মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে চলছে গুজরাট মডেলের মুসলিম বিরোধী নৃশংসতা। উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের সন্ত্রাসী হামলায় মৃত্যুমিছিল আটকানো যাচ্ছে না, বেড়েই চলেছে। বুধবার সকালে আরও ৫ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে সেখান থেকে। তাতে চার দিনের মাথায় সেখানে মৃত্যুসংখ্যা গিয়ে দাঁড়ালো ২৩ এ। আহতের সংখ্যাও ২০০-র কাছাকাছি। মুসলমানদের বিরুদ্ধে ভারতের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় প্রাণঘাতী এই সহিংসতার বিরুদ্ধে কার্যত নীরব ভূমিকায় থাকতে দেখা যাজ্ঝে মুসলিম বিশ্ব ও নেতাদের। এমনকি অনেক সুপরিচিত ধর্মীয় নেতারাও তেমন কোনো প্রতিবাদ করছেন না। যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা, ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে সামাজিক মাধ্যমে।
ভারতের মুসলিম বিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভে হামলার প্রেক্ষাপটে মসজিদে মসজিদে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা কোরআনের বিভিন্ন পাতা মাটিতে পুঁতে রাখতে দেখা গেছে লোকজনকে। পুলিশ প্রশাসনের সামনেই মুসলিমদের বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক সহিংসতা চালানো হচ্ছে, মেয়েদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটছে। যখন নিকট অতীতের মধ্যে এক ভয়াবহতম নৃশংসতার মুখে ভারতের মুসলিমরা। তখন মুসলিম বিশ্ব ও নেতাদের নীরবতায় সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
তবে ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী সহিংসতা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এখনই পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। টুইটারে দেয়া এক পোস্টে বলেন, কয়েকশ কোটি লোকের ভারতে আজ আমরা নাৎসি অনুপ্রাণিত আরএসএস মতাদর্শের নিয়ন্ত্রণে। যখনই কোনো বর্ণবাদী মতাদর্শের উত্থান ঘটে, তখন তা ব্যাপক রক্তপাতের দিকে নিয়ে যায়। জাতিসংঘের ভাষণেই তিনি এই রক্তপাত নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন বলে জানিয়ে বলেন, অধিকৃত কাশ্মীর দিয়ে এই রক্তপাত শুরু হয়েছে। এখন ভারতের ২০ কোটি মুসলমান হামলার লক্ষ্যবন্তু। বিশ্ব সম্প্রদায়কে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘দিল্লিতে জ্বলছে মুসলমানদের জানমাল সম্পদ। এই ঘোর দুর্দিনে দেওবন্দী, বেরেলভী, জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দ, জামায়াতে ইসলামী হিন্দ কোথায়? ফুরফুরা, আঞ্জুমান-ই-কাদেরিয়া (মেদনিপুর), চিশতিয়া, ... তরিকার গদ্দিনশীন পীর ও তাদের খলিফা সাহেবরা কোথায়? কোথায় আরসাদ মাদানী, সাদ সাহেবরা। ভারতে আরএসএস, সেবক সংঘের সাথে হাত মিলিয়ে চলা, গা ঢাকা দিয়ে চলা, মৌনব্রতী এইসব বড় কুটুমরা যখন বাংলাদেশে ইসলামের আঞ্জাম দিতে আসে, তখন তাদের জুতিয়ে বের করা উচিত। বাংলাদেশে ইসলামের খেদমতের জন্য বাংলাদেশী ওলামা-মাশায়েখরাই যথেষ্ট। বর্ণচোরা ভারতীয় কুতুবদের দরকার নেই।’’
মো. ফরিদ লিখেছেন, ‘‘আর একবার সুযোগ দেওয়া যাবে না মুসলমানদের রক্তের উপর দিয়ে মসজিদ পুড়িয়ে চা বিক্রেতা কসাই মোদি মুজিববর্ষে বক্তা হিসেবে বাংলাদেশে আসতে পারে না। ধর্ম-বর্ণ দল-মত নির্বিশেষে সকলকে প্রতিবাদ জানানোর ও রাজপথে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। সবাই যার যার ফেসবুকে পোস্ট করে প্রতিবাদ গড়ে তোলুন।’’
আব্দুল আলিম নোমান লিখেছেন, ‘‘দিল্লির মসজিদ গুলোতে শুধু আগুন জ্বলছে না! আগুন জ্বলছে প্রত্যেকটা মুসলমানের কলিজায়!! যে যেই অপকর্ম করছে তার ফল সে পাবেই,যেমনটা পাচ্ছে চীন সরকার!! অপেক্ষা শুধু সময়ের।...আজ হোক বা কাল হোক ভারত ভাঙবেই ভারতের মাটিতে মুসলমানদের বিজয় হবেই ইনশাআল্লাহ.।’’
তারিকুল ইসলাম লিঙ্কন লিখেছেন, ‘‘ইহুদি-হিন্দু কিংবা খ্রিষ্টানরা মারবে, আগুন দিবে। তার বিপরীতে জীবন বাঁচাতে মুসলিমরা বাধা দিলে হয়ে যাবে জঙ্গি। এই নিদারুণ বাস্তবতার জন্য সরাসরি হিন্দু কিংবা ভিন্ন ধর্মের কাউকে দায়ী করা যাবে না। যেখানে স্বার্থ উদ্ধারের নামে মুসলিম বিশ্বের নেতারা চুপ করে সব মেনে নিচ্ছে, সেখানে পদে পদে মার খাওয়ার জন্য বিধর্মীদের দোষ দিয়ে কি লাভ? এছাড়া আমাদের সমাজের বিচ্যুত ঘটেছে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা অভাব থেকে। আজ এমন অবস্থা কখনোই তৈরি হতো না, যদি কি না আমাদের ঈমানী শক্তিতে পুরুত্ব থাকতো। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন হবে সত্যিকারের ইসলামকে জানা। নতুবা নামে মুসলিম থাকাটাই কাল হবে বিশ্ব মুসলিম ধ্বংসের নেপথ্যে।’’
জাহিদ হাসান লিখেছেন, ‘‘আমি চাই না মোদির মত একজন খুনি প্রধানমন্ত্রী আমার দেশে আসুক। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে তিনি এসে ভাষণ দিক। আমার মুসলিম ভাইদের প্রতি যে নির্যাতন করা হচ্ছে, যেভাবে আমাদের ধর্মীয় স্থান মসজিদকে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে,, আমি চাই না সে দেশের প্রধানমন্ত্রী আমার দেশে আসুন।’’
মুহাম্মাদ সোবহান লিখেছেন, ‘‘যে আলেমরা প্রবল শক্তিশালী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে সে আলেম সমাজ এখন কি আদৌ আছে?’’
আনিসুর রহমান লিখেছেন, ‘‘ধর্মের নামে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি গোষ্ঠীর বিষাক্ত হামলায় মানবতা তছনছ। জয় শ্রীরাম বলে মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে।
মসজিদের মিনার থেকে মাইক নামিয়ে হনুমানের ছবি সংবলিত পতাকা উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে আগুন ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। হাতুড়ি কুঠার রড দিয়ে হামলা চালিয়ে শুধু দিল্লিতেই মেরে ফেলা হয়েছে অন্তত ২৫ জনকে। মৃত্যুর কাছাকাছি আরো বহু। এরপরও বিশ্ব বিবেক নীরব। মুসলিম বিশ্বকেও সেভাবে সরব হতে দেখছি না। হায় মানবতা!’’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।