মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বর্ধিত ছুটি কাটিয়ে যারা চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে শুক্রবার ফিরেছেন, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে তাদের ১৪ দিনের জন্য সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে (পরীক্ষা করার ব্যবস্থা) কাটাতে আদেশ দেয়া হয়েছে।
চীনের হুবেই প্রদেশে নতুন করে আরও ২ হাজার ৪০০ জনের বেশি লোক আক্রান্ত হওয়ার পর এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রদেশটিতে নতুন করে মারা গেছেন ১৩৯ জন। ফলে পুরো চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬ হাজারে দাঁড়ালো। মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৫২৩।
বেইজিং ভাইরাস প্রিভেনশন ওয়ার্কিং গ্রুপের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এখন থেকে বেইজিংয়ে ফিরে আসা সবাইকে ঘরে বসে থাকা উচিত। অথবা ১৪ দিনের জন্য গ্রুপ পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে। বেইজিংয়ের সরকারি সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, কেউ না মানলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
অপরদিকে চীনের বাইরে ২৬টি দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এ ভাইরাসে চীনের বাইরে ১০০’রও বেশি মানুষ মারা গেছে। আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের, ইউরোপ, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশ রয়েছে। নিচে দেশগুলোর তালিকা দেয়া হলো-
অস্ট্রেলিয়া-১৫ : দেশটিতে ১২ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত ১৫ জন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। অস্ট্রেলিয়ার সরকারের তথ্য মতে, এর মধ্যে তিনজন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আক্রান্তদের অধিকাংশই চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরেছিলেন।
বেলজিয়াম-১ : গত ৪ ফেব্রুয়ারি দেশটির সরকার জানায়, এ পর্যন্ত দেশটিতে উহান থেকে ৯জন ফিরেছিলেন, তাদের মধ্যে একজনের শরীরে করোনাভাইসার পাওয়া গেছে।
কম্বোডিয়া-১ : গত ২ জানুয়ারি দেশটি প্রথম একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের কথা জানায়।
কানাডা-৭ : দেশটির সরকার ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাতজন আক্রান্তের কথা নিশ্চিত করেছে।
চীন- ৬৩,৯১৭ : চীনের ন্যাশনাল হেল্ফ কমিশন জানিয়েছে, দেশটিতে ৬৫ হাজার ৯১৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫২৩ জন মারা গেছেন।
ফিনল্যান্ড-১ : গত ২৯ জানুয়ারি একজন চীনা পর্যটক দেশটির হাসপাতালে ভর্তি হন এবং তার শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়। ৩২ বছর বয়সী এই নারী পর্যটক চীনের উহান থেকে এসেছেন।
ফ্রান্স-১১ : এ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম ইউরোপিয়ান দেশ হলো ফ্রান্স। ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে ১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
জার্মানি-১৬ : ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে ১৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
ভারত-৩: তিন ফেব্রুয়ারি দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায় যে ভারতে এ ভাইরাসে মোট তিনজন আক্রান্ত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, তারা তিনজনই ছাত্র, যারা উহান থেকে ফিরেছিলেন।
ইতালি-৩ : উহান থেকে সরিয়ে নেয়া ৫৬ জনের মধ্যে একজন এ ভাইরাসে আক্রান্ত বলে গত ৭ ফেব্রæয়ারি দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়। আর ৩০ জানুয়ারি দুজন চীনা পর্যটকের আক্রান্তের কথা জানানো হয়।
জাপান-২৫৮ : জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরের কাছে পৃথক করে রাখা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের যাত্রী ও ক্রু মিলিয়ে মোট ২১৮ জনের দেহে কভিড-১৯ রোগ ধরা পড়েছে বলে ১৩ ফেব্রুয়ারি জানানো হয়। বৃহস্পতিবার দেশটি করোনাভাইরাসে ৮০ বছর বয়সী এক নারীর প্রথম মৃত্যু হয়। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার যে ৪০ জনের আক্রান্তের খবর নিশ্চিত করা হয়।
মালয়েশিয়া-১৯ : ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে ১৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। আক্রান্তদের অধিকাংশই চীনা নাগরিক। তবে দুজন মালয়েশিয়ান নাগরিকও রয়েছেন।
নেপাল : দেশটিতে একজন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। গত ২৪ জানুয়ারি নেপাল বলেছিল, উহান থেকে আসা ৩২ বছরের এক ব্যক্তি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
ফিলিপাইন : চীনের বাইরে এ ভাইরাসে প্রথম মৃত্য হয় ফিলিপাইনে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
রাশিয়া-২ : রাশিয়ায় দুজন আক্রান্ত হয়েছেন। দুজনই চীনা নাগরিক। তারা সুস্থ হয়েছে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
সিঙ্গাপুর- ৬৭ : দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ১৫ ফেব্রæয়ারি ৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৭ জনে। ফলে চীনের পর সিঙ্গাপুরে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ হলো।
দক্ষিণ কোরিয়া-২৮ : গত ১১ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে নতুর আরও একজনের আক্রান্তের খবর জানানো হয়। এ নিয়ে দেশটিতে ২৮ জন আক্রান্ত হলো।
স্পেন-২ : স্পেন কর্তৃপক্ষ ৯ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ব্যক্তি আক্রান্তের তথ্য জানায়। এর আগে ৩১ জানুয়ারি দেশটিতে প্রথম কেউ আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়।
এ ছাড়া শ্রীলঙ্কায় ১ জন, সুইডেনে ১ জন, তাইওয়ানে ১৮ জন, থাইল্যান্ডে ৩৩ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৮ জন, যুক্তরাজ্যে ৯ জন, যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ জন, ভিয়েতনামে ১৬ জন এবং মিশরে ১ জন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।
১৪ ফেব্রুয়ারি মিশরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করে যে, দেশটি প্রথম কোনো ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তি একজন বিদেশি নাগরিক। ফলে আফ্রিকায় এ ভাইরাসে আক্রান্তের প্রথম খবর পাওয়া গেল।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। এরপর থেকে চীনে মহামারি আকার ধারণ করে এই ভাইরাস। ভাইরাসটি চীনের ৩১ প্রাদেশিক পর্যায়ের অঞ্চল ছাড়াও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়েছে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এবং প্রাণহানি বাড়তে থাকায় বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যাপক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয় অধিকাংশ দেশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।