্ত পানি অপসারণ করা হবে, ব্যবহার উপযোগী করা হবে। প্রয়োজনে নতুন করে কিছু পুকুর খননের ব্যবস্থা করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।