পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গোটা খুলনায় এখন রাজনীতির কোন চমক নেই। জৌলুস নেই। অতীত গৌরব নেই, নেই কোন দলীয় কর্মকাÐ। রাজপথ কাপানো বড় বড় মিছিল এখন আর আগের মত চোখে পড়ে না। ক্ষমতাসীন দল দু’একটি দলীয় ও রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি পালন করলেও বিএনপি মাঠে ময়দানে একবারেই নির্বিকার। মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত আর আন্দোলন সংগ্রামের ব্যানারে বিএনপি আর মাঠ কাঁপাতে পারছে না। এছাড়া খুলনার রাজনীতিতে জামাত শিবির যেন এখন নির্বাসিত। সব মিলিয়ে ঝিমিয়ে পড়েছে খুলনার রাজনীতি।
ক্ষমতাসীন দলটি শেখ পরিবারের প্রেসক্রিপশনে দুই প্রবীন ত্যাগী শীর্ষ নেতার কর্মকান্ডে কিছুটা গতিশীল হলেও হামলা মামলার শিকার হয়ে বিএনপি’র এক নেতার একচ্ছত্র নেতৃত্বে নিভু নিভু প্রদীপের মত চলছে দলটি। খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ একজন প্রবীন নেতা ও সাবেক বিরোধী দলীয় হুইপ। তিনি দলের ক্রান্তিলগ্নে হাল ধরেছেন। বিভিন্ন সময় দলের গ্রæপিং মিটিয়েছেন। আর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক মহানগরে একক নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সবমিলিয়ে মেয়র খালেক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ দলের কাÐারী হিসেবে কাজ করছেন।
এছাড়া তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে মাঠ দখলে রয়েছে খুলনা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সদর আওয়ামী লীগ সভাপতি এ্যাড সাইফুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান জামাল প্রমুখ।
সূত্রমতে, এক সময়ের দাপুটে রাজনীতিবিদ সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাউদ্দিন ইউসুফ, বিএনপিদলীয় সাবেক স্পিকার অ্যাডভোকেট শেখ রাজ্জাক আলী ও আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমামের দরদি অভিভাবকত্ব এখন নেই। খুলনার রাজনীতি মানে একসময় শেখ হারুনুর রশীদ, বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, অ্যাডভোকেট শেখ রাজ্জাক আলী, অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম, তালুকদার আবদুল খালেক, এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা, এম নুরুল ইসলাম (দাদু ভাই), এস এম এ রব ও সেকেন্দার আলী ডালিমকে বুঝত দেশের মানুষ। কিন্তু এদের অনেকেরই শূন্যতায় নড়বড়ে হয়ে গেছে জাতীয় রাজনীতিতে খুলনার শক্ত প্রতিনিধিত্ব। তবে সেই শূন্যতা ধীরে ধীরে পূরণ করছেন তরুণ নেতৃত্ব। ফলে পালা বদল ঘটছে খুলনার সার্বিক রাজনীতিতে।
জানা যায়, খুলনার রাজনীতিতে ষাটের দশকের বর্ষীয়ান নেতা সাবেক হুইপ আশরাফ হোসেন, মহানগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা এম নুরুল ইসলাম রাজনীতির শেষ সময়ে বয়সের কাছে হার মেনেছেন। এদিকে রাজনীতিতে একপ্রকার কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান ও বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগার লবীর মতো প্রজ্ঞাবান নেতাও। আর বিএনপিতে একক কর্তৃত্ব রয়েছে মহানগর সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুুর হাতে।
এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতির খুলনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ। এরা ছাত্র রাজনীতি থেকে এ পর্যন্ত ত্যাগের মহিমায় দলটির সাথে রাজপথে আছেন এবং বিভিন্ন সংকটময় মুহুর্তে তারা দলের হাল ধরেছেন।
এদিকে, রাজনৈতিক হামলা-মামলা ও পুলিশের গ্রেফতার আতঙ্কে মাঠের রাজনীতিতে পিছিয়ে পড়েছে বিএনপি। এক্ষেত্রে সরকার পতনের আন্দোলনের পরিবর্তে সামাজিক সমস্যা নিরসনের দাবিতে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে কৌশলী ভূমিকা নিয়েছে দলটি।
বিএনপির নগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, বিগত দিনে রাজনৈতিক প্রতিকূলতায় তৃণমূলে অফিস কেন্দ্রিক কর্মসূচি ছাড়া বিএনপি অন্য কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। তবে মাঠ পর্যায়ে ঘুরে দাঁড়াতে দলে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক তারিকুল ইসলাম বলেন, শক্তিশালী সংগঠন ছাড়া কার্যকর আন্দোলন গড়ে তোলা যায় না। ধীরে ধীরে নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছে। তাদের মধ্যে দমন-নিপীড়নের যে ভীতি কাজ করছিল তার বাইরে এসে তারা রাজপথে নেমেছে। এদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা বলেন, বিএনপি এখন দলের পুনর্গঠনের দিকে নজর দিয়েছে। তৃণমূলে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি করা হবে। পূর্ণাঙ্গ শক্তি সঞ্চয় করেই বিএনপি চূড়ান্ত আন্দোলনে মাঠে নামবে।
অপরদিকে, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ। এরপর তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। ফলে নিজের ঘরেই চাপের মুখে থাকা সাবেক এই সংসদ সদস্য স্থানীয় রাজনীতিতে নিজেকে কিছুটা গুটিয়ে রেখেছেন। তার অনুসারীরাও দোদুল্যমানতায় সাংগঠনিক কাজে প্রায় নিষ্ক্রিয়।
আর ক্ষোভ-অভিমান প্রকাশ করে মহানগর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি খুলনা-২ আসনে সংসদ সদস্য ছিলাম। তারপরও মাত্র ২০ লাখ টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপনের অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা হয়েছে। এটা পরিকল্পিত। রাজনীতিতে উত্থান-পতন থাকে। আমরা কেন্দ্রীয় নির্দেশ অনুযায়ী দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার জন্য কাজ শুরু করেছি।’
অন্যদিকে জাতীয় পার্টি খুলনা মহানগরের সাবেক সভাপতি আবদুল গফ্ফার বিশ্বাস দলে ফিরেছেন। পাশাপাশি কমিটি গঠন ও সভা-সমাবেশের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে সরব রয়েছে জেলা জাতীয় পার্টি। অপরদিকে নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার ও প্রকাশ্য সাংগঠনিক কর্মকান্ড না থাকায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে মহানগর ও জেলা জামায়াত। আর ধারাবাহিক কর্মসূচিতে রাজনীতির মাঠে জায়গা করে নিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সাংগঠনিকভাবে গতিশীল ও শক্তিশালী করতে নানা কারণে জাপা থেকে বেরিয়ে যাওয়া অভিমানী নেতাদের ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।