Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা আতঙ্কের মধ্যেই নতুন হুমকি পঙ্গপাল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০২০, ৭:০৫ পিএম

পূর্ব আফ্রিকা থেকে ভারত পর্যন্ত দেশগুলো মরু পঙ্গপালের বিশাল ঝাঁকের হামলার মুখোমুখি হয়েছে এবং বর্ষাকালে পঙ্গপালদের বংশবৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পরে সেখানে আরও মারাত্মক দ্বিতীয় হামলা ঘটতে পারে।

চলতি বছরের শুরুর দিকে, পঙ্গপালের একটি ঝাঁক পূর্ব আফ্রিকা এবং আরব উপদ্বীপের কিছু অংশে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং এর পর ইরান, ইরাক পাকিস্তান এবং ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জানিয়েছে যে, ১০ টি দেশে প্রায় ৭ লাখ ২০ হাজার টন শস্য তাদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করা গিয়েছিল তবে এখনও হুমকি শেষ হয়নি। এফএওর প্রধান কো দোংইউ সোমবার বলেছেন, ‘আমাদের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে; তবে এই যুদ্ধ দীর্ঘ এবং এখনও শেষ হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘আসন্ন মাসে আরও বেশি লোকের জীবন-জীবিকা হারাতে পারে এবং খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে রয়েছে।’

এফএওর একটি মানচিত্রে দেখা গেছে যে, আগামি মাসগুলিতে পশ্চিম আফ্রিকা এবং আরব উপদ্বীপে জুড়ে ঝাঁকগুলি ছড়িয়ে পড়বে এবং জুনে নতুন পঙ্গপালের ঝাঁক তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এফএএওর পূর্বাভাসের মানচিত্র অনুসারে বর্তমানে কোনও ঝাঁক ইসরায়েরে দিকে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে না, জর্ডান হুমকির মুখে আছে বলে মনে করা হচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে, পঙ্গপাল ইয়েমেন হয়ে সউদী আরবে হামলা করায় জর্ডানের কৃষি মন্ত্রণালয় ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছিল। খাদ্য ও কৃষি সংস্থার অন্তর্গত পঙ্গপাল পূর্বাভাস কেন্দ্র পঙ্গপালের গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে ও নিয়মিত প্রতিবেদন দেবে বলেও ঘোষণা করেছে মন্ত্রণালয়। ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী সিরিয়াও পঙ্গপাল মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

চ্যানেল ১২ এর সংবাদ অনুসারে, ইসরায়েলের সাবেক কৃষিমন্ত্রী তাজাচি হানগবি সতর্ক করেছিলেন যে, পঙ্গপালগুলো ইসরায়েলে আসার খুব কম সম্ভাবনা থাকলেও পূর্বাভাস পরিবর্তন হতে পারে এবং আগে থেকেই প্রস্তুতি নেয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। ২০১৩ সালে এমন একটি আক্রমণে ইসরায়েলের খাদ্য শস্যে ব্যপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল বলে জানা গেছে।

শুক্রবার ইরানের কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, পঙ্গপালের ঝাঁকের দ্বিতীয় আক্রমণ মোকাবেলার জন্য ইরান সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করতে পারে। ইয়েমেনের আরব উপদ্বীপে এই উপদ্রবটির সূত্রপাত, সউদী আরবও এর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। জুনে, ইয়েমেন তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো মরু পঙ্গপালের প্রাদুর্ভাব দেখেছিল।

এফএও’র তথ্য অনুসারে, এক বর্গ কিমি আকারের পঙ্গপালের ঝাঁক এক দিনে ৩৫ হাজার মানুষের সম পরিমাণ খাবার খেতে পারে। ইউএন ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের পঙ্গপাল বিশেষজ্ঞ কিথ ক্রিসম্যান ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, একটি পঙ্গপালের ঝাঁক সকালে একটি জমিতে প্রবেশ করে মধ্যাহ্নের মধ্যেই পুরো ক্ষেতটি খেতে পারে। পোকামাকড়গুলো দিনে ৯৩ মাইল অবধি ভ্রমণ করতে পারে।

সিএনএন জানিয়েছে, কেনিয়ার এক পঙ্গপালের ঝাঁক নিউ ইয়র্ক সিটির আকারের তিনগুণ বেশি ছিল। এদের ধ্বংস করা না হলে জুনের মধ্যে এগুলো ৪০০ গুণ বাড়তে পারে। রিলিফওয়েজের মতে, মরু পঙ্গপালগুলো সাধারণত আফ্রিকার প্রায় ৩০ টি দেশে, পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার মধ্যে পাওয়া যায়। তারা ২৯ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার (প্রায় ১১.১ মিলিয়ন বর্গমাইল) জুড়ে ৬০ টি দেশে ছড়িয়ে যেতে পারে বলে রিলিফওয়েব জানিয়েছে। সূত্র: দ্য জেরুজালেম পোস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পঙ্গপাল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ