পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে পানি সমস্যার সমাধান হয়না, সীমান্তে মানুষ হত্যার বিচার হয়না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে একটা নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারে না, আমাদের পানি সমস্যার সমাধান হয় না। আমাদের সীমান্তে মানুষ হত্যা করা হয় তার কোনো বিচার হয় না এবং একটা কথা বলতে পর্যন্ত সাহস পায় না। এই একটা অবস্থায় নিয়ে এসছে দেশকে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বিএনপির আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দেশে ত্রাস ও ভয়ের পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সমাজের অবস্থা কোন জায়গা নিয়ে গেছে, একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ধরার জন্যে তার বাড়ি থেকে তার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে এসছে, ৪০ বছর তার বয়স। তুলে নিয়ে এসে তাকে থানার মধ্যে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এরকম ঘটনা আমরা আগে কখনো শুনতে পাইনি। এখন এই সরকারের আমলে সেগুলো দেখছি যে, এখানে নারীদের কোনো সম্মান নেই, এখানে মানুষের কোনো সম্মান নেই, এখানে জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। আজকে চুতুর্দিকে এরকম ভয়াবহ একটা পরিস্থিতি, ত্রাসের পরিস্থিতি, ভয়ের পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
অর্থনীতি প্রায় ধবংস হয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে অর্থনীতির সাবেক এই ছাত্র বলেন, দুর্নীতির এমন একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যেখানে আজকে পত্রিকা খুললেই দেখবেন যে, ১১০ কোটি দিয়ে ব্যাসিক ব্যাংকের এক এমডি বাড়ি কিনেছেন। আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিচার হয়, সাজা হয় ২ কোটি টাকার একটা মিথ্যা মামলার জন্যে। অথচ যিনি ১১০ কোটি টাকার বাড়ি বানিয়েছেন, শত শত কোটি টাকার যিনি লুটপাট করে নিয়েছেন তাকে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক দেখতে পায়না, এখন পর্যন্ত তাকে একটা নোটিস করা হয়নি। এই হচ্ছে এদেশের অবস্থা। দেশের অর্থনীতি সুপরিকল্পিভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে। যাতে করে বাংলাদেশ একটা পরনির্ভরশীল দেশ হয়ে থাকে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা এখান থেকে উঠে দাঁড়াতে চাই, আমরা উঠে দাঁড়িয়েছি অতীতে। আমি বিশ্বাস করি, বার বার এদেশের মানুষ জেলে গিয়েছে। একটা কথা আমি কখনো বিশ্বাস করি না যে, এই সমস্যা শুধু বিএনপির সমস্যা-এটা নয়। এটা গোটা জাতির সমস্যা। সমগ্র জাতি আজকে পরাধীন হয়ে যাচ্ছে, সমগ্র জাতি আজকে তাদের অর্জনগুলোকে হারাচ্ছে। তাই আমাদের সকলকে উঠে দাঁড়াতে হবে, উঠে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে হবে, সোচ্চার হতে হবে, রাস্তায় দাঁড়াতে হবে এবং আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, আসুন আজকে আমরা সবাই শপথ নেই এই ভাষা শহীদদেরকে স্মরণ করে যে, আমরা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করব এবং গণতন্ত্রকে মুক্ত করব ইনশাআল্লাহ।
ভাষা আন্দোলন থেকে শিক্ষা নেয়ার কথা বলে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিলো আমাদের পূর্বপুরুষ ওই সময়ের ছাত্র নেতারা। আজকে বাংলাদেশে কী হচ্ছে? কোনটা বলব। প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন যে, ‘কে ভোট দিলো, কে ভোট দিলো না- এটা আমাদের দেখার বিষয় না। আওয়ামী লীগ এগুলো কেয়ার করে না।’ কত বড় অন্যায় কথা। আমাদের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে যে বাংলাদেশ আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি, মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা গণতন্ত্র। ১৯৭৫ সালে সেই গণতন্ত্রকে তারা একবার হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলো, আবার এখন অলিখিত বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে ২৯ তারিখ রাতে ডাকাতি করে। তারা ভালো করে জানে, জনগন সুযোগ পেলে তাদেরকে ভোট দেবে না। তাই তারা(আওয়ামী লীগ) বলতে পারে কে ভোট দিলো, কে দিলো না তাতে কিছু আসে যায় না।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য দরখাস্ত করেছি। জজ সাহেব বললেন, এটা তো আমরা আগেই দেখেছি আবার কেনো আনলেন? আমরা বললাম যে, উনার(খালেদা জিয়া) যে গত দুই মাসে কত অবণতি হয়েছে সেটা আপনাদের দৃষ্টিতে আনা দরকার এবং এখন তার অবস্থা অনেক খারাপ। দুই মাস আগে আপনি রিফিউজ করেছে, আপনি দেননি জামিন। আমরা এখন নতুন গ্রাউন্ড নিয়ে এসেছি, আমরা শুনানী করতে চাই। যদি স্বাস্থ্যগত কারণে, মানবিক কারণে তাকে (খালেদা জিয়া) যদি জামিন দেন। আমি এখনো আশা করি, সুপ্রিম কোর্ট একটা নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন মুক্তি দেবেন। আর যদি না দেন, আন্দোলন ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নাই আমাদের কাছে। তখন আমাদেরকে বাধ্য করা হবে একটা কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করতে।
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, যুব দলের গোলাম মাওলা শাহিন, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ। ভাষা আন্দোলনের পটভুমি নিয়ে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মাহবুবউল্লাহ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আবদুল লতিফ মাসুম।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।