নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলছেন প্রায় ১৪ বছর হয়। চাপ জয় করার ক্ষমতা শিখেছেন আগেই। তারপরও সা¤প্রতিক সময়ে তাকে ঘিরে সমালোচনাটা ছিল যেন অনেক বেশিই। তাও উতরে গেলেন সহজেই। সব চাপ জয় করে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি তুলেই যেন সবকিছুর জবাব দিলেন তামিম ইকবাল। তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের কল্যাণে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েও স্বস্তি পায়নি বাংলাদেশ।
সারাবিশ্বের আতঙ্ক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর বাংলাদেশকে একদিনের জন্য হলেও আতঙ্কে রাখলেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যান ডোনান্ড তিরিপানো। চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে ৩২৩ রানের লক্ষ্যে উল্টো জয়ের স্বপ্ন দেখান তিনি জিম্বাবুয়েকে। অবশ্য শেষ বল পর্যন্ত জমে থাকা উত্তেজনাকর ম্যাচে অঘটনের জন্ম হয়নি। শেষ হাসি হেসেছে বাংলাদেশই। শেষ ৪ বলে প্রয়োজন ১৮। টানা দুই ছক্কা মেরে ম্যাচ জিম্বাবুয়ের দিকে নিয়ে এসেছিলেন ডোনাল্ড তিরিপানো। তবে ২ বলে ছয় রানের সমীকরণ মেলাতে পারেননি তিনি। দুটি দারুণ ডেলিভারিতে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান আল আমিন হোসেন। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ ৪ রানে জিতে স্বাগতিকরা সিরিজ জিতেছে এক ম্যাচ আগেই।
৩২২ রান তাড়ায় জিম্বাবুয়ে ৮ উইকেটে করেছে ৩১৮ রান। ২৮ বলে পাঁচ ছক্কা ও দুই চারে ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন তিরিপানো। ৪ রানের জয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩২২ রান তুলে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড গড়েছিল বাংলাদেশ। পরের ম্যাচেই সে রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ল টাইগাররা। আর এর সবটাই সম্ভব হয়েছে তামিমের সৌজন্যে। তার ১৫৮ রানের ইনিংসটি ওয়ানডেতে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যেও সর্বোচ্চ। তবে সংগ্রহটা আরও বড় হতে পারত। কারণ তামিমের বিদায়ের পর ২৬ বলে আরও ৩টি উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩০ রান যোগ করতে পেরেছে বাংলাদেশ।
এদিন শুরু থেকেই দারুণ ব্যাট করতে থাকেন তামিম। সঙ্গী লিটন কুমার দাসও ছিলেন সাবলীল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হয়ে যান লিটন। কার্ল মুম্বার করা সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলটি ড্রাইভ করেছিলেন তামিম। বোলার নিজেই ফিরতি বল ধরতে গেলে তার হাতে লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে। ওইদিকে রান নিতে উইকেট ছেড়ে বেরিয়েছিলেন লিটন। ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। আগেই স্টাম্প ভাঙলে রানআউট হয়ে ফিরতে হয় লিটনকে।
তবে নাজমুল হোসেন শান্তর রানআউটে দায় ছিল তামিমের। ওয়াসলি মাধেভেরের লেগ স্টাম্পে রাখা বলটি ঠিকভাবে খেলতে পারেননি শান্ত। রান নিতে চাননি। কিন্তু তামিম চেয়েছিলেন। উইকেট ছেড়ে প্রায় অন্য প্রান্তে চলে আসেন। তাই বাধ্য হয়েই নিজের উইকেট স্যাক্রিফাইস করেন এ তরুণ।
দুই রানআউটের পর অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে জুটি বাঁধেন তামিম। গড়েন ৮৭ রানের দারুণ এক জুটি। তবে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ১০৬ রানের জুটিতেই বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর শেষ দিকে মোহাম্মদ মিঠুনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৩২২ রানের বড় সংগ্রহই পায় বাংলাদেশ।
জবাবে জয়ের খুব কাছে গিয়েও মাত্র ৪ রানে হেরেছে জিম্বাবুয়ে। ঘাম ঝরানো এই জয়ে সিরিজও নিশ্চিত হয়েছে মাশরাফির দলের।
স্কোর কার্ড
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে, ২য় ওয়ানডে
টস : বাংলাদেশ (ব্যাটিং), সিলেট
বাংলাদেশ ইনিংস রান বল ৪ ৬
তামিম ক মুতম্বজি ব মুম্বা ১৫৮ ১৩৬ ২০ ৩
লিটন রানআউট (মুম্বা) ৯ ১৪ ২ ০
শান্ত রানআউট (টেলর/মাধেভেরে) ৬ ১০ ১ ০
মুশফিক ক মুতম্বজি ব মাধেভেরে ৫৫ ৫০ ৩ ০
মাহমুদউল্লাহ ক মাধেভেরে ব তিশুমা ৪১ ৫৭ ৩ ০
মিঠুন অপরাজিত ৩২ ১৮ ৩ ১
মিরাজ বোল্ড মুম্বা ৫ ৬ ০ ০
মাশরাফি ক সিকান্দার ব তিরিপানো ১ ৪ ০ ০
তাইজুল ক মুতম্বজি ব তিরিপানো ০ ১ ০ ০
শফিউল অপরাজিত ৫ ৫ ০ ০
অতিরিক্ত (লেবা ২, নো ১, ও ৭) ১০
মোট (৮ উইকেট, ৫০ ওভারে) ৩২২
উইকেট পতন : ১-৩৮ (লিটন), ২-৬৫ (শান্ত), ৩-১৫২ (মুশফিক), ৪-২৫৮ (মাহমুদউল্লাহ), ৫-২৯২ (তামিম), ৬-৩০৭ (মিরাজ), ৭-৩১০ (মাশরাফি), ৮-৩১১ (তাইজুল)।
বোলিং : মুম্বা ১০-০-৬৪-২, তিশুমা ৫-০-৩৫-১, তিরিপানো ৮-০-৫৫-২, মাধেভেরে ৭-০-৩৮-১, সিকান্দার ১০-০-৫৯-০, উইলিয়ামস ৭-০-৩৫-০, মুতুম্বজি ৩-০-৩৪-০।
জিম্বাবুয়ে ইনিংস রান বল ৪ ৬
কুমুনুকামওয়ে ব তাইজুল ৫১ ৭০ ৫ ২
চাকাভা ক লিটন ব শফিউল ২ ৫ ০ ০
টেইলর রান আউট ১১ ২১ ২ ০
উইলিয়ামস এলবি মিরাজ ১৪ ২৪ ৩ ০
মাদেভেরে এলবি তাইজুল ৫২ ৫৭ ৫ ০
রাজা ক মাহমুদউল্লাহ ব মাশরাফি ৬৬ ৫৭ ৫ ২
মুতুমবামি এলবি তাইজুল ১৯ ১৭ ৩ ০
মুতমবজদি ক লিটন ব আল আমিন ৩৪ ২১ ৫ ০
তিরিপানো ব্যাটিং ৫৫ ২৮ ২ ৫
মুম্বা ব্যাটিং ০ ০ ০ ০
অতিরিক্ত (লেবা ৬ ও ৮) ১৪
মোট (৮ উইকেট, ৫০ ওভারে) ৩১৮
উইকেট পতন : ১-১৫ (চাকাভা), ২-৪৪ (টেইলর), ৩-৬৭ (উইলিয়ামস), ৪-১০২ (কুমুনুকামওয়ে), ৫-১৮৩ (মাদেভেরে), ৬-২১৩ (মুতুমবামি), ৭-২২৫ (রাজা), ৮-৩০৫ (মুতমবজদি)।
বোলিং : মাশরাফি ১০-০-৫২-১, শফিউল ৯-০-৭৬-১, মিরাজ ৭-০-২৫-১, আল আমিন ১০-০-৮৫-১, তাইজুল ১০-০-৫২-৩, মাহমুদউল্লাহ ৪-০-২২-০।
ফল : বাংলাদেশ ৪ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ)।
সিরিজ : তিন ম্যাচে বাংলাদেশ ২-০-তে এগিয়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।