বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কোনো ভিআইপি নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হলে তাদের চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতালের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে- পত্রিকায় এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারি অর্থায়নে এমন বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। ফেইসবুকে এ নিয়ে তারা নানা মন্তব্য ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (স্বাস্থ্য শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকির মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) একটি গণমাধ্যমকে ভিআইপিদের পৃথক হাসপাতালের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ভিআইপিদের জন্য আলাদা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর মধ্যে কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য ডেডিকেটেড শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। এছাড়া রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালেও চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। মন্ত্রী, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন ভিআইপিদের চিকিৎসা অ্যাপোলো হাসপাতালে দেওয়ার জন্য কথাবার্তা চলছে। এছাড়া চিকিৎসকরা আক্রান্ত হলে গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হবে আলাদাভাবে।
বিষয়টি নিয়ে ফেইসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল লিখেছেন, ‘‘ভিআইপি করোনা। ভিআইপিদের করোনা চিকিৎসার জন্য আলাদা ব্যবস্থা কি হচ্ছে আসলে? যদি হয়, সেটা হবে খুব স্বাভাবিক। কারণ এদেশে ভিআইপিরা ভোট, ব্যবসা, কর, ব্যাংক লোন, দায়মুক্তি, রাস্তায় চলাচল - সবক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক সুবিধা পেয়ে থাকেন। তাদের করোনা হলেও এমন সুবিধা পাবেন এটা আমি প্রায় নিশ্চিত।
আমার ধারনা তারা এটা করতে চাইলে প্রতিবাদও হবে না তেমন। আমাদের মধ্যে মোটামাথার লোক আছে, আছে ভীতু মানুষ। তারচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আমাদের মধ্যে আছে ভিআইপিদের অনেক স্তাবক ও গুনমুদ্ধ মানুষ। তারা বরং চেষ্টায় থাকবেন নিজেদের কিছু হলে এধরনের ভিআইপি হাসপাতালে সেবা পাওয়া যায় কিনা তা নিশ্চিত করতে। এজন্য এমনকি এমন হাসপাতালের পক্ষেও দাড়িয়ে যেতে পারেন তারা। করোনাকালে বৈষম্য বেশী দু:খজনক, অনেক বেশী অপরাধমূলক। তবে এটি এ রাষ্ট্র আর সরকারব্যবস্থাকে আরেকটু নগ্নভাবে তুলে ধরছে আমাদের কাছে এটাই শুধু সান্তনা। তবু যদি বোধোদয় হয় আরো বেশী মানুষের!’’
জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক ও কলামিস্ট মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘ভিআইপিদের জন্য পৃথক হাসপাতাল অবশ্যই হতে পারে, তবে জনগণের টাকায় নয়। নিজেদের খরচে ইউনাইটেড, এভারগ্রিন, স্কয়ার, বামরুনগ্রাদ, মাউন্ট এলিজাবেথ, এয়ার এম্বুলেন্স যেভাবে খুশি চিকিৎসা নিতে পারে। জনগণের টাকায় চিকিৎসা নিতে হলে জনগণের হাসপাতালেই নিতে হবে।’’
মুজাহিদুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘ভিআইপিদের করোনা চিকিৎসায় আলাদা হাসপাতাল প্রস্তুত! নিউজ পোর্টালগুলোতে একটি খবর ঘুরছে। যেটি আমার মত অনেক নাগরিককেই নিশ্চয় হতাশ ও বিক্ষুব্ধ করেছে। সেটি হল, বাংলাদেশে ভিআইপিদের করোনা চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। যদি সেটি করাও হয়ে থাকে, তবে সেটি গোপন রাখা যেত। দেশের মানুষ যখন করোনা চিকিৎসার নূন্যতম নিরাপত্তা পাচ্ছে না, রাষ্ট্রযন্ত্রের উপর আস্থা রাখতে পারছে না, বিভিন্ন হসপিটালের বারান্দায় ঘুরে ঘূরে মানুষ বিনাচিকিৎসায় অসহায় হয়ে মারা যাচ্ছে, জীবনের নিাপত্তায় বিদেশী কূটনৈতিকরা দলে দলে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে, সামান্য পিপিই ও সঠিক মাস্কের অভাবে শত শত স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে, ঠিক এ মুহূর্তেই দেশের ভিআইপিদের করোনা চিকিৎসার জন্য পৃথক বিলাসী হসপিটাল প্রস্তুত করে মিডিয়ায় প্রচার করা দেশের সাধারণ ও বঞ্চিত মানুষের সাথে তামাশা ও পরিহাস ব্যতীত অন্য কিছুই নয়।’’
মো. মাজেদুল ইসলাম মামুন লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশের ভিআইপিদের উদ্দেশ্যে বলছি- একটু গাঁ গরম হলেই তো সিঙ্গাপুর, লণ্ডন ছুটে যান হাওয়ায় ভেসে। যান, এখন যান ভাল জায়গায় গিয়ে সুস্থ হয়ে আসেন। দেশে আবার কিসের ভিআইপি হাসপাতাল।’’
সাংবাদিক মানিক মুনতাসির লিখেছেন, ‘‘ভিআইপিদের জন্য পৃথক হাসপাতাল। জাহান্নাম, জান্নাতে পৃথক বুকিং দিয়েছেন তো ভায়া! করোনা ফ্যাক্ট।’’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।