পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১৩০ বছর পূর্বে আরম্ভ হওয়া এ মাহফিলটি প্রতি বৎসর নির্ধারিত তারিখে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ বছর শুক্রবার শেষদিন হওয়ায় বাদ জুমা আখেরি মুনাজাতে রেকর্ড সংখ্যক লোকের গণজমায়েত হওয়ার কথা ছিল। কর্তৃপক্ষও বিষয়টি বিবেচনায় রেখে মাহফিল মাঠ দেড়গুণ সম্প্রসারণ করেছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের ঝুঁকির প্রেক্ষিতে সরকারি সিদ্ধান্তে বড় জমায়েত পরিহার করতে আজকের মাহফিল পরিত্যক্ত করে গতকাল বাদ এশা আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে মাহফিল সমাপ্ত করা হয়।
মাহফিল নাও হতে পারে আশঙ্কার মধ্যে অনেকে সফর প্রোগ্রাম বাতিল করলেও মাহফিলের দ্বিতীয় দিন আখেরি মুনাজাতে ২ বর্গকিলোমিটার ব্যাপী বিস্তৃত মাঠে কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। বাদ মাগরিব জিকির ও তালীমের পরই শুরু হয় আখেরি মুনাজাতের আনুষ্ঠানিকতা। মাহফিলে আগত মুসল্লিদের যাওয়ার সুবিধার্থে প্রথম ওয়াক্তে এশার নামাজ আদায় করে মীলাদ-ক্বিয়ামের মাধ্যমে আখেরি মুনাজাতের কার্যক্রম শুরু হয়।
আখেরি মুনাজাতের পূর্বে ছারছীনা দরবার শরীফের হযরত পীর ছাহেব আলহাজ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ সকলকে তওবা পড়ান ও বাইয়াত করান। বাইয়াত পরবর্তী নসীহতে তিনি সকলকে একজন তরীকতপন্থী হয়ে ইসলামী জিন্দেগী যাপনের পরামর্শ দেন।
পীর ছাহেব বলেন, আমরা আল্লাহর বান্দা। আল্লাহর অসীম দয়ায় আমরা দুনিয়ায় এসেছি ও বেঁচে আছি। আমরা প্রতিনিয়ত আল্লাহর নিয়ামতরাজী অবলীলায় ভোগ করে চলছি। দুনিয়ায় আমরা চিরদিন থাকবো না। আখেরাতে আমাদের আল্লাহর সম্মুখে দাঁড়িয়ে তার দেয়া নেয়ামতের হিসাব দিতে হবে। সুতরাং আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.)-এর নির্দেশিত পথেই আমাদেরকে চলতে হবে।
মাহফিলের দ্বিতীয় দিন সকালে বাদ এশরাক হযরত পীর ছাহেবের বড় ছাহেবজাদা ছারছীনা দরবার শরীফের ভক্ত-মুরীদানের আক্বীদা, আমল ও মুয়ামালাত বিষয়ে নির্দেশনামূলক দীর্ঘ ওয়াজ করেন। তিনি ছারছীনা দরবার শরীফ ও বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর পক্ষে সরকারের নিকট দুটি দাবি জানান- সারা পৃথিবীতে মুসলমানদের ওপর যে জুলুম নির্যাতন চলছে সে বিষয়, সরকারের মাধ্যমে জাতিসংঘকে গঠনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি ও কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবি। দুই দিনব্যাপী এ মাহফিলে করোনাভাইরাসের ঝুঁকির সময়ে ক্ষণে ক্ষণে তওবা এস্তেগফার করে চোখের পানি ফেলে আল্লাহর দরবারে সকল বালা-মুসীবত থেকে রক্ষা পেতে মুনাজাত করা হয়ে।
মাহফিলে দরবার শরীফের বিশিষ্ট আলেম ও ওয়ায়েজগণ আলোচনা করেন। আলোচনাকারীদের মধ্যে ড. মাওলানা মো. কাফীলুদ্দীন সরকার ছালেহী, মাওলানা মো. রূহুল আমিন ছালেহী, মাওলানা মাহমুদুল মুনীর হামীম, মাওলানা মো. রূহুল আমীন আফসারী, মাওলানা মুফতী হায়দার হুসাইন, মাওলানা মো. মুহিব্বুল্লাহ আল মাহমুদ, মাওলানা মো. বোরহান উদ্দিন ছালেহী প্রমূখ ছিলেন। আখেরি মুনাজাতে স্থানীয় সরকারি প্রশাসনিক ও অন্য বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল আখেরি মুনাজাতে লাখ লাখ লোকের রোনাজারীতে এক করুণ পরিস্থিতির অবতারণা হয়। হযরত পীর ছাহেব বিশ্ব মুসলিমের কল্যাণ ও নিরাপত্তাসহ দেশ ও জাতীর হেফাজত ও উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য বারে গাহে এলাহীতে ফরিয়াদ করেন। বিশেষ করে করোনাভাইরাস থেকে এ ঘনবসতিপূর্ণ দেশটির লোকজনের জানের নিরাপত্তা চেয়ে বারবার আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।