Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাবান্ধায় জীবন বদল

স্থল বন্দরের জন্য গ্রামে শহরের জীবন

স্টালিন সরকার (বাংলাবান্ধা থেকে ফিরে) | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০২০, ১২:০২ এএম

হিমালয় কন্যা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সীমান্ত নদী মহানন্দার ধারে বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর পাল্টে দিয়েছে লাখো মানুষের যাপিত জীবন। যাদের সংসারে ছিল নিত্য টানাপোড়েন; বন্দরের কারণে কেউ ব্যবসা কেউ অন্য কাজ করে সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন। যারা বেকার ছিলেন তারা কোনো না কোনো কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। সবাই কর্মব্যস্ত; কেউ ট্রাকে পাথর তুলছেন, কেউ পাথর ভাঙছেন, কেউ বা আমদানি করা পণ্য নিয়ে মেতে উঠেছেন। বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর বদলে দিয়েছে মানুষের জীবনচিত্র। বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের বাসিন্দা মেসার্স সরকার ট্রেডার্সের মালিক মো. রাশেদ আলী জানালেন, স্থল বন্দর গোটা এলাকার মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে।
মহানন্দা নদীর তীর ও ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন প্রায় ১০ একর জমিতে ১৯৯৭ সালে স্থাপিত হয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। এটা বাংলাদেশের একমাত্র স্থলবন্দর যার মাধ্যমে চারটি দেশের সঙ্গে সুদৃঢ় যোগাযোগ গড়ে উঠেছে। নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের পণ্য বিনিময় হয়ে থাকে এ স্থলবন্দরে। ভারতের সঙ্গে আমদানি-রফতানি ছাড়াও এই স্থল বন্দর ভুটানের সঙ্গেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে এ বন্দর ব্যবহার করে চীন থেকেও পণ্য আনা নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দেশের সর্ব উত্তরের জেলা শহর পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়া যাচ্ছি। পথে কালান্দিগঞ্জ বাজার পার হয়েই বামে তেঁতুলিয়া রোড ফেলে ডানদিকে বাংলাবান্ধার দিকে ছুড়ে চলেছে বাস। বাংলাদেশের চিরচেনা রাস্তা নয়, এ যেন ইউরোপ-আমেরিকার কোনোর পাকা সড়ক। পথেই চোখে পড়ে ধানের জমিতে চা বাগান আর পাথরের স্তূপ। কয়েক মিনিটের মধ্যেই পৌঁছেই চোখে পড়ল জিরো পয়েন্ট ফটকের কাছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও ভারতের জাতীয় পতাকা টানানো। অনুমতি ছাড়া এর ভেতরে প্রবেশ করা যায় না। ভারত, নেপাল বা ভুটান থেকে আসা বিভিন্ন মালবাহী সারি সারি ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। ইমিগ্রেশন অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক করে কেউ পায়ে হেঁটে কেউ ব্যাটারির গাড়িতে সীমান্তের ওপার যাচ্ছেন, আসছে। ইনকিলাবের তেঁতুলিয়া উপজেলা সংবাদদাতা আগেই বিজিবির অনুমতি নিয়ে রেখেছিলেন। ভেতরে যেতে অসুবিধা হলো না। ভৌগলিকভাবে বাংলাবান্ধা ভারতের পেটে ঢুকে গেছে। বলতে গেলে ভারতের, পশ্চিম দিনাজপুর, শিলিগুড়ি, জলপাইগুঁড়ি জেলার ভেতরেই যেন তেঁতুলিয়া। তেঁতুলিয়ার চারপাশে রয়েছে ভারতের বিধান নগর, চাত্তের হাট, ঘোসপুর, রাহমু, ফুলবাড়ি ও আমবাড়িয়া। আরও চল্লিশ মাইল গেলেই নেপাল।

স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বাংলাবান্ধা দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন গড়ে একহাজার মেট্রিক টন পাথর ও নেপাল থেকে গড়ে প্রতিদিন ১০০ মেট্রিক টন ডাল আসে। আর বাংলাদেশ থেকে এখন নেপাল ও ভারতে রফতানি হচ্ছে প্রচুর আলু। জিরো পয়েন্টে যাওয়ার সময় চোখে পড়ে পাথরের মেলা। বন্দরের কয়েক গজ দূরেই পাথর ভাঙছেন কয়েকজন শ্রমিক। তাদের সঙ্গে কথা হয়। আবদুল জলিল নামের এক পাথর শ্রমিক জানালেন, ভারত থেকে প্রতিদিন বাংলাদেশে যে পাথর আসে তা জিরো পয়েন্টের খুব কাছেই রাস্তার পাশে মজুদ করে রাখা হয়। মেশিনের সহায়তায় ভাঙার পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যায় সেগুলো। মূলত সারাদেশের ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যান। বর্তমানে পদ্মা সেতুর বেশির ভাগ পাথর বাংলাবান্ধা থেকেই নেয়া হচ্ছে। আরেকজন শ্রমিক জানান, জিরো পয়েন্ট আশপাশের রাস্তার দু’পাশে পাথরের বিশাল বিশাল পাহাড় দেখছেন। এখানে স্থানীয় নারী-পুরুষ তাল মিলিয়ে কাজ করে। অর্থনৈতিক উন্নতির কারণে গ্রামের মানুষ শহরের মানুষের মতো হয়ে গেছে।
পাসপোর্ট ও ভিসা নিয়ে ভারত, নেপাল বা ভুটানগামী মানুষ পায়ে হেঁটে বন্দর দিয়ে সীমান্ত পার হচ্ছেন। দেশের বাইরে থেকে আসা প্রিয়জনের জন্য অনেকে অপেক্ষা করছেন। সবার জন্য বসার ব্যবস্থা আছে। দেখা গেল কেউ মাইক্রো নিয়ে, কেউ মোটর সাইকেল, কেউ বাইক, কেউবা ব্যাটারি চালিত যানবাহন নিয়ে অপেক্ষা করছেন ফুলবাড়িয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাবান্ধায় আসা স্বজনদের জন্য। কথা হয় বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরের সহকারী কমিশনার মো. শামসুল হকের সঙ্গে। তিনি জানালেন, ভৌগলিকগত কারণে বন্দরের সম্ভাবনার কথা। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, চীন এই ৫ দেশ যদি নিজ নিজ দেশের স্বার্থে এই বন্দর ব্যবহারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সবাই লাভবান হবেন। তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে প্রায় ১০ একর জমিতে নির্মিত হয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। পরবর্তীতে জমি তেমন বাড়েনি। ডাম্পিং এর যায়গা কম। বন্দরের লোডিং-আনলোডিং এর জন্য ৩০ জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। সড়ক পথের পাশাপাশি রেলের লাইন এলে ৫ দেশের বাণিজ্যে আরো বেশি সুবিধা হবে। এই বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর দেশের অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ দিতে পারে।

বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের ফাহিম ট্রেডার্সের মালিক জানালেন, এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর এবং নেপাল থেকে ডাল আমদানি করা হয়ে থাকে। ২০১১ সালের ২২ জানুয়ারি ভারতের সাথে চালু হওয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের আওতায় পুরানো একটি এস,আর,ও বলে ভারত থেকে বোল্ডর পাথর আমদানি করা হয়। পক্ষান্তরে এই বন্দর দিয়ে ভারতে যাচ্ছে টাঙ্গাইল শাড়ী, ফার্নিচার, কমলপানিয়, চানাচুরসহ নানান পণ্য। এ ছাড়াও এই বন্দর দিয়ে নেপালে যাচ্ছে বাংলাদেশে উৎপাদিত আলু, পাট, ব্যাটারি, কোমলপানিয়, সাবান, বিস্কুট, চানাচুর, জুস, কাঁচসহ বিভিন্ন দ্রব্য। নেপাল থেকে মসুর ডালসহ অল্প সংখ্যক পণ্য আমদানি হচ্ছে। জিরো পয়েন্টের ২০ গজ দূরে দায়ের দোকানদার ফরিদ আলী জানালেন, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন আরো উন্নত হলে রংপুর বিভাগের হাজারো পর্যটক, ভারতগামী রোগী, ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন। অন্যদিকে নেপাল, ভুটান, দার্জিলিং, গ্যাংটক, ডুয়ার্স ভ্রমণকারী পর্যটকরা অনায়াসে বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে তেঁতুলিয়ার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

ইমিগ্রেশন অফিসের আরো কয়েকজন কর্মচারী, স্থানীয় চা-পান দোকানদার ও স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে বন্দরের খুঁটিনাটি জানতে চাওয়া হয়। তেঁতুলিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক জানালেন, বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ী স্থলবন্দরের সম্ভাবনার কথা। তিনি তেঁতুলিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা। বললেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যতগুলো স্থলবন্দর রয়েছে বাংলাবান্ধা ফুলবাড়ী স্থলবন্দর ভৌগলিক কারণে বহু মাত্রিক বন্দর। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে নেপাল মাত্র ৬১ কিলোমিটার, ভুটান মাত্র ৬৮ কিলোমিটার এবং চীন সীমান্ত মাত্র ২শ’ কিলোমিটার। বাংলাবান্ধা বন্দর ৫টি বন্ধু-প্রতিম দেশকে একই সূত্রে আবদ্ধ করতে পারে। ভারত বাংলাদেশের মধ্যে যতগুলো স্থলবন্দর রয়েছে এত কাছে ভারতীয় শিলিগুড়ির ন্যায় এত বড় সমৃদ্ধ শহর আর নেই। বাংলাবান্ধা থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শিলিগুড়ি শহর। দার্জিলিং এই বন্দর থেকে মাত্র ৫৮ কিলোমিটার। অন্যদিকে এই স্থলবন্দর থেকে বাংলাদেশের উপজেলা শহর তেঁতুলিয়া দূরত্ব মাত্র ১৮ কিলোমিটার। পঞ্চগড় জেলা শহরের দূরত্ব মাত্র ৫৪ কিলোমিটার এবং রাজধানী শহর ঢাকার দূরত্ব ৬০০ কিলোমিটার।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর তথা জিরো পয়েন্টের সঙ্গেই রয়েছে বাজার। বন্দর দিয়ে ভারতে যাতায়াত করা মানুষজন, পণ্য আনা নেয়া করা ট্রাকের ড্রাইভার, শ্রমিক, ইমিগ্রেশন অফিসে কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষ হোটেলে খান, পণ্য ক্রয় করেন। কিন্তু ৯২ ভাগ মুসলমানের বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থল বন্দরে মসজিদ নেই। নামাজের জন্য ছোট্ট একটি চালাঘর রয়েছে, কিন্তু সেটা পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের আসমানী কবিতার রসুলপুরের রহিমউদ্দিনের ছোট্ট ঘরের মতোই দূরবস্থা। গুরুত্বপূর্ণ স্থল বন্দরে মসজিদ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেল। তবে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন অফিসে কর্মরত এক কর্মকর্তা জানালেন, মাত্র ১০ একর জমির উপর বন্দর। তাই মসজিদ নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। বন্দর সম্প্রসারণে ৩০ একর জমি নেয়ার আলোচনা চলছে; তখন মসজিদ নির্মাণ করা হতে পারে।

তেঁতুলিয়া উপজেলাজুড়ে কার্যত দিগন্তজোড়া সমতলের চা বাগান। ভোজনপুর গ্রামের আবদুর রশিদ জানালেন, আগে এলাকার মানুষের প্রধান কাজ ছিল কৃষি। জমিতে তেমন ধান না হওয়ায় মানুষ নিদারুণ কস্টে দিন যাপন করেছে। কিন্তু বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর চালু হওয়ার পর পাল্টে গেছে মানুষের জীবন। স্থানীয় মানুষ কিছু না কিছু কাছ করছে। মরহুম মো. নরুল ইসলামের পুত্র রাশেদ জানালেন তারা চার ভাই এক সময় কৃষি কাজ করলেও এখন আমদানি-রফতানি ব্যবসা করছেন। তিনি বলেন, বাংলাবান্ধা পুরনো স্থল বন্দর। তবে এই বন্দর ভারতের ফুলবাড়ী স্থলবন্দরের সম্ভাবনার প্রথম যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৭ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর। তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মদ এবং রাজকীয় নেপাল সরকারের কৃষিমন্ত্রী চক্র প্রসাদ বাসতুলা বাংলাবান্ধা বন্দরে বাংলাদেশ-নেপাল দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উদ্বোধন করেন। তবে বন্দরটি অধিক গতি পায় ২০১১ সালের ২২ জানুয়ারি। ওই দিন বাংলাবান্ধায় বাংলাদেশ সরকারের কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এবং ভারতের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ও পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জীর দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল চালু হয়।

বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরের কারণে মানুষের জীবনই শুধু পাল্টায়নি; তেঁতুলিয়াকে পর্যটন নগরীতে পরিণত হয়েছে। রত্মগর্ভা মহানন্দা নদী ভারত ও বাংলাদেশকে রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত করেছে। নদীর ওপারে ভারতের দার্জিলিং জেলার অধীন শিলিগুড়ি মহকুমা ও ফুলবাড়ী থানা। তেঁতুলিয়ার প্রাচীন ডাকবাংলো থেকে সন্ধ্যাবেলায় দেখা যায় দার্জিলিং শহরের আলোকিত ভুবন, কাঞ্চনজঙ্ঘার পদতলে গড়ে উঠা আলোকিত পাহাড়ের শহর। এখান থেকে শীতকালে স্পষ্ট ফুটে উঠে রূপালী কাঞ্চনজঙ্ঘা। যেকোনো মানুষ উপভোগ করতে পারেন কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপালী প্রকৃতি। এখান থেকে দেখা যায় ভারতের আন্ডারগ্রাউন্ড সামরিক বিমান ঘাঁটি বাগডোগায় বিমান উঠানামার দৃশ্য। তেঁতুলিয়ায় মহানন্দা নদীর তীরে টিলার ওপর আছে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত মনোরম ডাকবাংলো। সেখান থেকে সহজেই দেখা যায় ভারতীয় সীমান্তের মানুষ ও বিএসএফের কর্মকান্ড। নদীর দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় কিছু মানুষ মাছের বদলে খুঁজছেন পাথর। সমতল ভূমি খুঁড়লে পাওয়া যায় বিভিন্ন আকৃতির মানসম্পন্ন পাথর। যা দেশের পাথর চাহিদার যোগান দিচ্ছে। গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শিল্প চা, কমলা, মসলা, বিভিন্ন ধরনের খামার ও পাথরশিল্প।

ঢাকা থেকে এসি বাসে পঞ্চগড় যাওয়ার সময় পাশের সিটে বসে যাচ্ছিলেন একজন। শরীর লাগানো পাশাপাশি সিটে কয়েক ঘণ্টা জার্নিতে তার সঙ্গে কথা হয়নি। গভীর রাতে মাঝপথে হোটেলে বিরতির সময় কফি শপে দেখেই জিজ্ঞাস করি আপনি অমুন বাসে যাচ্ছেন? ভদ্রলোক চিনতে পারেন। কথায় কথায় জানালেন তিনি বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারিতে পাথর কিনে ট্রাকে করে নিয়ে পদ্মা সেতুতে দিচ্ছেন। শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে তার অফিস। স্থল বন্দর দেখতে যাচ্ছি শুনে বললেন, বাংলাদেশের শতকরা ৯০ ভাগ রফতানি ও আমদানিতে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার হচ্ছে। আর মাংলা বন্দরের ধারণ ক্ষমতার শতকরা মাত্র ৫০ ভাগ বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরের রয়েছে অপার সম্ভাবনা। ডেনমার্ক ও সুইডেনের যৌথভাবে স্থাপিত কোপেনহেগেন মালমো পোর্ট (সিএমপি) ওই দুই দেশ ছাড়াও প্রতিবেশী দেশগুলো ব্যবহার করায় ওই বন্দর একটি বাণিজ্যিক হাব-এ পরিণত হয়েছে। এশিয়া মহাদেশে সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান এবং হংকং তাদের বন্দরগুলো ব্যাপকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভ করেছে। জার্মানির বড় ও মাঝারি ১১টি বন্দর থাকার পরেও তারা নেদারল্যান্ডের রটারডাম বন্দর ব্যবহার করছে। পৃথিবীর অনেক দেশ অর্থনৈতিক উন্নতির জন্যই তাদের বন্দরগুলো আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরের উন্নয়ন করে যদি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, চীন, ভুটান এই ৫ দেশ ব্যবহার করে তাহলে অর্থনৈতিকভাবে সব দেশই লাভবান হবে।

ফটকা ব্যবসায়ী মনে করে বাসে ওই পাথর ব্যবসায়ির কথায় তেমন গুরুত্ব দেইনি। কিন্তু বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরের ভৌগলিকগত অবস্থান এবং সীমিত ব্যবহারেও কয়েক বছরে মানুষের বদলে যাওয়া জীবনের গল্প শুনে মনে হলো সত্যিই বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর বাংলাদেশ, ভারত, চীন, নেপাল, ভুটানের বাণিজ্যিক হাব- এ পরিণত করা যেতে পারে।



 

Show all comments
  • কায়সার মুহম্মদ ফাহাদ ৮ মার্চ, ২০২০, ১২:৪৫ এএম says : 0
    ভালো নিউজ, সরকারের শুভ কামনা রইলো।
    Total Reply(0) Reply
  • মেহেদী ৮ মার্চ, ২০২০, ১২:৪৬ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ, দেশের প্রতিটা সীমান্ত জেলায় স্থল বন্দর গড়ে তোলা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • জাহিদ খান ৮ মার্চ, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
    সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার জন্য। মানুসের জীবন বদলাবে কিয়ামতের আগে অতএব এটা নিয়ে কারোর কৃতিত্ব নেওয়ার কিছু নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • জাবের পিনটু ৮ মার্চ, ২০২০, ১২:৪৯ এএম says : 0
    বাংলাবান্ধায় স্থল বন্দর নির্মাণ করায় সরকারের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। এগিয়ে যাক প্রিয় বাংলাদেশ।
    Total Reply(0) Reply
  • মরিয়ম বিবি ৮ মার্চ, ২০২০, ১২:৫০ এএম says : 0
    বন্দরে বহু মানৃুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। তাদের পরিবারের লোকজনের জীবনমান বেড়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • আবু তাহের আনসারী ৮ মার্চ, ২০২০, ১:৫১ পিএম says : 0
    নিউজটি তথ্যবহুল হওয়ায় ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্থল বন্দর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ