বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
উপকূলজুড়ে বাড়ছে ক্ষুধার জ্বালা। বিশেষ করে জেলে পল্লীতে চলছে চরম অভাব অনটন। আর বনজীবীরা কর্মহীন হয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। পাশাপাশি খেটে খাওয়া মানুষগুলো আর নিম্ন মধ্যবিত্তরা সামাজিক লাজ লজ্জায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে না পারায় পড়েছে মহাবিপাকে।
উপকুলীয়াঞ্চলের লাখ লাখ পরিবার মাছ ধরে আর সুন্দরবনের ওপর নির্ভর করে জীবন যাপন করে থাকে। এরা কেউ মাছ ধরে, কেউ মধু সংগ্রহ করে, কেউ গোলপাতা আহরণ করে জীবীকা নির্বাহ করে থাকে। যা দিয়ে কোন রকম খেয়ে না খেয়ে দুর্যোগের সাথে যুদ্ধ করে সারা বছর পার করতে হয়। তার ওপর প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে জনসমাগম ও চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে উপকুলীয়াঞ্চলের লাখ লাখ কর্মজীবী মানুষ। বিশেষ করে কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন উপকূলীয় জেলেপল্লীর জেলেরা ও খেটে খাওয়া মানুষ।
খুলনার দাকোপের বানিশান্তা যৌনপল্লির ৮৯ জন যৌনকর্মীর দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। এ পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ অঞ্চলে যে ত্রাণ দেয়া হয়েছে প্রয়োজনের তুলনায় তা অনেক কম। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে লাখ লাখ উপকূলবাসী।
সূত্রমতে, খুলনার কয়রা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা, বাগেরহাটের মংলা, রামপাল, শরণখোলা মোড়েলগঞ্জ, সাতক্ষীরার তালা, আশাশুনি, শ্যামনগর ও কালিগঞ্জসহ উপকূলীয়াঞ্চলের লক্ষাধিক জেলে-মাঝিসহ খেটে খাওয়া মানুষের এখন দুর্বিষহ জীবন চলছে। মাছ ধরতে ও কাজ করতে পারছেন না তারা। যে কারণে অনেকের চুলাও জ্বলছে না।
জেলেরা জানান, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস কিংবা দস্যু, সবকিছুই মোকাবিলা করে সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে এসব জেলেরা মাছ শিকার করে থাকে। জীবিকার জন্য জীবন বাজি রেখে প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে অনেক সময় তাদের অথৈ সাগরে যেতে হয় মাছ শিকারে। বর্তমানে করোনার কারণে তারা কাজে যেতে পারছেন না। এ কারণে তিনবেলা খাবারও জুটছে না এসব কর্মহীন জেলেদের। অন্য পেশার মানুষ বারো মাস আয় করতে পারেন। কিন্তু বছরে কয়েক দফা মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকে জেলেদের। মাঝেমধ্যে পেটের দায়ে কেউ মাছ ধরতে নামলে ভ্রাম্যমাণ আদালত আটক করে জেল-জরিমানা, জাল-নৌকা জব্দ করে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অনেক জেলে। এখন করোনার এ সময়ে কেউ ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরতে নামছেন না।
বটিয়াঘাটার হালিয়া, বুনারাবাদ, কাশিয়াডাংগা, আমতলা, গৌরম্ভাসহ বিভিন্ন দিনমজুররা জানান- তারা একদিকে আতঙ্কিত। অপরদিকে কাজ না করলে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার দায়। সব মিলিয়ে ভালো নেই তারা। নগরীর শ্রমিক সাঈদ বলেন, ‘কী করবো, ঘরে বসে থাকলেতো আর পেট চলবে না। ছেলে-মেয়েদের মুখে আহার দিতে হবে। কারও কাছে ধার চেয়েও পাইনি।’
জেলে আইয়ুব আলী জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধের চেয়ে তাদের কাছে তিনবেলা খাবার খেয়ে জীবন বাঁচানোটাই এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন তারা সুন্দরবন সংলগ্ন নদীতে মাছ ধরতে পারছেন না। সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। সবমিলিয়ে গত কয়েক দিনে তাদের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।