পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কারামুক্ত হয়েই করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দলীয় প্রধানের নির্দেশ ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ২৬ মার্চ থেকেই সারাদেশে অসহায়, দিনমজুর, খেটে খাওয়া-কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেন তারা। এর মাধ্যমে ১৭ মে পর্যন্ত সারাদেশে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ৩১ লাখেরও বেশি পরিবারের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিয়েছেন। বিগত সময়ে ক্ষমতার ভাগিদার বা সুবিধাভোগী নয় এবং সাবেক ছাত্রনেতাদের একটি বড় অংশই এই ক্রান্তিকালে, দুর্যোগের সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। তরুণ নেতারা নিজের পকেটের টাকা খরচ করে কেউবা ফান্ড গঠন করে চালিয়ে যাচ্ছেন সহযোগিতার কাজ।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ২৬ মার্চ থেকে ১৭ মে পর্যন্ত দলটির পক্ষ থেকে ৩১ লাখ ২৭ হাজার ৬৯৩টি পরিবারের ১ কোটি ২৫ লাখ ১০ হাজার ৭৭২জন মানুষের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। এর মধ্যে রংপুর বিভাগে ১ লাখ ৪ হাজার ৪৩৭, রাজশাহীতে ২ লাখ ৫২ হাজার ৯০০, খুলনায় ২ লাখ ২৭ হাজার ২০০, ঢাকা ৫ লাখ ৬০ হাজার ২৫০, ময়মনসিংহে ১ লাখ ২৪ হাজার, ফরিদপুরে ২৭ হাজার ৬২৫, বরিশালে ৬৪ হাজার ৫০০, সিলেটে ১ লাখ ২১ হাজার ২৫০, কুমিল্লা ২ লাখ ৯৭ হাজার ২৫০, চট্টগ্রামে ৫ লাখ ৫০ হাজার ১০০ পরিবারের হাতে বিএনপি খাদ্যসামগ্রী তুলে দিয়েছে। এছাড়া যুবদল সারাদেশে ২ লাখ ৩০ হাজার ৭০২টি পরিবারে, স্বেচ্ছাসেবক দল ১ লাখ ৬৫ হাজার ৭৩০, ছাত্রদল ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬২ এবং মৎসজীবী দল ৩১ হাজার ৮৮৭ পরিবারের কাছে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছে। এরবাইরে ছাত্রদল ৩ লাখ ৫০ হাজার ২৩০টি মাস্ক, ২ লাখ ৭০ হাজার ৩২৫টি সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেছে।
করোনা সঙ্কটের শুরু থেকেই বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদকে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেছেন। লিফলেট বিতরণ, মাস্ক-স্যানিটাইজার বিতরণ কিংবা ত্রাণ সামাগ্রী সবই করছেন রাজধানীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে গিয়ে। অন্য নেতারা যখন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না, তখন তিনি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও রাজশাহী, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন এলাকায় ছুটি যাচ্ছেন, দাঁড়াচ্ছেন অসহায় মানুষের পাশে।
রাজধানীতে এবার ত্রাণ বিতরণে সবার দৃষ্টি কেড়েছেন দক্ষিণের নির্বাচনে বিএনপির মেয়ার প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। শুরু থেকেই তিনি নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসহায়, বস্তিবাসী, দরিদ্র মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। বাবার নামে গঠিত ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেও অর্থ সহায়তা নিয়ে দিন-রাত ছুটছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। গতকাল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১২ হাজার পরিবারে ত্রাণ বিতরণ করেছেন ইশরাক। এজন্য ইতোমধ্যে মানুষ তাকে জনতার মেয়র হিসেবেও আখ্যা দিয়েছে।
এছাড়াও রাজধানীতে নিয়মিতই ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছেন উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক পল্লবী ও রূপনগর থানায় এক হাজারের বেশি পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী ও নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। ঢাকা জেলায় ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায়, ঢাকা জেলার সভাপতি দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন বাবু, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক।
ঢাকার বাইরে সাবেক ছাত্র ও খুলনা-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী নেতা রকিবুল ইসলাম বকুল খুলনা মহানগরের ১৫টি ওয়ার্ডে ৬ হাজার পরিবারের কাছে উপহার সামগ্রী, খাদ্য, ইফতার, কাঁচা সবজী পাঠিয়েছেন। যতদিন করোনা পরিস্থিতি থাকবে ততদিন তিনি তার এলাকাবাসীর কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার কথা জানিয়েছেন। ময়মনসিংহের নান্দাইলে বিগত সময়ের ক্ষমতাভোগী নেতারা যখন এই দুঃসময়ে নিরব, নিশ্চুপ তখন মালয়েশিয়া বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা মামুন বিন আব্দুল মান্নান ৫ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী ও ঈদ উপহার তুলে দিয়েছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের জানিয়ে দিয়েছেন যে কোন পরিবারের খাদ্যসামগ্রী প্রয়োজন হলে তাকে জানানো মাত্রই পৌঁছে যাবে ঘরে ঘরে। স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝিনাইদহ-৪ আসনের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ৯ হাজার পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিয়েছে। ৫ হাজার মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ, তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার ও নগদ অর্থ প্রদান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা উপকরণ প্রদান করেছেন তিনি। সাবেক ছাত্রদল নেত্রী বিথীকা বিনতে হোসাইনের প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অর্পন বাংলাদেশ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায় দুঃস্থ, অসহায় নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। এই দুর্যোগকালে ঝিনাইদহের মহেশপুরের ১২টি ইউনিয়নে অসহায় পরিবারের কাছে ত্রাণ সামগ্রী ও ঈদ উপহার পৌঁছে দিয়েছে অর্পন বাংলাদেশ।
মহামারীকালে অসচ্ছল দলীয় নেতাকর্মী ও কর্মহীন সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি গোলাম সরোয়ার। সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের অসহায়, দরিদ্র পাঁচ শতাধিক পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী ও নগদ টাকা বিতরণ করেছেন এই নেতা। ঈদের আগেরদিন পর্যন্ত চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
লহ্মীপুর সদর আসনে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ১২ হাজার পরিবারে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। পঞ্চগড়ে জেলার সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ ৫ হাজার পরিবারে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। একইভাবে ময়মনসিংহ-১০ আসনে দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান বাচ্চু ৮ হাজার পরিবারের কাছে, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েল নরসিংদীর মনোহরদী-মাধবদীতে দেড় হাজার পরিবার, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আব্দুল সালাম আজাদ মুন্সিগঞ্জে, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু রামগতি-কমলনগরে, আমিরুল ইসলাম আলিম সিরাজগঞ্জে ত্রাণ বিতরণ করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন আড়াইহাজার উপজেলায় করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে বিএনপি নেতাকর্মী ও অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী, সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করে আসছেন। ঈদের আগে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে উপহার সামগ্রীও পাঠানো হয়েছে বলে জানান সুমন।
জানতে চাইলে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার দলীয় লোকজন যখন ত্রাণ চুরি, অর্থ আত্মসাৎ করছে তখন বিএনপি নেতাকর্মীরা নিজের পকেটের টাকা খরচ করে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। এটিও খুব স্বাভাবিকভাবে করতে দেয়া হচ্ছে না। নানাভাবে নেতাকর্মীদের বাধা দেয়া হচ্ছে গ্রেফতার করা হচ্ছে। তারপরও এই কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।