Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের গণতন্ত্র হুমকিতে, মোদির পক্ষে থাকলে ভুল করবেন ট্রাম্প

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০২০, ৮:০২ পিএম

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই, গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিতে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গত মাসে সেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারত সফরের গিয়েছিলেন। রাজধানী দিল্লিতে তার উপস্থিতিতেই প্রধানমন্ত্রী মোদির দল বিজেপির ইন্ধনে মুসলমানদের উপরে সহিংসতা চালায় হিন্দুত্ববাদিরা।

চারদিন ধরে চলা সেই সহিংসতার ঘটনায় ভারতে হিন্দু-মুসলিম বিভেদ আরও গভীর হয়েছে। অথচ সেই ঘটনার কেন্দ্রস্থলে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প ‘ধর্মীয় স্বাধীনতার’ জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করেন। তার কথায় মনে হয়েছে, ভারতের গণতন্ত্র ভেঙে পড়ার মতো ঘটনায় পরোক্ষভাবে সমর্থন আছে বিশ্ব পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের।

সহিংসতা চলার সময়ই মোদির সাথে বৈঠক শেষে ট্রাম্প জানান, ‘আমরা ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেছি এবং আমি বলব যে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে ভাল কাজ করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘মোদি ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চান। তিনি আমাকে জানিয়েছেন যে, তার সরকার ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে।’

বাস্তবে, ভারতে এই ধর্মীয় স্বাধীনতা বিশেষত মুসলমানদের জন্য যথেষ্ট হুমকির মধ্যে রয়েছে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মোদি সরকারের একটি বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লিতে মুসলমানদের নেতৃত্বে আন্দোলন চলছিল, সেখানে হিন্দুত্ববাদিরা হামলা করায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ শুরু হয়। গত ১১ ডিসেম্বর দেশটির সংবিধান ও ধর্মীয় নীতি লঙ্ঘন করে এই নাগরিকত্ব আইন জারি করা হয়। যার ফলে সংখ্যলঘু মুসলিমদের রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। এই সহিংসতায় অন্তত ৫৩ জনের মৃত্যু ও ৫ শতাধিক আহত হন।

সাম্প্রতিক এই সহিংসতা কেবল একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। মোদির ভারতে এটি একটি অশান্তকর ধারার অংশ। ২০১৪ সালে মোদি নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর থেকে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংস অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে। এই সহিংসতা ভারতের রাজনীতিতে চূড়ান্তভাবে হিন্দু জাতীয়তাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। হিন্দু মূল্যবোধের মাধ্যমে ভারতীয় সংস্কৃতিকে সংজ্ঞায়িত করাই হচ্ছে বিজেপির ‘হিন্দুত্ব’ নীতি। এখনও যুক্তরাষ্ট্র ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘন, ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন, কাশ্মীরে মুসলমানদের নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত করে অবরুদ্ধ করে রাখার মতো ঘটনাগুলো নিয়ে সমালোচনা করতে অস্বীকার করছে। মোদির নেতৃত্বে ভারত যে বিভাজনীয় মোড় নিয়েছে, তার প্রেক্ষিতে মোদির পক্ষে ট্রাম্পের সমর্থন মুসলমানদের জন্য বিপজ্জনক বার্তা।

নয়াদিল্লির সহিংসতা ছিল পরিকল্পিত ঘটনা। এতে বিতর্ক করার কিছুই নেই। সেখানে বহুদিন ধরেই মুসলমানদেরকে হুমকি হিসাবে উপস্থাপন করা হচ্ছিল, তাদেরকে আলাদা করে ফেলা, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া ও জীবিকা নির্বাহের পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সহিংসতার সময় পুলিশ ছিল দর্শকের ভূমিকায়। ঠিক যেমন বহু বছর আগে মোদি মুখ্যমন্ত্রী থাকা কালীন গুজরাট দাঙ্গার সময় করা হয়েছিল। সূত্র: সিএনএন।



 

Show all comments
  • Monjur Rashed ১৭ মার্চ, ২০২০, ৮:৫৮ পিএম says : 0
    President Trump being an unethical businessman, will remain addicted to Modi to penetrate into huge Indian market.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত-যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ