Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জনবিচ্ছিন্ন ভোটের প্রচার

করোনায় সতর্কতা চান বিশেষজ্ঞরা

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় চলছে প্রার্থীদের গণসংযোগ ও ভোটের প্রচার। নৌকা-ধানের শীষের পক্ষে চলছে মাইকিং। প্রার্থীরা গণসংযোগ করছেন পাড়ায়-মহল্লায়। আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী, বিএনপিডা. শাহাদাত হোসেনসহ ছয় মেয়র প্রার্থী মাঠে। ভোটের প্রচারে আছেন ২১৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী। ভোটের দিন ২৯ মার্চ ঘনিয়ে আসলেও প্রচারণায় সাড়া নেই ভোটারদের।
এদিকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভোটের প্রচারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ। গতকাল রোববার চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে জনসচেতনতা বিষয়ক এক সেমিনারে বিশেষজ্ঞগণ এ ব্যাপারে গুরুত্ব দেন। আতঙ্কের মধ্যে ভোট স্থগিত করার দাবি উঠলেও তা আমলে নিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। শনিবার চট্টগ্রামে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ভোট পেছানোর মত দুর্যোগময় পরিস্থিতি এখনও সৃষ্টি হয়নি। যদি এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তাহলে সেটা পরে দেখা যাবে।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস আতঙ্কে উদ্বিগ্ন নগরবাসী। এখনও স্কুল-কলেজ খোলা। সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন পার করেন অভিভাবকেরা। কর্মজীবীরা কর্মস্থল থেকে ফিরেই বাসাবাড়িতে অবস্থান করছেন। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছেন না। দিনের বেলা কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও অফিস-আদালত বন্ধের পর রাস্তাঘাটও ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। মার্কেট, বিপণি কেন্দ্র, পার্ক, হোটেল, রেস্তোঁরা, পর্যটন স্পটগুলোতে নেই ভিড়। অনেকটা জনবিচ্ছিন্ন ভোটের প্রচার চলছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ মহানগরীতে। দলবল নিয়ে প্রার্থীদের পাড়া-মহল্লায় ঢুকে পড়ায় ভোটাররা নাখোশ হবেন এমন চিন্তা মাথায় রেখে সড়ক আর অলিগলিতে মাইকিং করেই ভোটের প্রচার শেষ করছেন অনেক প্রার্থী। প্রার্থীদের পেছনেও মানুষের তেমন জটলা নেই। তাতে তেমন কোন সাড়া নেই সাধারণ মানুষের। সাধারণ মানুষ জনসমাগম এড়িয়ে চলছে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা দলীয় প্রার্থীর পিছে ছুটলেও তারাও রয়েছেন উৎকণ্ঠায়। বাধ্য হয়ে তারা নির্বাচনী প্রচারে নামছেন। এতে করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা প্রবল হচ্ছে। এ অবস্থায় ভোটের প্রচারে সতর্কতা অবলম্বনের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। গতকাল নগরীর এপিক কনফারেন্স হলে পাওয়ার টু ব্লু ম’র প্রতিষ্ঠাতা মিথিলা হকের সভাপতিত্বে এ বিষয়ে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী। মূল প্রবন্ধ পেশ করেন চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. মো. মাকসুদুল করিম।
ডা. সেখ ফজলে রাব্বী বলেন, চলমান বৈশ্বিক সঙ্কটে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সর্বোচ্চ জনসচেতনতাই সমাধানের অন্যতম পথ। চট্টগ্রাম নগরে বর্তমানে চসিক নির্বাচনের প্রচার চলছে। এ পরিস্থিতিতে প্রচারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রচারণার সময় লোক সমাগম এড়িয়ে ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় প্রচারণা চালানো উচিৎ। গণমানুষের অবাধ মেলামেশায় খেয়াল রাখতে হবে। আইইডিসিআর যা নির্দেশনা দিয়েছে তা মেনে চলতে হবে।
তিনি তরুণদের করোনাভাইরাস সচেতনতায় অগ্রণী ভূমিকার পাশাপাশি বলেন, ষাটোর্ধ্ব বয়সী মানুষের বেশি সচেতন থাকতে হবে। যারা আগে থেকে ডায়াবেটিস এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তারা সজাগ থাকবেন। যারা বিদেশ থেকে দেশে ফিরছেন তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। বাইরে যারা আছেন তাদের দেশে আসা নিরুৎসাহিত করা উচিৎ। যাতে আক্রান্ত কেউ দেশে না আসেন। আশা করছি বাংলাদেশে করোনার প্রভাব তেমন পড়বে না, যদি মানুষের মাঝে সচেতনতা থাকে। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন এপিক হেলথ কেয়ারের ডিরেক্টর (অপারেশন) ডা. মো. এনামুল হক। আলোচনায় অংশ নেন একুশে পত্রিকা সম্পাদক আজাদ তালুকদার, চবি শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক হাসান তৌফিক ইমাম, এসডিজি ইয়ুথ ফোরাম সভাপতি নোমান উল্লাহ বাহার, মো. আলমগীর, জহির রায়হান, আনিকা বুশরা প্রমুখ।
গণসংযোগ নগরীর উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেছেন নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, নৌকার বিজয় মানে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বিজয়, শেখ হাসিনার বিজয়, স্বাধীনতা ও উন্নয়নের বিজয়। তাই মেয়র পদে নৌকা প্রতীকে ভোট দিন। তার সাথে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মফিজুর রহমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, নোমান আল মাহমুদ, আবদুল আহাদ, কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউকসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
ধানের শীষের প্রাথী ডা. শাহাদাত হোসেন বাকলিয়াকে স্মার্ট সিটি করার অঙ্গীকার করেন। বাকলিয়ায় গণসংযোগকালে তিনি বলেন, এ এলাকার মানুষের সাথে আমার রক্তের সম্পর্ক। এখানে আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে বাকলিয়াকে একটি আধুনিক, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত, পরিবেশবান্ধব এলাকায় পরিণত করবো। তার সাথে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদল্লাহ আল নোমান ও মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, নগর বিএনপি নেতা আবুল হাশেম বক্কর, আবু সুফিয়ান, জাহাঙ্গীর আলম, ইদ্রিস মিয়া প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভোট

১৫ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ