পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে রাজশাহী অঞ্চলে ঝরেছে আম। শুয়ে পড়েছে ধান। আর ক’দিন পরেই আমগুলো বাজারে আসতো। ধান কাটাও চলছিল। সে ধান ঘরে ওঠার আগেই ঝড়ো হাওয়ায় শুয়ে গেল। রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, আম ঝরেছে ২০ শতাংশ।
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, আম ঝরে গেলে তো ফলন কমবেই। এখন চাষিরা যদি আমের ভালো দাম না পান তাহলে হয়তো এবার তারা ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই আমের যেন সঠিক মূল্য পাওয়া যায় তার জন্য যা যা করা দরকার আমাদের করতে হবে।
এদিকে গাছের আম ঝরে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের। তারা বলছেন, এবার এমনিতেই আমের ফলন কম। করোনায় দাম নিয়েই ছিল অনিশ্চয়তা, তার ওপর ঝড়ে আম ঝরে পড়ায় ফলনও কমে গেল। এদিকে লকডাউনের কারণে আম কেনার ক্রেতাও নেই। বাঘা উপজেলার বাউসা গ্রামের আমচাষি ফরিদুল ইসলাম বলেন, বাগানে ঢিলের মতো আম পড়ে আছে। তারা কুড়াচ্ছেন। আচারের জন্য দুই থেকে পাঁচ টাকা কেজি দরে এসব আম বিক্রি করতে হবে। আর কয়টা দিন গেলেই এসব আম পরিপক্ক হয়ে যেত। এখন বাগানের ফলন কমে যাবে। আমে এবার লাভ হবে না।
ঝড়ে আমের ক্ষতি হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও নাটোরে। এখানকার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারা মাঠ পর্যায়ে ক্ষতির পরিমাণ ক্ষতিয়ে দেখছেন। এবার রাজশাহীতেই আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ছিল ২ লাখ ১০ মে. টন।
রাজশাহী অঞ্চলে আমের বাগান রয়েছে ৬০ হাজার হেক্টরের বেশি। আর আম উৎপাদন হয় আট থেকে দশ মে. টন। বাণিজ্য হয় কয়েক হাজার কোটি টাকা। এবারও স্বপ্ন ছিল লকডাউনের সাথে সাথে ঘূর্ণিঝড় আম্পান চাষীদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেললো।
কৃষি বিভাগের এ কর্মকর্তা জানান, ঝড়ে রাজশাহীর অন্য কোনো ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি। মাঠে পাকা ধান আছে। সেগুলো মাটিতে শুয়ে গেছে। তবে ধান পেকে যাওয়ায় চাষিরা তা এখন কেটে নেবেন। তাই ধানের ক্ষতি হবে না। তবে কিছু ধান ঝরে যেতে পারে। মাঠের সবজির কোনো ক্ষতি হবে না।
ঝরা আমের ক্রেতা নেই, মাথায় হাত চাষিদের
স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা থেকে জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডবে সাতক্ষীরা জেলায় আমচাষিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে গাছের আম ঝরে পড়েছে। অনেক গাছ উপড়ে পড়েছে। তবে এসব আমের কোনো ক্রেতা মিলছে না। করোনার সাথে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে মহাবিপর্যয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
তালার সুজনশাহ গ্রামের এক কৃষক জানান, ঘূর্ণিঝড়ে তার ২-৩ লাখ টাকার আম ঝরে পড়েছে। সেই সঙ্গে ঝরে পড়েছে লক্ষাধিক টাকার লিচুও। এই কৃষক বলেন, ‘বুধবার রাতের ঝড়ে গাছের সব আম ঝরে গেছে। ২-৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঝরে পড়া আমের কোনো ক্রেতাও নেই। এসব আম নিয়ে কী করব বুঝতে পারছি না। আম বিক্রির টাকাতেই আমাদের বছরের সংসারের খরচ চলে।’
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে লিচু গাছের জন্য এক ব্যবসায়ী ৫০ হাজার টাকা দাম বলেছিল, কিন্তু তিনি বিক্রি করেননি। তিনি বলেন, ভেবেছিলাম আরও বেশি দামে লিচু গাছটি বিক্রি করব। তবে ঝড়ে আম ও লিচু দুটোরই ক্ষতি হয়ে গেল। একটি ঘরও ধসে পড়েছে।’
সাতক্ষীরা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ি থেকে জানা গেছে, জেলায় আম চাষি রয়েছে ১৩ হাজার ১০০ জন। চলতি মৌসুমে ৫ হাজার ২৯৯টি বাগানে ৪ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হিমসাগর এক হাজার ৫৫০ হেক্টর, ল্যাংড়া ৫৬৪ হেক্টর, আম্রপালি ৮৯৯ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। বাকি জমিতে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, লতাসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির আম রয়েছে।
সাতক্ষীরা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ির উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় দুই হাজার ২৭ হেক্টর জমির আমের ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ১৬ হাজার ২৯৬ মেট্রিক টন আমের ক্ষতি হয়েছে। আমগুলো সব ঝরে পড়েছে। আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। কয়েকদিন পরই আম বাজারজাতের উপযুক্ত হতো। সেই মুহ‚র্তে ঝড়টি আম ব্যবসায়ী ও চাষিদের কপালে হাত তুলে দিল। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা পাঠাচ্ছি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।