মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নোভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এ বার ২ লাখ কোটি ডলার (১৫ লাখ কোটি টাকা প্রায়) আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মার্কিন সরকার। বুধবার (২৫ মার্চ) ট্রাম্প প্রশাসন ও সিনেট প্রণোদনা প্যাকেজটির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রণোদণা প্যাকেজ।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের কবলে ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুসংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়েছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৫ হাজার। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাত থেকেই হোয়াইট হাউসের সঙ্গে আলোচনা চলছিল মার্কিন সিনেট সদস্যদের। রাতভর আলোচনার পর ভোরের দিকে এই সিদ্ধান্তে গৃহীত হয়।
রাত ভর বৈঠকের পর হোয়াইট হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তা এরিক উইল্যান্ড এ দিন বলেন, সরাসরি মার্কিন নাগরিকদের হাতে এই সাহায্য পৌঁছে দেয়া হবে। তার জন্য ২৫ হাজার কোটি ডলার বরাদ্দের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের ঋণ দিতে বরাদ্দ করা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি ডলার। কর্মহীনদের বিমা বাবদ আরও ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে যে সমস্ত সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের জন্য রাখা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি ডলার।
মার্কিন কংগ্রেসে এই প্রস্তাব পাশ হলে, যে সমস্ত মার্কিন নাগরিকদের বার্ষিক আয় ৭৫ হাজার ডলারের (৫৭ লাখ টাকা) কম, তাদের প্রত্যেকের হাতে ১২০০ ডলার তুলে দেয়া হবে, বাংলাদেশী টাকায় যা প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা। বাড়িতে শিশু থাকলে, মাথাপিছু আরও ৫০০ ডলার করে দেয়া হবে, বাংলাদেশী টাকায় যা প্রায় ৪৩ হাজার টাকা। তবে যে সমস্ত ব্যক্তির বার্ষিক আয় ৯৯ হাজার ডলার (৮৪ লাখ টাকা), তাদের ক্ষেত্রে সাহায্যের অঙ্ক কিছুটা কমবে। সন্তানহীন দম্পতি যারা বছরে ১ লাখ ৯৮ হাজার ডলার (১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা) রোজগার করেন, সাহায্যের অঙ্ক কমবে তাদের ক্ষেত্রেও। আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার পরিবার, শীর্ষস্তরের সরকারি কর্মকর্তারা এবং কংগ্রেসের সদস্যরা এই তহবিল থেকে কোনও টাকা পাবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন সে দেশের সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার।
যুক্তরাষ্ট্রের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৯ শতাংশের সমান এই প্যাকেজটি দেশটির দরিদ্র মানুষ, চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় ব্যয় করা হবে। তহবিলের অর্ধেক বা ১ ট্রিলিয়ন ডলার করোনার আঘাতে আর্থিক সঙ্কটে পড়া কোম্পানিগুলোকে উদ্ধারে ব্যয় করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোকে সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে ৩শ বিলিয়ন ডলার, স্থানীয় প্রশাসনের জন্য ১৫০ বিলিয়ন ডলার এবং হাসপাতালগুলোর জন্য বরাদ্দ দেয়া হবে ১৩০ বিলিয়ন ডলার। এদিকে প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে অগ্রগতির সম্ভাবনার মুখে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটেছে। ইতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বাজারেও। সূত্র : নিউ ইয়র্ক টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।