Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

করোনা আতঙ্ক, বিশ্ব জুড়ে আকাশপথে বিপর্যয়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০২০, ৫:১৫ পিএম

করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে বাতিল হচ্ছে একের পর এক ফ্লাইট। বিশ্বের অন্যান্য সব খাতের মতোই বিমান পরিবহন খাতও পড়েছে বড়ো ধরনের ক্ষতির মুখে। বিশেষ করে চীন, ইরান, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়াসহ আক্রান্ত দেশগুলোর সঙ্গে বিমান চলাচল বাতিল ও সীমিত করেছে বহু দেশ।

উত্তর আমেরিকা, ল্যাটিন আমেরিকা ও ইউরোপের বিমান চলাচলের ট্র্যাককারী এনওয়াইএসই আরকা এয়ারলাইনস ইনডেক্স থেকে জানা যায়, আমেরিকান এয়ারলাইনসের শেয়ার ৭ দশমিক ৭ শতাংশ পড়ে গেছে। ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ২ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ডেলটার শেয়ার ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গেছে। ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন জানায়, করোনা ভাইরাসের কারণে রাজস্ব আয়ে ২৯০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে। গত এক দশকে প্রথম এ ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ল বিমান চলাচল শিল্প।

বিশ্বের সবচেয়ে নামকরা বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোর অন্যতম কোয়ান্টাস এবং জেটস্টার এয়ারলাইনস বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যাত্রীদের জন্য তাদের ফ্লাইট পরিবর্তন ফি মওকুফ করছে। তারা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এই বিশেষ সুবিধা দেবে। ক্যাথে প্যাসিফিকও ঘোষণা করেছে যে, ৯ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত যত বুকিং দেয়া হয়েছে, তা কোন ফি ছাড়াই ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যাত্রীরা যতবার খুশি পরিবর্তন করতে পারবেন। কাতার এয়ারওয়েজ, আমিরাত, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস, ইতিহাদ, এয়ার নিউ জিল্যান্ড এবং ল্যাটম সহ আরও বেশ কয়েকটি পরিবহন সংস্থা তাদের বিমান পরিবর্তন করতে ইচ্ছুক যাত্রীদের বিশেষ ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছে।

সারা বিশ্বের বেশ কয়েকটি অন্যান্য এয়ারলাইন্সও অনুরূপ পদক্ষেপ অনুসরণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারলাইনস চলতি মাসের শুরুর দিকে ফ্লাইট পরিবর্তনের জন্য ফি মওকুফের ঘোষণা দিয়েছে। মার্চ মাসের বুকিংয়ের ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য পরিবহণ সংস্থাগুলোও বিশেষ ছাড় দিচ্ছে। সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি, বিমান সংস্থাগুলো ভাড়াও কমিয়ে দিয়েছে।

বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের কারণে সংকট তৈরি হওয়ায় সারা বিশ্বে চালানো ১৪২টি ফ্লাইটের মধ্যে ৬৬টি আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ বিমান। বিশ্ব জুড়ে গত দুই মাসে ২ লাখেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থা (আইসিএও) জানিয়েছে, করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯-এর প্রভাবে বিশ্বের বিমান সংস্থাগুলোকে ৫ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত লোকসানের মাশুল গুনতে হতে পারে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে বিমান চলাচল ৩৫ শতাংশ কমে এসেছে। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা-আইএটিএ এটিকে গত এক দশকে ভয়াবহ বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করে বলেছে, মূলত করোনা ভাইরাসের কারণে যাত্রীদের ভ্রমণ অনীহা এবং ভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিমান চলাচল বন্ধ করেছে বিভিন্ন দেশ। ফ্লাইটগুলোর ধারণক্ষমতার চেয়ে কম যাত্রী হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।

করোনা আতঙ্কে যাত্রীর সংকট আর বিভিন্ন দেশে বিমানযোগাযোগ বন্ধের কারণে ক্ষতির মুখে পড়ছে বিমান পরিবহন সংস্থাগুলো। বড়ো বড়ো বিমানবন্দর ফাঁকা হয়ে পড়েছে। অনেক এয়ারলাইনস তাদের কর্মীদের বাধ্যতামূলক অবৈতনিক ছুটিতে পাঠিয়েছে। অনেক বিমান সংস্থার পাইলট এবং কর্মীরা ভাইরাসে আক্রান্তের ভয়ে কাজে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দেশে দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় বিশ্ব পর্যটনে ধস নেমেছে। সূত্র: ফোর্বস, ট্রাভেলার।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিমান

১৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ