নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
তখনও পিছিয়ে ১২১ রানে। হাতে ছিল ৬ উইকেট। প্রতিপক্ষের বোনাস পয়েন্ট ঠেকাতে ১৩০ রানে পিছিয়ে থাকার পরও এল ইনিংস ঘোষণা! গতকাল কক্সবাজারে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে যেটি করেছে দক্ষিণাঞ্চল। প্রতিপক্ষের বোনাস পয়েন্ট ঠেকাতে ৪ উইকেটে ১১৪ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে তারা।
দক্ষিণাঞ্চলের ২৯তম ওভারেই তখন ৪ উইকেট ফেলে দিয়েছিল মধ্যাঞ্চল। বোনাস পয়েন্ট ঠেকিয়ে নিজেরা পরে পরে নিশ্চিত করেছে ০.৫ বোনাস পয়েন্ট। কারণ দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৯ ওভার খেলে ৬ উইকেটে ২০৯ রান তুলেছে মধ্যাঞ্চল। বোনাস পয়েন্ট না পেলেও হাতে ৪ উইকেট রেখে তারা এগিয়ে আছে ৩৩০ রানে। বাকি দুইদিনে তাদের সামনে এখন ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনাও। দলকে ভালো লিড পাইয়ে দিতে দাপট দেখিয়েছেন শান্ত। ১৮৯ বলে ১২২ রান করে অপরাজিত আছেন তিনি।
২১ রানের ভেতর দুই ওপেনার সাইফ হাসান আর আব্দুল মজিদ ফিরে ফেলে অভিজ্ঞ রকিবুল হাসানকে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেন শান্ত। দুজনে মিলে গড়েন ১১১ রানের জুটি। ৩৯ করা রকিবুলকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। পরে মার্শাল আইয়ুব, মেহেদী হাসান মিরাজকেও তুলে নেন তিনি। আব্দুর রাজ্জাক ছেঁটে ফেলেন শুভাগত হোমকে। শেষ বিকেলে দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে হতচকিত মধ্যাঞ্চলের আশা বাঁচিয়ে জাবিদ হোসেনকে নিয়ে ক্রিজে আছেন শান্ত।
বিসিএলের বোনাস পয়েন্ট পদ্ধতির কারণেই এই পথ বেছে নিয়েছে দক্ষিণাঞ্চল। ১০০ ওভারের মধ্যে প্রতিপক্ষের ৫ উইকেট তুলে নিতে পারলে পাওয়া যায় ০.৫ বোনাস পয়েন্ট। ৭ উইকেট নিলে ১ পয়েন্ট, আর ৯ বা সব উইকেট নিতে পারলে পাওয়া সর্বোচ্চ ১.৫ বোনাস পয়েন্ট। বোলিংয়ে মধ্যাঞ্চলকে এই বোনাস পয়েন্ট নিতে দেয়নি দক্ষিণাঞ্চল। ৪ উইকেট পড়ার পরই ইনিংস ঘোষণা করেন অধিনায়ক আব্দুর রাজ্জাক।
তাদের ১০০ ওভারের মধ্যে (৮২.২ ওভার) মধ্যে অলআউট করে ইতিমধ্যে দক্ষিণাঞ্চল ১.৫ বোনাস পয়েন্ট পেয়েছে। এতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা দক্ষিণাঞ্চলের ফাইনালে খেলার পথ আরও সুগম হয়েছে। এই রাউন্ডের আগেই ১৬.৩৯ পয়েন্ট নিয়ে তারা শীর্ষে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা প‚র্বাঞ্চলের পয়েন্ট ১৩.০৬। ফাইনালে খেলার জন্যই আসলে ইনিংস ঘোষণা করেছে দক্ষিণাঞ্চল। হারলেও যেন ফাইনাল মিস না হয়, সেই হিসাব কষে এমনটি করেছে তারা। অবশ্য শুধু দক্ষিণাঞ্চল নয়, বোনাস পয়েন্টের নিয়ম চালু হওয়ার পর আগেও এই দৃশ্য দেখা গেছে।
আরেক ম্যাচে বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলামের তোপ সামলে দারুণ সেঞ্চুরি করে মুশফিকদের জবাব দিয়ে চলেছেন ইয়াসির আলি রাব্বি। রান পেয়েছেন টেস্ট দলে ফেরার লড়াইয়ে থাকা ইমরুল কায়েসও। একই দিনে কক্সবাজারে বিসিএলের তৃতীয় রাউন্ডে উত্তর-প‚র্বের ম্যাচ চলছে সমান তালে। উত্তরের ২৭২ রানের জবাবে ৭ উইকেটে ২৬১ রান তুলে দিন শেষ করেছে প‚র্বাঞ্চল। ইয়াসির আলি রাব্বি অপরাজিত আছেন ১৩৪ রান করে, ইমরুল করেছেন ৭৬ রান।
মুশফিকদের জবাব দিতে নেমে আগের দিনই ৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বসেছিল প‚র্বাঞ্চল। সকালে নেমে তড়িঘড়ি নাইটওয়াচম্যান সাকলাইন সজীবকেও হারায় তারা। এরপরই ইমরুলকে নিয়ে পরিস্থিতি সামলান ইয়াসির। দুজনে মিলে বাড়াতে থাকেন রান। জুটি পেরিয়ে যায় শতরান। ১৩৭ রানের জুটির পর ৭৬ করা ইমরুলকে ফেরান সানজামুল। দ্রুতই আউট করেন নাসির হোসেনকেও।
ইয়াসিরের সঙ্গে ৬৬ রানের আরেক জুটির পর ২৬ করা আফিফ হোসেনও সানজামুলের শিকার। শেষ বিকেলে জাকির হাসানকে তুলে নেন সঞ্জিত সাহা। টানা উইকেট পতনের মাঝেও সেঞ্চুরি তুলে অপরাজিত আছেন ইয়াসির। তার ব্যাটেই লিডের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে প‚র্বাঞ্চল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস : ২৩৫ ও ২য় ইনিংস : ৬৯ ওভারে ২০৯/৬ (সাইফ ১, মজিদ ১৪, শান্ত ১২২*, রকিবুল ৩৯, মার্শাল ১১, শুভাগত ১৮, মিরাজ ৬, জাবিদ ০ ; শফিউল ২/৩৬ , রেজা ০/২১, মেহেদী ০/৪৪, রাজ্জাক ১/৫০ ,নাসুম ৩/৫৫)
দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস : ২৮.২ ওভারে ১১৪/৪ (ডিক্লে) ( নাফীস ১০, বিজয় ২০, ইরফান ৩, শামসুর ২৫, সোহান ৪৮* ; ইরফান ২/৪২ , মোস্তাফিজ ০/২০, আরাফাত ০/১৩ , মিরাজ ০/৩৫ , শুভাগত ০/১ )
উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস : ২৭২
প‚র্বাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৯৬ ওভারে ২৬১/৭ (পিনাক ৩, আশরাফুল ০, সাকলাইন ৪, ইয়াসির ১৩৪*, ইমরুল ৭৬, নাসির ৩, আফিফ ২৬, জাকির ১, নাঈম ৬*; সানজামুল ৫/৯২, সাইফউদ্দিন ০/১৮, সঞ্জিত ২/৭১, নাঈম ০/৮, তানবীর ০/৩১, আরিফুল ০/৩৩)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।