পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা-ভাঙ্গা পর্যন্ত দেশের প্রথম এক্সপ্রেস মহাসড়ক উদ্বোধনের পর পাল্টে গেছে ওই এলাকার দৃশ্যপট। যাতায়াতে স্বস্তি ফিরেছে। এক্সপ্রেস মহাসড়কটি চালু হওয়ার পর গতকাল শুক্রবার থেকেই সুফল পেতে শুরু করেছেন যাত্রীরা। ঢাকা থেকে মাওয়া যেতে আগে দুই ঘণ্টা সময় লাগলেও, এখন আধা ঘণ্টায় যাওয়া যাচ্ছে।
ঢাকা-মাওয়া রোডে বাস চালক আমিরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-ভাঙ্গা পর্যন্ত দেশের প্রথম এক্সপ্রেস মহাসড়ক খুলে দেয়ার পর এই সড়কে দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যাচ্ছে। নবনির্মিত এ মহাসড়কে বাস চালানোর অনুভ‚তি প্রকাশ করে সাইফুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, দীর্ঘদিন অনেক কষ্ট করে গাড়ি চালিয়েছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হয়েছে। গরমের মধ্যে যাত্রীরা অনেক ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। আজ সুন্দর রাস্তা পেয়ে গাড়ি চালিয়েও আনন্দ পাচ্ছি। ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের স্বাধীন পরিবহনের এই বাসচালকের মতো আনন্দিত যাত্রীরাও। সড়ক যোগাযোগের এ অনন্য অবকাঠামোকে অর্জনের একটি মাইলফলক হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ আরও সহজ হওয়ায়, এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হওয়ার আশা তাদের। তারা বলেন, আমরা খুব আনন্দিত এবং আমরা খুব গর্বিত। দক্ষিণের কয়েকটা জেলার মানুষের বিরাট একটা স্বপ্ন পূরণ হলো। এটা হওয়ার জন্য আমাদের অনেক উন্নয়ন হবে। আমাদের যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হবে। দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে। তার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তারা।
গতকাল শুক্রবার এক্সপ্রেসওয়ে ঘুরে দেখা গেছে, আলাদা লেনে চলছে ছোট যান। দ্রুতগতির যান লেন ধরে একদিকে চলাচল করছে। ক্রসিং এড়াতে আছে উড়াল সেতুসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো। নিজের অনুভ‚তি প্রকাশ করে ঢাকা-মাওয়া রুটের ইলিশ পরিবহনের বাসচালক আল-আমিন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আগে দুই ঘণ্টা লাগত, এখন আধাঘণ্টা লাগছে। ভাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী শাকিল আহমেদ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এই এক্সপ্রেসওয়ে চালু হওয়ায় আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের দরজা আরো খুলে গেল।
কয়েকজন যাত্রীবাহী বাস চালক দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এক্সপ্রেস মহাসড়কটি চালু হওয়ায় এতে ঘুরমুখো যাত্রী, চালক, পরিবহন মালিক সবাই খুশি। যানবাহন খুব কম সময়ের মধ্যে যাত্রীবাহী বাস এমনকি পণ্যবাহী গাড়ীগুলো নিজ নিজ গন্তব্যে দ্রুত পৌঁছাতে পারবে এই ভেবে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পর মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর ও ফরিদপুরে আনন্দ উচ্ছ্বাস করতে দেখা গেছে। ভাঙ্গাবাসীও ভীষণ খুশি। এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পর ভাঙ্গার পথে-ঘাটে প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় এ মহাসড়ক। সবার চোখে-মুখে ছিল খুশির ঝিলিক।
শুক্রবার মুন্সীগঞ্জের মানুষের মধ্যে আলোচনার বিষয় ছিল নবনির্মিত এ ছয় লেনের ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে ঘিরে। মুন্সীগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ হয়েছে। মুজিববর্ষের প্রাক্কালে দৃষ্টিনন্দন এ এক্সপ্রেসওয়ে যান চলাচলের জন্য পুরোপুরি খুলে দেওয়া পুরো দক্ষিণবঙ্গের মানুষ খুশিতে আত্মহারা।
এক্সপ্রেসওয়ের ঢাকা থেকে মাওয়া অংশ ৩৫ কিলোমিটার, পদ্মা নদীর অন্য পার পাঁচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ। পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকা থেকে সরাসরি ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত চলাচল করা যাবে এ এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে। আগামী বছর পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে। তখন ঢাকা থেকে ভাঙ্গা যেতে ৪২ মিনিট লাগবে। নিজস্ব অর্থায়নে এটি নির্মাণ করেছে সরকার। প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
বাংলাদেশে প্রায় ২২ হাজার কিলোমিটার মহাসড়ক থাকলেও এর বেশির ভাগই বিশ্বমানের নয়। মহাসড়কে গাড়ি চলতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয় বিভিন্ন মোড়ে। এতে যানজট ও বিশৃঙ্খলা শুধু নয়, যাত্রীদের ভ্রমণে আনন্দও থাকে না। এক্সপ্রেসওয়ে মোড়হীন, ইচ্ছামতো ডানে ও বাঁয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে চলার ব্যবস্থা রয়েছে। ধীরগতির হালকা যানবাহনের জন্য মূল মহাসড়কের দুই দিকে আছে সার্ভিস লেন। এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২২ জেলার মানুষ যারপরনাই খুশি।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, এটি দেশের যোগাযোগক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। কারণ দেশের বেশির ভাগ মহাসড়ক আধুনিক নয়। এগুলোয় যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে সময় নষ্ট হয়। এ এক্সপ্রেসওয়েতে এক প্রান্তে উঠে অন্য প্রান্তে নামা যাবে বাধা ছাড়াই।
উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এক্সপ্রেসওয়ের যুগে পা রাখল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ এক্সপ্রেসওয়েকে জাতির জন্য মুজিববর্ষের উপহার বলে উল্লেখ করেন স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, একসময় এই ভাঙ্গা পর্যন্ত যেতে হলে স্টিমার বা লঞ্চে যেতে হতো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।