Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হারের বন্ধ্যাত্ব ঘুচানোর মিশন

মো. জাহিদুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

আচ্ছা, বাংলাদেশ সবশেষ কবে কোন ওয়ানডে ম্যাচে জিতেছিল? সহজ প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে এ প্রশ্নটি হয়তো অনেকেরই মাথায় আসতে পারে। অপ্রাসঙ্গিকও নয়। এ বছরতো কেবল শুরু। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল), পাকিস্তানে দু:স্বপ্নের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর যা একটু স্বস্তি দিয়েছে এই জিম্বাবুয়েই। তাদের কল্যাণেই ১৪ মাসের টেস্ট জয়ের বন্ধ্যাত্ব ঘুচানো গেছে। এবার ওয়ানডেতেও প্রতিপক্ষ সেই জিম্বাবুয়ে। যাদের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের জয় ৪৪টি। আফ্রিকার এই দলটিকে বাদ দিলে বাংলাদেশের জয় বাকি ১৭টি প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৮১টি।

এবার আসি প্রশ্নোত্তরের খোঁজে। বিশ্বকাপে আট নম্বর অবস্থানে থেকে শেষ করার পর শ্রীলঙ্কার মাঠে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। ফল ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ। তার আগে বিশ্বকাপে পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে হার। সবশেষ জয় বলতে বিশ্বকাপের মঞ্চেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়। তাও গত বছরের জুনের কথা। তারপর কেটে গেছে আট মাস। টেস্টের পর এবার ওয়ানডেতে হারের বন্ধ্যাত্ব ঘুচানোর মিশনে আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে মাশরাফি মুর্তজার দল।

একসময় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি জয় দেখার জন্য স্টেডিয়ামে এবং টিভি সেটের সামনে বসে থাকতেন কোটি সমর্থক। তবে সেই দিন আর নেই। কালের বিবর্তণে ক্রিকেটে টাইগাররা এখন সাবেক চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি থেকে অনেক এগিয়ে। কিন্তু এসব তোয়াক্কা করতে নারাজ আট মাস পর জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নামা মাশরাফি মুর্তজা, ‘তাদের (জিম্বাবুয়ে) বিপক্ষে আমরা সবশেষ পাঁচটি ম্যাচেই জিতেছি। তারমানে এই নয় যে, তাদের বিপক্ষে কখনও হারিনি। খেলায় হারজিত থাকবে। আমাদের কন্ডিশন সম্পর্কেও তারা বেশ অবগত। সুতরাং ছোট করে দেখার কিছু নেই। নির্দিষ্ট দিনে ভালো ক্রিকেট খেলে জিততে চাই।’

পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বাংলাদেশের বিপক্ষে সবশেষ পাঁচটি ম্যাচেই হেরেছে জিম্বাবুয়ে। এছাড়া বছরের হিসেব করলে ২০১৩ সালে বুলাওয়েতে সবশেষ টাইগারদের বিপক্ষে জয় পেয়েছে চামু চিবাবার দল। দুই দলের মুখোমুখি ৭২ লড়াইয়ে পাল্লা ভারি মাশরাফিদেরই। ৪৪ জয়ের বিপরীতে হেরেছে ২৮ ম্যাচে। তবে একটি জায়গায় পরিমাপ করলে স্বাগতিক ও সফরকারি দলের বিন্দু একই জায়গায় স্থির। দু’দলই নিজেদের সবশেষ খেলা পাঁচ ম্যাচে জয়হীন। তাই চ্যালেঞ্জটা যতটুকু মাশরাফির, ঠিক ততটুকুই চিবাবার।

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের পর এই প্রথম মাঠে নামছেন মাশরাফি। বিশ্বকাপের পর টেস্ট এবং ওয়ানডে ক্রিকেটেও ভালো সময় কাটায়নি বাংলাদেশ। সবমিলিয়ে চাপে থাকার কথা দলের। যদিও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাম্প্রতিক সময় টেস্ট জয় দৃশ্যপট পাল্টে দিবে বলে মনে করেন মাশরাফি, ‘এই মুহূর্তে আমরা অনেক দিন পর নামছি। এটা একটা ব্যাপার। প্রথম ম্যাচে সবকিছু একটু মানসিকভাবে গুছিয়ে নিতে হয়। প্রথম থেকেই ঠিক করে নিতে পারি অথবা ম্যাচ চলতে চলতে ওগুলো নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। শুরুটা খুব গুরুত্বপ‚র্ণ। দলের পরিবেশ যথেষ্ট ভালো। কিছু নতুন ক্রিকেটার এসেছে। ওরা অনেক রোমাঞ্চিত। সুযোগ পেলে ভালো করার জন্য। কোচিং স্টাফ অনেক নতুন। সবাই ঠিক আছে। সুস্থ আছে। দলের অবস্থা খারাপ না। বিশেষ করে টেস্ট ম্যাচ জিতে আসার পর জয়ের রেশটা আছে। আশা করি ঠিকঠাক থাকলে কাল ভালো করে শুরু করতে পারব।’

অন্যদিকে নতুন ফরম্যাটে সফরকারিদের নতুন অধিনায়ক চামু চিবাবা বাংলাদেশের মাটিতে তাদের হারের রেকর্ড বদলাতে চান, ‘বাংলাদেশের মাটিতে আমাদের রেকর্ড ভালো নয়। কিন্তু আমরা সেটা বদলাতে চাই। এবার তাদের বিপক্ষে আমরা তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলব। আমার মনে হয় বদলানোর দারুণ সুযোগ আমাদের সামনে। টেস্টে আমরা হেরেছি। এবার কিন্তু ভিন্ন ফরম্যাট। আমি মনে করি এই ফরম্যাটটা আমাদের সঙ্গে বেশ যায়। আমরা ইতিবাচক ও আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে চাই। আশা করছি আমরা দারুণ একটি সুযোগ তৈরি করতে পারব।’

ম্যাচের আগে সিলেটের পিচে দেখা যেতে পারে কিছু ঘাস। তাতে বাউন্সও পাবেন বোলাররা। রানের জন্য পিচটিকে আদর্শ মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেমের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাত হাজার রানের মাইলফলক ছুঁতে ১০৮ রান পিছিয়ে আছেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। দীর্ঘদিন ধরে ফর্মের বাইরে থাকায় সবার প্রত্যাশা থাকবে তামিমের রানে ফেরার দিকে।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজে নতুনদের মধ্যে থেকে জায়গা পেয়েছেন ইনফর্ম আফিফ হোসেন ও নাঈম শেখ। এছাড়া দীর্ঘদিন পর ক্রিকেটে ফিরেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। সবমিলিয়ে নতুন কম্বিনেশন গড়তে ডমিঙ্গোর চাহিদাই গুরুত্ব পাচ্ছে মাশরাফির কাছে, ‘আসলে এটা নিয়ে (নতুনদের কে খেলবে) তো সেভাবে আলোচনা হয়নি। সবাই অনুশীলনের মধ্যে আছে। এটা নিয়ে কোচের একটা পরিকল্পনা আছে। কোচের (রাসেল ডমিঙ্গো) পরিকল্পনাকে আমার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়াটা খুব জরুরী। কারণ সে নতুন এসেছে। কিছু প্লেয়ারকে সেট করতে চাইবে। খুব স্বাভাবিক। তাঁকে এই সহযোগিতা সবার করতে হবে। আর নতুন ক্রিকেটারদের কে কাল খেলবে কিনা সেটা নিয়ে আলোচনা হয়নি। ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যখন বসব তখন দেখব তাদের চিন্তাভাবনা কী আছে।’
আবার লিটন দাসকেও তিনে খেলানোর কথা শোনা যাচ্ছে। তবে রদবদল যেভাবেই হোক, দিন শেষে একটাই চাওয়া থাকবে সমর্থকদের। তা হল-জয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিশন


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ