পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইতিহাসের চরম সঙ্কটে বিএনপি। ঘুরে দাঁড়ানোর সকল পথে অবিশ্বাস্য প্রতিবন্ধকতা। বাইরের চাপ, তাপ মোকাবেলার কলা-কৌশলে ব্যর্থতার মধ্যেই নিজের ঘর গুছানোতে নেই কোনো জোরালো পদক্ষেপ। যেই তৎপরতায় নেতাকর্মীরা নতুন করে যেতে পারে বহুদুর।
কেবল হতাশা আর পুরনো মানি না শব্দেই তারা এখনও ঘুরপাকে। ঘরে মানি না যে আওয়াজে কাঁপিয়ে তোলা হয়, রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে লুকোচুরির খেলায় বাহাদুরীর কোনো আলামত চোখে দেখা মিলে না। বাস্তবিক অর্থে ঘরের বাঘ বাইরের বেড়াল যেন সিলেট বিএনপি। সে কারণে আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার সিলেটে বিএনপি কোমর সোজা করে অতীতের মতো ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে না। তবে অতীতের মতো নিজ ঘরে কিছু হলে মানি না বলেই নেতৃত্বের আনুগত্যকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের অশুভ চর্চাকে এখনো লালন করে যাচ্ছে দিব্যি।
শুধু বিএনপি নয়, যুবদল ও ছাত্রদলের কমিটির ক্ষেত্রে একই শব্দ ব্যবহার করা হয় সব সময়। বিগত দিনে দলের বিভিন্ন কমিটিগুলোতে স্থান না পাওয়া নেতাকর্মীরা মোর্চা’ বেধে কমিটির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে শুরু করতেন বিদ্রোহ। গত শনিবার সিলেটের ১৩ উপজেলা ও ৫টি পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠনের পর পুরনো কায়দায় একটি পক্ষ গঠিত কমিটিকে প্রত্যাখান করেছেন।
সিলেট বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, কমিটি নিজের পক্ষে গেলে মানি। আর নিজের মতের একটু বিপক্ষে গেলে মানি না, এই জায়গা থেকে নেতাদের বের হয়ে আসতে হবে। বিএনপি প্রায় ১৪ বছর থেকে ক্ষমতায় নেই। এত দীর্ঘ সময়েও সিলেট বিএনপিতে কোন্দল না কমায় নেতাকর্মীরা পুরোপুরি হতাশ। তারা বলছেন, নেতারা ছোটোখাটো ছাড় দিতে চান না। দলের এই সঙ্কটময় মুহূর্তে দলীয় কোন্দলকে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে হবে। সবাইকে গ্রুপিং-এর বাহিরে গিয়ে দলের কথা চিন্তা করে কাজ করতে হবে।
গত ২ অক্টোবর সিলেট জেলা বিএনপির ২৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় কমিটির পক্ষে বিপক্ষে শুরু হয় দ্ব›দ্ব। পরে এই ২৫ সদস্যের নেতারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। একটি পক্ষকে কমিটির বাহির থেকে নেতৃত্ব দিতেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-ক্ষুদ্র ও ঋণ বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক। আর কমিটির মধ্যে থাকা বড় আরেকটি অংশ মিলেমিশে চলতে দেখা যায় হরহামেশাই।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি তিন মাসের মধ্যে সম্মেলন শেষ করে জেলা শাখার কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি করতে তারা সময় পার করেছে ৫ মাস। এর কারণ হিসেবে দেখা গেছে, উপজেলা ও পৌর বিএনপিতে নিজেদের লোক ঢুকাতে দুই পক্ষই একে অপরকে ছাড় দিতে রাজি হতেন না। আর এতেই কমিটি গঠনে সময় লেগেছে লম্বা সময়।
গত ১৬ নভেম্বর জেলা বিএনপির বর্ধিত সভায় ১৭টি কমিটির আহ্বায়কের নাম চ‚ড়ান্ত করেন। কিন্তু সভা থেকে বের হয়ে একটি অংশ এর বিপক্ষে অবস্থান নেয়। এতে ১৭ জন আহবায়কদের নাম চ‚ড়ান্ত করেও কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি দলটি। বিষয়টি লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছ পর্যন্ত গড়ায়। সর্বশেষ সিলেটের ১৩ উপজেলা ও ৫টি পৌরসভায় একজনকে আহ্বায়ক ও ২০ জনকে সদস্য করে মোট ১৮টি কমিটির তালিকা দলের মহাসচির বরাবর পাঠানো হয় বলে সূত্র জানিয়েছে। প্রায় ৩ মাস যাচাই বাছাই করে এ কমিটি প্রকাশের অনুমতি দেয় হাইকমান্ড। শনিবার রাতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার এসব কমিটির অনুমোদন দেন।
কমিটির আহ্বায়করা হলেন- সিলেট সদর উপজেলায় আহ্বায়ক তারেক কালাম, দক্ষিণ সুরমায় সিরাজুল ইসলাম, কানাইঘাট উপজেলায় আব্বাস উদ্দিন চেয়ারম্যান, কানাইঘাট পৌর শাখায় আবিদুর রহমান কাউন্সিলর, জকিগঞ্জ উপজেলায় অ্যাডভোকেট কাওছার রশিদ বাহার, জকিগঞ্জ পৌর শাখায় ইকবাল আহমদ, জৈন্তাপুর উপজেলায় এবিএম জাকারিয়া, গোয়াইনঘাট উপজেলায় লুৎফুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আব্দুল মান্নান মনাফ, বিশ্বনাথ উপজেলায় মোহাম্মদ গৌছ খান, বিশ্বনাথ পৌর শাখায় তালেব আলী, ওসমানীনগর উপজেলায় জরিদ আহমদ, বালাগঞ্জ উপজেলায় আব্দুর রশিদ, গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ডা. আব্দুল গফুর, গোলাপগঞ্জ পৌর শাখায় হাসান ইমাদ, বিয়ানীবাজার উপজেলায় নজরুল ইসলাম খান, বিয়ানীবাজার পৌর শাখায় মো. নুরুল হুদা বাবুল, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ইফতেখার উদ্দিন ফেদল।
কমিটি গঠনের একদিন পর রোববার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের ওপর স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৯ জন নেতা এসব কমিটি প্রত্যাখান করেন। ২৫ সদস্যের জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৯ জন নেতা প্রত্যাখান করায় এসব কমিটির পক্ষে রয়েছেন ১৬ জন নেতা।
কমিটি প্রত্যাখানকারীরা হলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য- কাইয়ূম চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন, আব্দুল মান্নান, অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, নাজিম উদ্দিন লস্কর, আহমেদুর রহমান চৌধুরী, ইসতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট হাসান পাটোয়ারী রিপন, মাহবুবুল হক চৌধুরী।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ককমিটির সদস্য মাহবুবুল হক চৌধুরী বলেন, জেলা আহ্বায়ক কমিটির বিগত সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত ছিল যে, খসড়া কমিটি তৈরি করে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে জেলা আহ্বায়ক কমিটির পরবর্তী সভায় অনুমোদন সাপেক্ষে কমিটি প্রকাশিত হবে। কিন্তু জেলা আহ্বায়ক কোনো সভার আহ্বান না করে কমিটি যেভাবে ঘোষণা করেছেন গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টি তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও অবহিত করেছেন। তবে এ বিষয়ে কোনো লিখিত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে বিএনপির এ নেতা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সভা শুরুর সময় আমরা স্বাক্ষর করি। পরে আহ্বায়ক এতে কি লিখেছেন আমরা তা জানি না। কিন্তু জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।