রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
লক্ষীপুরে নিবন্ধনহীন একটি এনজিও’র ফাঁদে পড়ে ৪ শতাধিক গ্রাহক প্রতারণার শিকার হয়েছেন। গ্রাহকদের সহজ শর্তে অধিক টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে সঞ্চয় সংগ্রহ করে প্রায় ১ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও কর্মকর্তারা। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, ‘পল্লী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’ নামের এনজিওটি তাদের সঞ্চিত টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। এনজিওটির সাইনবোর্ডে সরকার অনুমোদিত কথাটি উল্লেখ করা থাকলেও এটি নিবন্ধনহীন একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সূত্র জানায়, জেলা শহরের মেহেরখা সড়কের একটি আবাসিক ভবনে ‘পল্লী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’ কার্যালয় ও অফিসের কর্মকর্তা মো. রুবেল, হিসাবরক্ষক জামাল সিকদার এবং একজন মহিলা মাঠকর্মী ছিলেন। গত রোববার সকালে ঋণ নিতে গিয়ে সংস্থাটির অফিসে তালা ঝুলতে দেখেন গ্রাহকরা। এ সময় ঘটনাস্থলে ২০ জনের অধিক গ্রাহক উপস্থিত ছিলেন। তারা এনজিও কর্তৃপক্ষের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের ধারণা, ঋণ দেয়ার ভয়ে রাতের আঁধারে ‘পল্লী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মী ও কর্মকর্তারা পালিয়েছে ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রকল্পের নামে দীর্ঘদিন ধরে লক্ষীপুরের গ্রামাঞ্চলে গ্রাহক সৃষ্টি করে সঞ্চয় আদায় করছিল পল্লী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন। নিবন্ধনহীন প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কেন্দ্র স্থাপন করে বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচি পালন করে, যাতে গ্রাহকরা আকৃষ্ট হয়। তারা প্রতিটি বাড়িতে এক একটি কেন্দ্র ঘোষণা করেন। এরপর এনজিওটির কর্মীরা পাশ বই ব্যবহার করে সঞ্চয় আদায় শুরু করেন। স¤প্রতি সহজ শর্তে ১-৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়ার কথা বলে প্রায় ৪ শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে এককালীন ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় আদায় করেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে এসব গ্রাহককে ঋণ দেয়ার কথা ছিল। বিভিন্ন অজুহাতে গত ১৫ দিন অতিবাহিত করা হয়। এখন এনজিওটির হদিস পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। লক্ষীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর, দত্তপাড়া ও হাজিরপাড়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে এনজিওটি কার্যক্রম পরিচালনা করে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।
প্রতারণার শিকার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের নুরুল হুদা, শিপন ও লোকমান জানান, ১ লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে পল্লী উন্নয়ন ফাউন্ডেনের কর্মকর্তা রুবেল ও কোষাধ্যক্ষ জামাল সিকদার ও মাঠকর্মী একজন মহিলা তাদের কাছ থেকে ১০ হাজার ১৫০ টাকা হারে জামানত নেন। যা ৫ হাজার টাকা হারে ৫ মাসে ২২ কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। রোববার ঋণের টাকা প্রদান করার কথা ছিল। কিন্তু টাকা নিতে এসে দেখি কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। পরে কর্মকর্তা রুবেলের মোবাইলে ফোন দিলে তা বিচ্ছিন্ন পাওয়া যায়।
বটতলী গ্রামের আবদুর রহমান জানান, পল্লী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের লোকজন বটতলী কোটাবাড়ি এলাকার ৪টি পরিবারকে ঋণ দেয়ার কথা বলে ৪০ হাজার টাকা জামানত নেয়। কিন্তু এখন ঋণের টাকা নিতে এসে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে পল্লী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কার্যালয় অবস্থিত আবাসিক ভবনটির মালিক মো. ফারুক বলেন, দু’দিন আগে অগ্রিম ১০ হাজার টাকা দিয়ে অফিস ভাড়া নেয় এনজিওটি। এখন পর্যন্ত ভাড়া চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়নি বলেও জানান তিনি।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বশির আহমেদ পাটওয়ারী বলেন, পল্লী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামে আমাদের তালিকাভুক্ত কোনো এনজিও বা ঋণদান সংস্থা নেই। তবে গ্রাহকরা অভিযোগ করলে এসব প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।