Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আমফানে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি, রক্ষার উদ্যোগ নেই

আমফানে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি, রক্ষার উদ্যোগ নেই রফিক মুহাম্মদ | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০২০, ১:১৬ পিএম

সুন্দরবন বাংলাদেশের পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের আধার। সুন্দরবন নিজের বুক পেতে দিয়ে বিভিন্ন সময় ভয়াবহ সাইক্লোন-ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করছে। অথচ এই সুন্দরবনকে রক্ষার কোন সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নেই। এক শ্রেণীর অসাধু বন কর্মকর্তাদের যোগসাজসে সুন্দরবন ভিতরে গাছ কেটে উজার করা হচ্ছে। এ ছাড়া উন্নয়ন পরিকল্পনার নামে সুন্দরবনের চারপাশে গড়ে তোলা হচ্ছে ধ্বংসকারী বিভিন্ন প্রকল্প।
পরিবেশবিদরা বলছেন, সুন্দরবনের ক্ষতি করে আমরা নিজেদেরই বড় ক্ষতি করছি। গত কয়েক বছর আইলা, সিডর, বুলবুল এবং আমফানের মতো ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের কবল থেকে মায়ের মতো নিজের বুক পেতে দিয়ে সুন্দরবন বাংলাদেশকে রক্ষা করেছে। পরিবেশবাদীরা প্রতিনিয়ত চিৎকার করে এর প্রতিবাদ করলেও তাদের কথা কানেই তোলা হচ্ছে না।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, সুন্দরবন দেশের প্রকৃতি ও জীববৈচিত্রে একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন। এই বন প্রতিবারই নিজে বুক পেতে ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে দেশকে রক্ষা করছে। তাই দেশকে বাঁচাতে হলে সুন্দরবনকে অবশ্যই বাঁচাতে হবে। উন্নয়নের নামে এ বনের আশপাশে যে সব প্রকল্প হচ্ছে সে গুলো বনকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তাই এসব প্রকল্প নিয়ে অবশ্যই নতুন করে ভাবা উচিত।
বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন এবারও সুপার সাইক্লোন আমফানের আঘাত নিজের বুক পেতে প্রতিরোধ করেছে। আর তাতে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর এই ক্ষতির পরিমাণ ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের থেকে ৩ গুণ বেশি। আমফানের আঘাতে সুন্দরবনে গাছ ভেঙ্গেছে ১২ হাজার ৩৫৮টি। আর বন বিভাগের অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২ কোটি ১৫ লাখ টাকার। ঘূর্ণিঝড় আমফানের আঘাতের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে বন বিভাগের গঠিত ৪টি কমিটির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আমফানের আঘাতে পশ্চিম সুন্দরবনের ২টি রেঞ্জ এলাকায় ১২ হাজার ৩৩২টি গাছ ভেঙে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এ সব গাছের মধ্যে গরান গাছের সংখ্যা বেশি। যার মূল্য ১০ লাখ ১০ হাজার ৫৬০ টাকা। আর পূর্ব সুন্দরবনের ২টি রেঞ্জ এলাকায় ২৬টি গাছ ভেঙেছে। এ বিভাগের আওতায় জব্দ থাকা বেশ কিছু কাঠ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। এতে আর্থিক ক্ষতি ৭ লাখ ৬ হাজার ৮৩০ টাকা। পাশাপাশি পূর্ব বনবিভাগে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকার অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া স্থাপনা, জেটি, উডেন ট্রেইল, ওয়াচ টাওয়ার ও অবকাঠামোর ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে বাঘ, হরিণসহ অন্য কোনও বন্যপ্রাণীর ক্ষতি হয়নি। পরিবেশবাদীদের ধারণা, এসব প্রাণী প্রকৃতি প্রদত্ত ক্ষমতায় ঝড়ের বিষয়টি বুঝতে পেরে নিজেদের মতো আত্মরক্ষা করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আমফান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ