Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রমজানে দুই সুহৃদের মৃত্যুতে মহানবী (সা.) শোকবর্ষ ঘোষণা করেন

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০২০, ১২:০৬ এএম

রাসূলুল্লাহ (সা.) এই পবিত্র রমজান মাসে হারিয়েছেন পিতৃব্য আবু তালেবকে এবং কাছাকাছি সময়ে সহধর্মিনী বিশে^র প্রথম মুসলিম রমণী হজরত খাদিজাতুল কোবরা (রা.) কে। তাঁর জীবনের এই দুই মহান সুহৃদকে হারিয়ে তিনি দারুণভাবে ব্যথিত ও মর্মাহত হয়ে পড়েন, যার প্রকৃষ্ট প্রমাণ, এ গোটা বছরটাকেই তিনি ‘আমুল হোজন’ অর্থাৎ শোকবর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেন। এ শোকবর্ষ কেবল তাঁর জন্য নয়, সমগ্র উম্মার জন্য শোকের বছরও বটে।
কোরআনুল কারীম অবতীর্ণ হওয়ার মহিমান্বিত মাস রমজানুল মোবারক। এ মাসের বেশুমার ধর্মীয় মহিমা-তাৎপর্য ছাড়াও অসংখ্য ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। খোদ রমজান মাসের রোজা এ মাসেই ফরজ হয়। বহু ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শোকাবহ দু’টি ঘটনা মহানবী হজরত রাসূলে করীম (সা.) কে সর্বাধিক ব্যথিত করে এ পবিত্র রমজান মাসে। বিশে^র প্রথম মুসলিম রমণী উম্মুল মোমেনীন হজরত খাদিজাতুল কোবরা (রা.) এবং হুজুর (সা.) এর কঠিন জীবনের সর্বাত্মক সাহায্যকারী দয়ালু পিতৃব্য মহাত্মা আবু তালেব এ মাসে ওফাত প্রাপ্ত হন। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে (১১ মতান্তরে ১০ রমজান হযরত খাদিজা রা.) দু’জনের এ পবিত্র মাসে দুনিয়া থেকে চিরবিদায় গ্রহণের মর্মান্তিক ঘটনা রসূল (সা.) জীবনকে কি নিদারুণভাবে বিপর্যস্ত ও অসহায় করেছিল তা ঐ বছরকে তাঁর ‘আমুল হোজন’ বা শোকের বছর ঘোষণা হতেই আন্দাজ করা যায়। আরো একটি ঘটনা প্রমাণ করে যে, উম্মুল মোমেনীন হজরত খাদিজাতুল কোবরা (রা.)-এর ইন্তেকালে তিনি কতই না শোকাভিভ‚ত ও ব্যথিত হয়েছিলেন। ঘটনাটি এই; উম্মুল মোমেনীনের ইন্তেকালের পর অনেক দিন পর্যন্ত হুজুর (সা.) এর অভ্যাস ছিল এই যে, তাঁর গৃহে যখন কোন পশু জবাই করা হতো, তিনি তাঁর কিছু গোশত হজরত খাদিজা (রা.)-এর সুহাইলীদের (বান্ধবী) বাসায় প্রেরণ করতে থাকেন। (সীরাতুন্নবী)
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বয়স বারো বছরের সময় চাচা খাজা আবু তালেবের সঙ্গে সিরিয়ায় প্রথম সফরে গমন করেন, তখন বোহায়রা নামক এক রাহেব (পাদ্রী) তাঁর মধ্যে নবুওয়াতের নির্দশন দেখে আবু তালেবকে পরামর্শ দিয়েছিলেন তাকে স্বদেশে পাঠিয়ে দিতে। কেননা ইহুদিরা তাকে চিনতে পারলে তাঁর ক্ষতি সাধন করতে পারে। আবু তালেব পাদ্রীর পরামর্শে কাজ করেছিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যেতে থাকেন এবং এ ক্ষেত্রে তাঁর সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার সুনাম চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এবং বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাÐের সাথে জড়িত হয়ে নানা ক্ষেত্রে তাঁর খ্যাতি দ্রæত বাড়তে থাকে। এভাবে বেশ কযেক বছর কেটে যায় এবং সত্যবাদিতা ও সততার জন্য তিনি আরবে ‘আল-আমিন’ অর্থাৎ- বিশ^াসী বলে পরিচিতি লাভ করেন। বিশেষত ইসলামপূর্ব যুগে আরবে ‘ফিজার’ যুদ্ধ নামে যে সব যুদ্ধ সংঘটিত হতো সেগুলোকে ‘হরূবে ফিজার’ বলা হতো। যুদ্ধ নিষিদ্ধ মাসগুলোতে এসব যুদ্ধ হত বলে এগুলো ‘ফিজার’ যুদ্ধ নামে পরিচিত ছিল। চতুর্থ ‘ফিজার’ যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সা.) অংশগ্রহণ করে তাঁর চাচাদেরকে সহায়তা করেছিলেন। অতঃপর বিখ্যাত ‘হিলফুল ফুজুল’-এ অংশগ্রহণ করেন। এটি একটি চুক্তি ছিল। এ চুক্তির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি এই যে, ‘ফিজার’ যুদ্ধ হতে কোরেশ প্রত্যাবর্তন করার পরের ঘটনা। ‘জোবায়দ’ নামক শহরের এক ব্যক্তি তার বাণিজ্যপণ্য মক্কায় নিয়ে আসে। তার মাল আছ ইবনে ওয়ায়েল সাহমী খরিদ করে, কিন্তু কিছু মূল্য পরিশোধ করা হতে বিরত থাকে। এতে জোবায়দী তার কয়েকজন নেত্রীস্থানীয় ব্যক্তির সাহায্য কামনা করে, কিন্তু তারা সাহায্য করতে অস্বীকৃতি জানায়। অতঃপর লোকটি আবু কোবায়স পর্বতে দাঁড়িয়ে ফরিয়াদ করে, তার এ ফরিয়াদ কাবা থেকে কোরেশরা শুনতে পায়। অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর চাচা জোবায়র ইবনে আবদুল মোত্তালেবের প্রস্তাব অনুাযায়ী বনু হাশেম, জোহরা এবং বনু আসাদ ইবনে আবদুল উজ্জা- এরা সবাই আবদুল্লাহ ইবনে জাদআনের গৃহে সমবেত হন এবং পরস্পর অঙ্গীকারবদ্ধ হন যে, ‘আমরা জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের সাহায্য করব এবং জুলুমের মাধ্যমে গ্রহণ করা মাল উদ্ধার করে প্রাপককে ফেরত দেব।’ অতঃপর তারা সকলে আছ ইবনে ওয়ায়েলের নিকট গমন করেন এবং তার কাছ থেকে জোবায়দীর মাল উদ্ধার করে প্রাপককে প্রদান করেন। এই চুক্তিকে ‘হিলফুল ফুজুল’ এ কারণে বলা হয় যে, এটি প্রাচীন যুগে জুরহুমের সময় মক্কায় সম্পাদিত একটি চুক্তির ন্যায় ছিল। সেই চুক্তির বিষয় ছিল এই যে, আমরা একে অপরের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব এবং শক্তিশালীর কাছ হতে দুর্বলের এবং ‘মুকীম’ বা স্থায়ী অধিবাসীর কাছ থেকে মুসাফিরের (পথিক) অধিকার আদায় করে দেব। যেহেতু জুরহুমের এ চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী সকলের নাম ছিল ফজল, তাই চুক্তিটির নামকরণ করা হয়েছে, ‘হিলফুল ফুজুল’। কোরেশের এ চুক্তিতে রাসূলুল্লাহ (সা.)ও অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং নবুওয়াত যুগে তিনি বলতেন, ‘এ চুক্তির বিনিময়ে আমাকে যদি লাল উটও দেওয়া হতো আমি তা ভঙ্গ করতাম না।’ অপর এক বর্ণনা অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি আবদুল্লাহ ইবনে জাদআনের গৃহে এমন চুক্তিতে হাজির হই যদি তাতে অনুপস্থিতির জন্য আমাকে লাল বর্ণের উটও দেওয়া হতো আমি তা পছন্দ করতাম না এবং আজ যদি ইসলামেও কোন মজলুম যদি এরূপ ফরিয়াদ করে আমি তার সাহায্যে হাজির হয়ে যাব।’
ইসলাম পূর্বে ঘোর জাহেলি যুগে জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের সাহায্যের জন্য এরূপ চুক্তির মাধ্যমে জুলুম-নির্যাতন প্রতিহত করার সামাজিক ব্যবস্থাকে ইসলাম যুগে খোদ রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রশংসা করেছেন। সকল প্রকারের অন্যায়, অবিচার, ঘুষ, দুর্নীতি, অত্যাচার, উৎপীড়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে ভেজাল দ্রব্য, অকারণে মূল্য বৃদ্ধি, মজুদদারি, অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ, বেআইনি দখল, পাচার, চোরাকারবারী, চাঁদাবাজি তথা সামাজিক অপরাধ, অনাচারে লিপ্ত হওয়া সমাজকে কলুষিত করার সাথে সাথে রমজানের পবিত্রতাকে ক্ষুণœ করে। কেবল সরকারি উদ্যোগ যথেষ্ট নয়, সামাজিক প্রতিরোধও আবশ্যক। ইসলামের পূর্বে সমাজ সংস্কার-উন্নয়নে রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর অংশ গ্রহণ এবং ভ‚মিকা সর্বত্র প্রশংসিত হতে থাকে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যেও তাঁর দক্ষতা সফলতা প্রতি অনেকের দৃষ্টি তাঁর প্রতি নিবদ্ধ হতে থাকে। বিশেষভাবে এক্ষেত্রে হযরত খাদিজার কথা উল্লেখযোগ্য।
পঁচিশ বছর বয়সে সিরিয়ায় রাসূলুল্লাহ (সা.) এর দ্বিতীয় সফরের ঘটনা। এ সময় মক্কায় বাস করতেন সম্মানিত বিত্তশালী রমণী হজরত খাদিজা (রা.)। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নিকট প্রস্তাব প্রেরণ করেন, সিরিয়ায় তাঁর তেজারতি মাল নিয়ে গমন করতে, অন্যদেরকে তিনি বিনিময়ে যা দিয়ে থাকেন বা লাভ দিয়ে থাকেন রাসূলুল্লাহ (সা.) কে তার দ্বিগুণ দেবেন। তিনি রাজি হলেন। কথা অনুযায়ী তিনি তেজারতি মাল নিয়ে সিরিয়ায় গমন করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন খাদিজা (রা.) এর গোলাম মায়সারা। যখন তিনি সিরিয়ায় পৌঁছেন, তখন ‘বছরা’ বাজারে ‘নাস্তুরা’ নামক এক পাদ্রীর গির্জার নিকট অবতরণ করেন। পূর্ব হতে পরিচিত মায়সারার নিকট পাদ্রী এসে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘বৃক্ষের নিচে বসা ইনি কে?’ মায়সারা বললেন, ‘হেরমবাসীদের একজন কোরেশ।’ পাদ্রী বললেন, ‘কোনো নবী ব্যতীত এ বৃক্ষের নিচে কখনো কেউ অবতরণ করেনি।’ প্রথম সফরে বোহায়রা যে ধরনের কথা বলেন, এই সফরে নাসতুরাও প্রায় অনুরূপ কথা বলেছিলেন। এ সফরে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কয়েকটি মোজেযাও প্রকাশ পায়। তেজারতের উদ্দেশ্যে তিনি সিরিয়া, বছরা ও ইয়েমেন সফর শেষে প্রত্যাবর্তণ করেন এবং এ সফরে তাঁর প্রচুর লাভ হয়। হজরত খাদিজা (রা.) তার গোলাম মায়সারার নিকট সব খবর অবগত হন এবং অনুভব করতে পারলেন যে, মোহাম্মদ (সা.) নিশ্চয় নবুওয়াত প্রাপ্ত হবেন। তাই তাঁর প্রতি খাদিজা (রা.)-এর ভক্তি, বিশ^াস আরো বেড়ে যায়।
খাদিজা (রা.) এর পঞ্চম ঊর্ধ্বতন বংশধারা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বংশ ধারার সাথে মিলে যায়। তিনি বিধবা ছিলেন, পূর্বে তাঁর দুই বিয়ে হয়েছিল। তাঁর পবিত্রতার কারণে তিনি জাহেলি যুগে ‘তাহেরা’ নামে খ্যাত ছিলেন। সিরিয়া হতে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রায় তিন মাস পর ইউলা ইবনে মানিয়ার বোন নাফিসার মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট বিয়ের প্রস্তাব প্রেরণ করেন তিনি। তাঁর চাচাদের নিকট প্রস্তাবের কথা জানালে সকলে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। নির্দিষ্ট তারিখে আবু তালেব, আমীর হামজা এবং খান্দানের অন্যান্য নেতৃবর্গ হজরত খাদিজা (রা.)-এর গৃহে গমন করেন এবং তাঁর চাচা আমর ইবনে আসাদ মতান্তরে ভাই আমর ইবনে খোওয়াইলেদ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে তাঁর বিয়ে দেন। এ সময় তাঁর বয়স হয়েছিল চল্লিশ বছর (খাদিজার)। আবু তালেব বিয়ের খোতবা পাঠ করেন এবং মোহরানা ধার্য হয় পাঁচশ দেরহাম।
রাসূলুল্লাহ (সা.) নবুওয়াত লাভের পর সর্বপ্রথম হজরত খাদিজা (রা.) তাঁর প্রতি ঈমান আনেন। বিয়ের পর পঁচিশ বছর পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। তাঁর জীবদ্দশায় রাসূলুল্লাহ (সা.) দ্বিতীয় সাদী করেননি। তাঁর সকল আওলাদ হজরত খাদিজা (রা.)-এর গর্ভের। কেবল ইবরাহিম মারিয়া কিবতিয়ার পক্ষের, শৈশবে তার ইন্তেকাল হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ (সা.) কে তিনি মাল দ্বারা সাহায্য করেন।
উম্মুল মোমেনীন হজরত খাদিজাতুল কোবরা (রা.)-এর অবদান মহানবী (সা.) ও ইসলামের জন্য অতুলনীয়। সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে এবং কাফেরদের শত্রæতার সব সময় তিনি ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সা.) কে সর্বপ্রকারের সাহায্য দানকারী, সমবেদনা জ্ঞাপনকারী, সান্ত¡না দানকারী, অতি প্রিয় আপন। ১০ মতান্তরে ১১ রমজানে ৬৫ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন। খাজা আবু তালেবও তার আগে কিংবা পরে ইন্তেকাল করেন। এ দু’জনের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি এতই ব্যথিত হন যে, ওই বছরকে শোকের বছর ঘোষণা করেন।
খাজা আবু তালেব: আরবের শ্রেষ্ঠ কোরেশ বংশের কৃতী সন্তান হজরত খাজা আবু তালেব ছিলেন কোরেশ নেতা আবদুল মোত্তালেবের দশ বা এগার পুত্র সন্তানের অন্যতম। তিনি ছিলেন হজরত আলী (রা.)-এর পিতা, হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর পিতা হজরত আবদুল্লাহর আপন ভাই। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দাদা হজরত আবদুল মোত্তালিবের বিভিন্ন স্ত্রীর গর্ভে দশ পুত্র সন্তান (কারো কারো মতে আবদুল্লাহ ব্যতীত) জন্ম গ্রহণ করেন এবং কন্যা সন্তান ছিলেন ছয়জন। এখানে আমরা খাজা আবু তালেবের বর্ণনা নিয়ে আসছি।
মাতার নাম ফাতেমা বিনতে আমর ইবনে আয়েজ, নানির নাম ছাখরা বিনতে আবদ ইমরান এবং ছাখরার মাতার নাম তাখাম্মুর বিনতে আবদ ইবনে কুছাই। অর্থাৎ- ফাতেমা ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আপন দাদি এবং কুছাই তার ৬ষ্ঠ ঊর্ধ্বতন পুরুষ। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মের পূর্বে তাঁর পিতা আবদুল্লাহকে আবদুল মোত্তালেব খেজুর আনার জন্য মদীনায় প্রেরণ করেছিলেন এবং সেখান থেকে ফেরার পথে তিনি পঁচিশ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মের পর দাদা খাজা আবদুল মোত্তালেব তাঁর লালন-পালনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর ছয় বছর বয়সের সময় মাতা আমেনা মদিনায় গমন করেছিলেন, ফেরার পথে ‘আবওয়া’ নামক স্থানে তাঁরও ইন্তেকাল হয়ে যায়। আট বছর দুই মাস দশদিন বয়সের সময় ৮২ বছর বয়সে দাদা আবদুল মোত্তালেবও ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পূর্বে তাঁর অছিয়ত অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আপন চাচা খাজা আবু তালেব তাঁর লালন-পালনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এভাবে শুরু হয় সর্বশেষ শ্রেষ্ঠ নবীর নতুন জীবন। প্রিয় ভ্রাতুষ্পুত্রকে চাচা আবু তালেব অত্যন্ত ভালবাসতেন এবং তাঁর লালন-পালনের প্রতি বিশেষ যতœ নিতেন, এমনকি নিজের সন্তানদের চেয়েও ভ্রাতুষ্পুত্রের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতেন। তাকে তিনি এতই ভালোবাসতেন যে, একবার বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাজা আবু তালেব রাসূলুল্লাহ (সা.) কে সঙ্গে নিয়ে বৃষ্টির জন্য দোয়া করেন, যা তারই বরকতে সঙ্গে সঙ্গে কবুল হয়েছিল। [ক্রমশঃ]



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মহানবী (সা.)


আরও
আরও পড়ুন