Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চসিক নির্বাচন বিদ্রোহীর শঙ্কা দু’দলেই

রফিকুল ইসলাম সেলিম : | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৬ এএম

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন-চসিক নির্বাচনে বড় দুই দলেই বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। মেয়র পদে শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও কাউন্সিলর পদে দুই দলেরই একাধিক প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে নেমে যেতে পারেন বলে জানান দলীয় নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ৫৫টি ওয়ার্ডে দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বাদ পড়েছেন ১৯ জন বর্তমান কাউন্সিলর। দলীয় মনোনয়ন চেয়ে সর্বোচ্চ ৪০৯ জন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছিলেন। বঞ্চিতদের অনেকেই দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
আগেই নৌকার প্রার্থী হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বঞ্চিত অন্য ১৮ জনের মন খারাপ হলেও তাদের কেউ বিদ্রোহী হবেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। মাঠের বিরোধী দল বিএনপি আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি তাদের মেয়র প্রার্থী চ‚ড়ান্ত করবে। ওইদিন সন্ধ্যায় দলের স্থায়ী কমিটির সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন মেয়র পদে দল যাকে প্রার্থী দেবে তার পক্ষেই থাকবেন সবাই।
কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন পেতে আগ্রহীদের দলীয় ফরম দেয়া হয়েছে। গতকাল শেষদিন পর্যন্ত ফরম সংগ্রহ করেছেন ১৫০ জন। জানা গেছে, মেয়র পদে একক প্রার্থী দিতে পারলেও কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী দমনে বিএনপিকেও হিমশিম খেতে হবে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত বেশ কয়েকজন বর্তমান কাউন্সিলরকে বাদ দেয়া হয়েছে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহেল হত্যা মামলার আসামি সাবের আহমদ, পুলিশের খাতায় একসময়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী আবদুল কাদেরও বাদ পড়েছেন। বাদ পড়াদের মধ্যে ভ‚মিদখল, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর আড়ালে চলে যাওয়া বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরও রয়েছেন। তবে বেশ কয়েকজন বিতর্কিত কাউন্সিলর এবারও মনোনয়ন পেয়েছেন। বুধবার কেন্দ্র থেকে ঘোষিত তালিকায় ৪১টি সাধারণ ও ১৪টি সংরক্ষিতসহ মোট ৫৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে পুরনো আছেন ২৭ জন।
মনোনয়নপ্রাপ্তরা হলেন-১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে গাজী মোহাম্মদ শফিউল আজিম, ২ নম্বর জালালাবাদে মোহাম্মদ ইব্রাহিম, ৩ নম্বর পাঁচলাইশে কফিল উদ্দিন খান, ৪ নম্বর চান্দগাঁওয়ে মো. সাইফুদ্দিন খালেদ, ৫ নম্বর মোহরায় মোহাম্মদ কাজী নুরুল আমিন, ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহরে এম আশরাফুল আলম, ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহরে মো. মোবারক আলী, ৮ নম্বর শুলকবহরে মো. মোরশেদ আলম, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলীতে নুরুল আবছার মিয়া, ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলীতে প্রফেসর নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলীতে মো. ইসমাইল, ১২ নম্বর সরাইপাড়ায় মো. নুরুল আমিন, ১৩ নম্বর পাহাড়তলীতে মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, ১৪ নম্বর লালখান বাজারে আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল, ১৫ নম্বর বাগমনিরামে মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, ১৬ নম্বর চকবাজারে সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু, ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়ায় মোহাম্মদ শহীদুল আলম, ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়ায় মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ, ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়ায় মো. নুরুল আলম, ২০ নম্বর দেওয়ান বাজারে চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী।
২১ নম্বর জামালখানে শৈবাল দাশ সুমন, ২২ নম্বর এনায়েত বাজারে মোহাম্মদ ছলিম উল্লাহ বাচ্চু, ২৩ নম্বর উত্তর পাঠানটুলীতে মোহাম্মদ জাবেদ, ২৪ নম্বর উত্তর আগ্রাবাদে নাজমুল হক ডিউক, ২৫ নম্বর রামপুরে আব্দুস সবুর লিটন, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহরে মোহাম্মদ হোসেন, ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদে মো. শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরী, ২৮ নম্বর পাঠানটুলীতে নজরুল ইসলাম বাহাদুর, ২৯ নম্বর পশ্চিম মাদারবাড়িতে গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়িতে আতাউল্লাহ চৌধুরী।
৩১ নম্বর আলকরণে মো. আব্দুস সালাম, ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লায় জহর লাল হাজারী, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গী বাজারে মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, ৩৪ নম্বর পাথরঘাটায় পুলক খাস্তগীর, ৩৫ নম্বর বক্সিরহাটে হাজী নুরুল হক, ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গায় হাজী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, ৩৭ নম্বর উত্তর মধ্যম হালিশহরে মো. হোসেন মুরাদ, ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরে গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহরে জিয়াউল হক সুমন, ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গায় আব্দুল বারেক এবং ৪১ নম্বর দক্ষিণ পতেঙ্গায় মনোনয়ন পেয়েছেন ছালেহ আহমদ চৌধুরী। ১৪টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন-সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ডে সৈয়দা কাশপিয়া নাহরিন, ২ নম্বরে জোবাইরা নার্গিস খান, ৩ নম্বরে জোহরা বেগম, ৪ নম্বরে তছলিমা বেগম নূরজাহান, ৫ নম্বরে শিউলি দে, ৬ নম্বরে শাহিন আকতার রোজী, ৭ নম্বরে রুমকি সেনগুপ্ত, ৮ নম্বরে নীলু নাগ, ৯ নম্বরে নুর আকতার প্রমা, ১০ নম্বরে হুরে আরা বেগম, ১১ নম্বরে জিন্নাত আরা বেগম, ১২ নম্বরে আফরোজা কালাম, ১৩ নম্বরে বেগম লুৎফুন্নেছা দোভাষ বেবী, ১৪ নম্বর থেকে শাহানুর বেগম।
রেজাউল শাহাদাতের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ : আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীসহ মেয়র পদে আরও ৩ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে নগর বিএনপি সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন এবং জাতীয় পার্টি নেতা সোলায়মান আলম শেঠের পক্ষেও মনোনয়নপত্র নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। এছাড়া সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৭৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৫ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এ পর্যন্ত মেয়র পদে ৫ জন এবং কাউন্সিলর পদে ১৫০ জন মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন। পহেলা মার্চ যাচাই-বাছাই, ২ থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত আপিলের সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা। ৮ মার্চ পর্যন্ত প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা যাবে। ৯ মার্চ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। ভোটগ্রহণ ২৯ মার্চ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চসিক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ