পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ

জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
তুরস্কের সমর্থনে হাফতারের কৌশলগত বিমান ঘাঁটি পুনরুদ্ধার করেছে লিবিয়ায় জিএনএ সরকারের বাহিনী। খবরে বলা হয়, বিদ্রোহী জেনারেল খালিফা হাফতারের কাছ থেকে দেশটির রাজধানীর উপকণ্ঠে একটি কৌশলগত সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে তুরস্ক সমর্থিত জাতিসংঘ সরকারের অনুগত সেনারা। এটি বিদ্রোহী জেনারেলের মনোবল ভেঙে দেয়ার ক্ষেত্রে তাৎপর্যপ‚র্ণ বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। খবর রয়টার্স ও মিডলইস্ট মনিটরের। হাফতার সমর্থক ও বিরোধী সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ত্রিপোলীর ৯০ মাইল দক্ষিণের আল-ওয়াতিয়া বিমান ঘাঁটি থেকে সেনাদের সরিয়ে আনা হয়েছে। সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ফুটেজে দেখা গেছে, জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের (জিএনএ) সেনারা বিনা বাধাতেই সামরিক ঘাঁটির রানওয়েতে প্রবেশ করেছে। গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে আচমকা ত্রিপোলিতে অভিযান পরিচালনার কথা ভাবছিল। তবে তার বাহিনী তখন থেকেই লড়ে যাচ্ছিল এবং বেশির ভাগ হামলাই পরিচালিত হচ্ছিল আল-ওয়াটিয়া ঘাঁটি থেকে। সা¤প্রতিক অন্যান্য সামরিক বিপর্যয়ের পর তার পশ্চাদপসরণ সেই বিদেশী শক্তিগুলোকে পুনরায় ভাবতে বাধ্য করবে, যারা হাফতারকে জাতিসংঘ স্বীকৃত জিএনএ সরকারের বিকল্প মনে করছিল। জিএনএ সেনারা গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিমান ঘাঁটিটিতে জোরদার হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল এবং বিদ্রোহীদের সাপ্লাই চেইনে বিঘিœত করছিল। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন দুটিতে হামলা বাড়িয়ে দেয় এবং রাশিয়ার তৈরি প্যান্টসির বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়। এ বিমান ঘাঁটিটি ২০১৪ সাল থেকেই হাফতার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল। জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত বছরের নভেম্বরে জিএনএর সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে তুরস্ক। ভ‚মধ্যসাগরীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে প্রবেশের অনুমতির বদলে জিএনএকে সামরিক সহায়তা দিচ্ছে আঙ্কারা। দ্বিপক্ষীয় চুক্তিটিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে সমালোচনা করছে গ্রিস এবং তা গ্রিক সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন বলে অভিযোগ এথেন্সের। আঙ্কারার জ্বালানি সরবরাহ নিরাপদ করতে এবং ভ‚মধ্যসাগরীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে তার প্রবেশাধিকার প্রসারিত করার আকাক্সক্ষায় জিএনএর প্রতি সমর্থন বাড়িয়েছে তুরস্ক। ড্রোন ও সিরিয়ার বিভিন্ন ভাড়াটে বাহিনীর মাধ্যমে জিএনএকে সহায়তা করছে আঙ্কারা। আঙ্কারা বলছে, জিএনএর জাতিসংঘ সমর্থিত সরকার এবং হাফতার বাহিনীকে যেভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), মিসর ও রাশিয়া অস্ত্র ও ভাড়াটে সেনা সরবরাহ করছে, তা মোকাবেলায় তুরস্ক এ পদক্ষেপ নিয়েছে। সাহেল বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হাফতারকে ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন জুগিয়ে আসছে।ত্রিপোলিতে মারাত্মক হামলা চালানোর জন্য এখনো দ্বিতীয় বিমান ঘাঁটি হিসেবে মিটিগা ব্যবহার করতে পারে হাফতার বাহিনী। গতকালও সেখান থেকে শক্তিশালী হামলা চালিয়েছে তারা। যখন দেশটি নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে, তখন এ হামলায় অনেক বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে এবং হাসপাতাল স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ত্রিপোলিতে গত এক বছর ধরে চলা সংঘর্ষে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ফ্রান্স ও ইউএইর উদ্বেগের বিষয় হলো আল-ওয়াতিয়া বিমান ঘাঁটিটি তুরস্কের জন্য একটি কৌশলগত গুরুত্বপ‚র্ণ অবস্থান হয়ে উঠতে পারে, যেখান থেকে লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় তেলক্ষেত্রগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়া সহজ হবে। এছাড়া এ নিয়ন্ত্রণের ফলে ত্রিপোলির দক্ষিণে হাফতার বাহিনীর ওপর চাপ তৈরি করতে পারবে জিএনএ সেনারা। দেশের প‚র্বাঞ্চলীয় তেলক্ষেত্রগুলোর নিয়ন্ত্রণ হাফতার বাহিনীর হাতে এবং অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল রফতানি আটকে দিচ্ছে তারা। রয়টার্স, মিডলইস্ট মনিটর, গার্ডিয়ান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।