পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার স্বাধীনতাকে বিক্রি করে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এরা নতজানু সরকার, পুতুল সরকার। তাদেরকে দিয়ে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ হবে না। আমাদের স্বাধীনতাকে তারা (সরকার) রক্ষা করতে পারবে না, এই স্বাধীনতাকে তারা বিক্রি করে দিচ্ছে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন যে, ভারতে আমাদের সম্পর্ক হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক যদি হবে তাহলে এতো ভালো সম্পর্ক তাহলে এনআরসি তৈরি করে বাংলাদেশী বংশোদ্ভুতদেরকে আজকে তারা (ভারত) জোর করে ফেরত পাঠিয়ে দেবে। বার বার তাদের মন্ত্রীরা বলেছে, অবৈধ বাংলাদেশীদের আমরা ফেরত পাঠিয়ে দেবো। অথচ সরকার এখনো বলছে যে, এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
বিদ্যুৎ এবং ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপির উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল ১১টা থেকে একঘন্টার এই কর্মসূচি ফুটপাতে দাড়িয়ে নেতা-কর্মীরা বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতেও শ্লোগান দেয়। সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা করে ভারতের সাথে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা দেখবেন আমাদের পররাষ্ট্র নীতিকে তারা (সরকার) সর্বনাশ করে ফেলেছে। রোহিঙ্গা সমস্যা আজ পর্যন্ত সরকার সমাধান করতে পারে নাই, পৌনে দুই বছর হয়ে গেলো। অবশ্যই অনেকে বলে রোহিঙ্গা সমস্যা তারা নিজেরাই জিয়ে রেখেছে। এটা দিয়ে তাদের লাভ হয়। পশ্চিমা বিশ্বের একটা সমর্থন পাওয়া যায়, এইড আসে, সাহায্য আসে, সেটা থেকে কিছু ভাগ-বাটোয়ারাও পাওয়া যায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আমার সীমান্তে মানুষ হত্যা করা হয়, সেই হত্যা বন্ধ করবার জন্য কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা তারা (সরকার) গ্রহণ করেনি। সীমান্ত দিয়ে যে নদীগুলো ভারত থেকে আমাদের দেশে এসেছে সেই নদীগুলোর পানির কোনো ব্যবস্থা আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। তিস্তা নদীর পানির ব্যবস্থা আমরা করতে পারেনি। অথচ ফেনী নদী পানি আমরা দিয়ে দিয়েছি। কানেকটিভিটি দিয়েছি, পোর্ট ব্যবহার করতে দিয়েছি। সব কিছু দিয়েছি। অথচ আমরা একাত্তর সালে যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। আমাদেরকে অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে, আমাদেরকে জেগে উঠতে হবে। আসুন আমরা সবাই জেগে উঠি। আপনি জাগেন, আপনি জাগেন, সবাই জাগি, জেগে আমরা এই ভয়াবহ দানব, এই দানবকে আমরা পরাভূত করি এবং জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করি- এই হোক আমাদের শপথ।
সরকারের কঠোর সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, এই সরকার লুটেরা সরকার, এই সরকার ব্যর্থ সরকার, এই সরকার জবরদখলকারী সরকার। আওয়ামী রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ দেউলিয়া হয়ে গেছে। সেই কারণে এখন সে জোর করে রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করে বন্দুক-পিস্তল দিয়ে ক্ষমতা দখল করে আছে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- বাংলাদেশের সম্পদকে লুট করে বিদেশে পাঁচার করা।
তিনি বলেন, এই সরকার বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ব্যাংকিং সেক্টার ধবংস করেছে, অর্থনীতিকে ধবংস করেছে, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধবংস করেছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধবংস করেছে, আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিচ্ছুই না। তারা সুপরিকল্পতভাবে সংবিধানে কেটে-সেটে নষ্ট করে দিয়ে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে একটা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে এবং একটা একনায়কতন্ত্র ফ্যাসিবাদী সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে। আমাদের স্বাধীনতা আমাদেরকে রক্ষা করতে হবে, আমাদের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে হবে, আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিয়ে আসতে হবে।
বিদ্যুৎ-পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না আসলে ‘জনগণের আন্দোলনে’ সরকার ভেসে যাবে হুশিয়ার করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই মুহুর্তে পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাসের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করুন অন্যথায় জনগণের উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হবে, সেখানে আপনি (সরকার) ভেসে যাবেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১০ বছরে পানির দাম কমপক্ষে দশবার বেড়েছে এবং সেই পানি যে পানি মুখে দেয়া যায় না, খাওয়া যায় না। বিদ্যুতের দাম আগে ৮ বার বেড়েছে। কারণ কী? এই যে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে তারা যে সমস্ত লুট করেছে, প্রতিদিন লুট করছে তাদের ভর্তুকি দেয়ার জন্য জনগণের পকেট কাটতে তারা বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। তারা যে চুক্তিগুলো করেছে যদি কোনো পাওয়ার প্ল্যান্ট বিদ্যুৎ সরবারহ না করে তারপরেও তাকে পয়সা দিতে হবে। অর্থাৎ প্রতিবছর তাদের ৫১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এই টাকা বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট থেকে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এই সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তারা যেহেতু জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি, তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় এসছে। সুতরাং তাদের জনগণের দুঃখ-দুর্দশা বুঝার মতো কোনো ক্ষমতাই নেই। আবার তাদের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, ‘বিদ্যুতের দাম অতি সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা মেনে নেন।’ জনগণ মেনে নেবে না। আপনারা গত ১২ বছর ধরে জনগণের ওপর যে অত্যাচার-নিপীড়ন-নির্যাতন-হত্যার যে স্টিমরোলার চালাচ্ছেন জনগণ কখনোই তা আর মেনে নেবে না। আপনাদেরকে অবশ্যই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে, কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
বিএনপির য্গ্মু মহাসচিব ও মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় এই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা এজেডএম জাহিদ হোসেন, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, মীর সরফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল এবং অঙ্গসংগঠনের মধ্যে য্বুদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।