Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শতাধিক বিদেশি শিক্ষক ও গবেষকের উদ্বেগ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০২০, ১২:০৩ এএম

বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে বিদেশে থাকা বাংলাদেশি শিক্ষক ও গবেষকগণ। এক বিবৃতিতে তারা করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকার ও প্রশাসনকে আহবান জানান।
গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি চিহ্নিত হয়। উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে বর্তমানে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের প্রফেসর নেল ফার্গুসনের মডেল অনুযায়ী, বাংলাদেশে কমপক্ষে ৮ কোটি ৯১ লাখ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। আইসিইউ সাপোর্ট লাগতে পারে ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৫৯৫ জনের। পাঁচ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে। এখনই দ্রুত সর্বাত্মক চেষ্টা চালালে এ সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের দেশে শুরুর দিকে রোগ-নির্ণয় কিট ছিল প্রায় ২ হাজারটি যার বেশকিছু ইতোমধ্যে ব্যবহৃতও হয়ে গেছে। আরও নতুন ৪০ হাজার কিট ইতোমধ্যে পৌঁছেছে। বর্তমানে দেশে মাত্র ২৯টি ভেন্টিলেশন সুবিধা আছে। আরো ১০০ টি ভেন্টিলেশন সুবিধার প্রস্তুতি প্রক্রিয়াধীন যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। এমতাবস্থায় বাংলাদেশে দল-মত নির্বিশেষে সকলে একত্রিত হয়ে আমাদের সীমাবদ্ধতাকে অনুধাবন করে তা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত।
বিবৃতিতে দাবি জানিয়ে বলা হয়, করোনা মহামারী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ঢাকাসহ সারাদেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত রোগ-নির্ণয় কিট, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র এবং ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করা। চিকিৎসার সাথে সম্পর্কিত চিকিৎসক, নার্সসহ সকলের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (চচঊ) সমেত পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সামগ্রী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিশ্চিত করা। এছাড়াও যেসব স্বেচ্ছাসেবক, মাঠকর্মী, এবং কর্মচারী মাঠপর্যায়ে কাজ করবে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এ কাজে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে প্রস্তুত করা ও তাদের কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা। লক-ডাউনকৃত এলাকায় সকল মানুষের মানবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করা। করোনায় আক্রান্ত রোগী যাতে কোন ধরনের সামাজিক হয়রানি/বৈষম্যের শিকার না হয় তা নিশ্চিত করা। সামাজিক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ যেমন লেখক, সাহিত্যিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মী, আলেম-ওলেমাসহ বিভিন্ন ধর্মের বিদ্বানদের দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালানো প্রয়োজন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইতোমধ্যে ড. বিজন কুমার শীল এবং তার গ্রুপ নিজস্ব উদ্যোগে করোনা নির্ণয় পদ্ধতি নিয়ে কাজ শুরু করছেন। দেশের গবেষকদের অনেকেই করোনা সম্পর্কিত গবেষণা কাজে সম্পৃক্ত হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। দেশের বাইরের গবেষকদের অনেকেও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত আছেন। তাদের সহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গবেষকদের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে আশু এ মহামারি মোকাবিলা করা সম্ভব হতে পারে। এরই মধ্যে অত্যন্ত দুঃখজনক হলো, করোনার সম্ভাব্য রোগীর সংখ্যা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করে বিপাকে আছেন ড. মলয় কান্তি মৃধা। এ ক্রান্তিলগ্নে রাষ্ট্রের উচিত নির্মোহ গবেষণার পরিবেশ নিশ্চিত করা।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের কয়েকজন হলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ইউনিভার্সিটি অব মিসিসিপি’র মো. ইমদাদুল হক খান, কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি’র ড. মো. রফিকুল ইসলাম, ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়ার ড. মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন, জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ড. তানিয়া সুলতানা বনি, ওল্ড ডমিনিয়ন ইউনিভার্সিটির মো. শরীফ উল্লাহ্, ইউনিভার্সিটি অব নেব্রাস্কা মেডিকেল সেন্টার রিদওয়ান ইসলাম, টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটির ড. মো. আখেরুজ্জামান, জাপানের ওসাকা ইউনিভার্সিটির ড. আরিফ নিক্সন, মো. আরিফুর রহমান, কুমামোতো ইউনিভার্সিটির নাহিদ সুলতানা,
জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব বনের নূর এ কাসিদা ইসলাম, কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবরিনা শামীন আলম, ইউনিভার্সিটি অফ রেজিনার মীর সালমা আক্তার, ইউনিভার্সিটি অফ কিউবেকের রাশিক ইফতেখার রুশো, যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সাঊথ্যাম্পটনের তাহরিমা হোসেন, অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথ ওয়েলসের অয়ন সাহা, ইতালির ইউনিভার্সিটি অফ পাদোভার মো. আল-আমিন, পাদোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিনা মুক্তি, ফ্রান্সের ইউনিভার্সিটি পিয়েরি মেরি কুরির কুতুব আশরাফ,মালয়েশিয়ার মনাশ ইউনিভার্সিটির নাজমুল হাসান মুজাহিদ প্রমূখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উদ্বেগ

২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ